জিহাদ ফি-সাবিলিল্লাহ বা ইসলামী আন্দোলন ফরজ ০১

লিখেছেন লিখেছেন তিতুমীর সাফকাত ০৭ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:৫৫:১৪ রাত

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

আমাদের সমাজে এমন অনেকে আছেন যিনি নিয়মিত নামাজ আদায় করেন, রোজা রাখেন কিন্তু কোন ইসলামী সংগোঠন পছন্দ করেন না। ওনাদের চিন্তাধারা নামাজ রোজা সব কিছুই করছি তাহলে ইসলামী আন্দোলন করতে হবে কেন? এমনও কিছু মানুষ আছে যাদের সামনে ইসলামী আন্দোলনের কোন বিষয়ে আলোচনা করাই যায়না বা ইসলামী আন্দোলনের কথা শুনলেই উত্তেজিত হয়ে যান কিন্তু ব্যাক্তি জীবনে নামাজ রোজা সঠিক ভাবে আদায় করার চেষ্টা করেন। অথচ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইসলামী আন্দোলন ফরজ করেছেন। ইসলামী আন্দোলন বলতে যা বুঝায় তা হলো আল্লাহর পথে জিহাদ। কুরআনের আলোকে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ পাঁচ স্তরে করা হয়েছে- দাওয়াত ইলাল্লাহ, শাহাদাত আলান্নাস, কিতাল ফিসাবিলিল্লাহ একামাতে দ্বীন, আমর বিল মারুফ ও নেহী আনিল মুনকার, এই সবগুলোর সমষ্টির নাম ইসলামী আন্দোলন। আল-কুরআনের আলোকে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ আওতাভুক্ত কাজগুলো ইসলামী শরীয়াতের দৃষ্টিতে ফরজ। সুতরাং সকল মুসলিমদের উপর পূনাঙ্গ ইসলামী আন্দোলন যে ফরজ এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।

ইসলামী আন্দোলন তখনি ফরজ হয় একজন মানুষ উসলাম গ্রহণ করে আর ইসলাম গ্রহণ করতে হলে সর্ব প্রথম ঈমান আনতে হয়। ঈমান শব্দটি আরবী শব্দ যা আলআমনু শব্দ মূল থেকে উৎকলিত, যার অর্থ বিশ্বাস। তাই ঈমান শব্দের অভিধানিক অর্থ হলো বিশ্বাস স্থাপন করা, আস্থা স্থাপন করা, কোন কিছুকে সত্য বলে মেনে নেয়া প্রভৃতি। আর ইসলামী জীবন দর্শনের পরিভাষায় রাসুল সা: আল্লাহর পক্ষ থেকে যে দ্বীন ও শরীয়ত নিয়ে এসেছেন তাতে বিশ্বাস স্থাপন করা ও আল্লাহকে ছাড়া অন্য কিছুকে ইলাহ স্বীকার না করা এবং মুহাম্মদ (সাঃ) কে রাসুল স্বীকার করা । অর্থাৎ কালিমা- “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” কে অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে ঘোষনা করা এবং কাজের মাধ্যমে সত্যতা প্রমান করা ।

ঈমান আনা ইসলামের প্রথম স্থম্ভ আর এ প্রসংঙ্গে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন-

হে নবী আপনি বলুন, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা কিছু অবতীর্ন হয়েছে আমাদের উপর, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাদের সন্তানবর্গের উপর আর যা কিছু পেয়েছেন মুসা ও ঈসা এবং অন্যান্য নবী রাসুলগণ তাঁদের পালন কর্তার পক্ষ থেকে। আমরা তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত । (সুরা আলে ইমরানঃ ৮৪)

আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, ফেরেশতাগন এবং ন্যায়নিষ্ঠ জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। (সুরা আলে ইমরানঃ ১৮)

ইলাহ শব্দের অর্থ হলো সকল বিষয়ে আদেশ নিষেধ করার ক্ষমতা ও অধিকার এবং যোগ্যতা যার আছে। আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্তা নেই।

এপ্রসংঙ্গে আল্লাহ বলেছেন-

তোমাদের ইলাহ এক ও একক ইলাহ। সেই রহমান ও রাহীম ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই। (সুরা আল বাকারাঃ ১৬৩)

তিনি আল্লাহ! তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব চিরস্থায়ী। (সুরা আল বাকারাঃ ২৫৫)

হে নবী বলে দাও তিনি আল্লাহ এক। আল্লাহ সবকিছু থেকে মুখাপেক্ষী হীন। সবকিছু তার মুখাপেক্ষী । না তাঁর কোন সন্তান আছে, আর না তিনি কারো সন্তান। তাঁর সমতুল্য কেউই নেই। (সুরা ইখলাস)

অতঃপর ঈমান আনো আল্লাহ প্রতি ও রাসুলের প্রতি। যদি তোমরা ঈমান আনো ও তাকওয়া অবলম্বন করো তবে তোমাদের জন্য বিরাট পুরস্কার রয়েছে। (সুরা আলে ইমরানঃ ১৭৯)

মুমিন মুলত: তারাই আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি যাদের দৃঢ় ঈমান রয়েছে। (সুরা আন নূরঃ ৬২)

হাদিসে উল্লেখ্য আছে-

হযরত আব্বাস রা: হতে বর্নিত, রাসূল করিম সা: এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তিপূর্ন আন্তরিকতার সাথে আল্লাহকে রব, ইসলাম কে দ্বীন এবং মুহাম্মদ সা: কে নবী হিসাবে কবুল করেছে, সেই ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ লাভ করেছে। (বুখারী-মুসলিম)

হযরত আবু যার রা: হতে বর্নিত রাসূল সা: বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর” ঘোষনা দেয় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম)

আল্লাহর পরিচয়ঃ

আল্লাহর ৯৯ টি গুনবাচক নাম আছে, সেগুলো হলো তাঁর ক্ষমতা, অধিকার, যোগ্যতা ও গুনাবলী প্রকাশ করে। এই নামগুলো সম্পূর্নই ঈমানের অংশ, কোন একটি নামও যদি কেউ অস্বীকার করে তবে সে আর ঈমানদার থাকে না। অর্থাৎ আল্লাহতায়ালাকে এক বলে জানা ও এক বলে স্বীকার করা, আল্লাহতায়ালা তাঁর অস্তিত্ব ও গুনাবলীতে এক ও একক। তার সত্বা সম্পূর্ণ অবিভাজ্য ও অখন্ডনীয়। তাঁর খোদায়ী গুনরাজি সম্পূর্ন পূত-পবিত্র এবং শুধুমাত্র জন্যে নির্দিষ্ট। তিনি এক ও অনন্য।

আল্লাহ তাঁর নিজের পরিচয় কোরআনে ঘোষনা করেছেন-

তিনিই আল্লাহ তা’আলা, তিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই। তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন। তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা। তিনিই আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনিই একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত মহাত্ব্যশীল । তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তা থেকে পবিত্র। তিনিই আল্লাহ তা’আলা স্রষ্ঠা, উদ্ভাবক, রুপদাতা উত্তম নাম সমূহ তাঁরই। নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষনা করে। তিনি পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। (সুরা হাসরঃ ২২-২৪)

প্রতিটি জিনিসের সৃষ্টিকর্তা কেবল মাত্র আল্লাহতায়ালাই। তিনি এক শক্তির আধার। (সুরা আল রায়াদ: ১৬)

তিনি, প্রাচ্যে ও প্রাশ্চাত্যেও রব। তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই তাই তাঁকেই সকল ব্যাপারে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে গ্রহন করো। (সুরা মুযযাম্মিল: ৯)

অতএব অতিশয় মহান ও শ্রেষ্ট আল্লাহ! তিনিই প্রকৃত বাদশাহ। তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। অতিশয় সম্মানিত আরশের মালিক তিনি। (সুরা মুমিনুন: ১১৬)

(লেখাটা আমার নয় কালেক্টেড । কোথা থেকে সংগ্রহ করে রেখেছিলাম ভুলে গেছি । )

বিষয়: বিবিধ

২৯১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File