“গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড মেইনটেইন করেও কি তারা দ্বীনের প্রতি অটল থাকতে পারে??”

লিখেছেন লিখেছেন তিতুমীর সাফকাত ২৪ অক্টোবর, ২০১৩, ০৬:১৩:৪০ সন্ধ্যা

প্রশ্নঃ

কিছু মুসলিমের ব্যাপারে আমি জানতে চাই যারা অনেক পাপ করে আবার একই সাথে তারা প্র্যাকটিসিংও! আমার অনেক বন্ধু আছে যারা ইসলামের ব্যাপারে অনেক জ্ঞান রাখে এবং ইসলাম প্র্যাকটিসও করে। কিন্তু তাদের বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড আছে যাদের সাথে তারা চ্যাট করে এমনকি দেখা সাক্ষাতও! জিনার মত পর্যায়ে না গেলেও তারা অনেক ঘনিষ্ঠ! যেমনঃ জড়িয়ে ধরা, চুমু খাওয়ার মত ঘনিষ্ঠতা তাদের রয়েছে! আমি তাদের কি বলব বুঝতে পারিনা, কেননা তারা নিজেরাই জানে এটা ভুল এবং এসব করার পর তারা দুঃখিতও হয়। এধরনের মানুষের ইবাদাত কি গ্রহণযোগ্য? তাদের স্বলাত কি গ্রহণযোগ্য এবং পুরস্কৃত হবে? তারা অজুহাত দেয় যে তারা ইমোশনালি খুব বেশি attached এবং তারা বলে বলে তারা তো এক সময় বিয়ে করবেই! আপনি তাদের কি উপদেশ দিবেন?

উত্তরঃ

সেসকল মানুষেরই আল্লাহর আদেশ নিষেধ মানার প্রতি অধিক আন্তরিক থাকা উচিত যাদেরকে আল্লাহ সুবাহানু ওয়া তায়ালা হেদায়াতের পথে রেখেছেন। ইসলামের ইলম আর আল্লাহর দ্বীনের পথে সেই ইলমের ব্যবহার কি ভিন্ন কোন সত্তা? তাই প্র্যাক্তিসিং মুসলিম হিসেবে আপনি আপনার যে বন্ধুদের কথা উল্লেখ করেছেন তারা আসলে আল্লাহর নিষেধকৃত কাজে শামিল হয়ে শয়তানের পদাঙ্কই অনুসরণ করেছে! দ্বীনের পথে চলার সুযোগ দিয়ে আল্লাহ যে রহমত দান করেছেন তাদের কি উচিত ছিল না তার জন্য কৃতজ্ঞ হওয়া? তাদের কি উচিত ছিল না দ্বীন পালন করে অন্যদেরকে দ্বীনের পথে আগ্রহী করার মত উদাহরণ সৃষ্টি করা?

আর তারা হারাম কাজ করছে নিজেদের মধ্যে এই "সচেতনতা" আর এর জন্য যে "দুঃখবোধ" তাদের রয়েছে মূলত এখানে এর কোন গুরুত্বই নেই! তারা কি মনে করেছে কেবল তাদের ইলমই তাদেরকে পাপ থেকে বিরত রাখবে? ইবলিশ কি জানতো না যে মহান আল্লাহর সিদ্ধান্তই সঠিক? ইহুদিরা কি জানতো না যে মুহাম্মাদ (সঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসুল? মগজভর্তি ইলম একজন মানুষকে সবকিছু থেকে মুক্তি দিতে পারেনা। এজন্য চাই সে ইলমের যথাযথ প্রয়োগ যা মূলত আল্লাহর আদেশ নিষেধগুলোকে আন্তরিক চিত্তে মেনে চলার মাধ্যমেই সম্ভব।

“তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না অতঃপর দেখে না যে; তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি কি হয়েছে? তারা তাদের চাইতে শক্তিশালী ছিল, তারা যমীন চাষ করত এবং তাদের চাইতে বেশী আবাদ করত। তাদের কাছে তাদের রসূলগণ সুস্পষ্ট নির্দেশনিয়ে এসেছিল। বস্তুতঃ আল্লাহ তাদের প্রতি জুলুমকারী ছিলেন না। কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিল।“ [সূরা রুমঃ ০৯]

“এছাড়া তারা অন্যায় ও অহংকার করে নিদর্শনাবলীকে প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্তর এগুলো সত্য বলে বিশ্বাস করেছিল। অতএব দেখুন, অনর্থকারীদের পরিণাম কেমন হয়েছিল”[সূরা নামলঃ ১৪]

দ্বীনেরব্যাপারেযে ইলমরাখে এবং উপদেশ দেয় তার দায়িত্বটা অনেক বড় এবং সে যখন নিজেই তার ইলমের বিরুদ্ধে যায় তখন সেটা খুবই ভয়ংকর এবং নিন্দনীয়!

“মুমিনগণ! তোমরা যা কর না, তা কেন বল?তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর কাছে খুবই অসন্তোষজনক।“ [সূরা সফঃ ২-৩]

তোমার এখন যে কাজটা করা উচিত তা হল তাদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেওয়া।

“উপদেশ ফলপ্রসূ হলে উপদেশ দান করুন,যে ভয় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে” [সূরা আলাঃ ৯-১০]

“অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এবৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী।“ [সূরা আরাফঃ ২০]

তাদেরকেমনে করিয়ে দাও যে নারী পুরুষ উভয়ের জন্য এধরনের ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত হওয়াটা দুঃখজনক। একজন মুসলিম যখন আল্লাহর দ্বীনের প্রতি নিজের commitment এর বাহ্যিক খোলস তৈরি করে মানুষের কাছে নিজের দ্বীনের পরিচয় বহন করে আবার আল্লাহর আদেশ নিষেধগুলোকে নিজের জীবনে স্থান দিতে পারেনা তখন তার ফলাফল খুবই ভয়াবহ!

সহিহ বুখারী এবং মুসলিমে বর্ণিত উসামা ইবন যাইদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসুল (সঃ) কে বলতে শুনেছি, এক ব্যক্তিকে জাহান্নামে নিজ নাড়ীভুঁড়ির চারদিকে ঘুরতে দেখা গেলো। যেভাবে গাভী তার খুঁটির চারপাশে ঘুরতে থাকে। অন্যান্য জাহান্নামীরা তখন তাকে জিজ্ঞেস করলো- আপনার কি হল? আপনি তো আমাদেরকে ভালো কাজের উপদেশ দিতেন এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলতেন। সে উত্তর দিলো- আমি তোমাদেরকে ভালো কাজ করতে বলে নিজে তা করতাম না। তেমনি তোমাদেরকে খারাপ কাজ ছাড়তে বললেও নিজে তা ছাড়তাম না!"

এছাড়াও বর্ণিত আছেযে রাসুল (সঃ) বলেছেন, "মানুষকে ভালো কাজের উপদেশ দেওয়া আর নিজের বেলায় তা ভুলে যাওয়া আলেমের উদাহরণ হল সেই প্রদীপের মত যা নিজে পুড়ে গিয়ে অন্যকে আলোকিত করে।" [আলি খাতিব তার ইকতিদা আল ইলমে এটা উল্লেখ করেন এবং শায়খ আলবানি এটাকে সহিহ বলেছেন]

আব্দুল্লাহইবন আল মুবারাক (আল্লাহ তার উপর রহমকরুন) বলেন, “আমি দেখেছি পাপ অন্তরকে নির্জীব করে ফেলে এবং পাপের ধারাবাহিকতাশেষপর্যন্ত মানুষকে অপদস্ত করে"।

ধর্মযাজক, আলেম আর শাসকের চেয়ে দ্বীনকে কেউ বেশি কলুষিত করতে পারেনা। ন্যায্য মূল্য ফেলে যারা কোন বিনিময় মূল্য ছাড়াই অন্তরগুলোকেবিক্রি করেছে। তাদের উদাহরণ সেই মানুষের মত যে মৃত লাশের মুখে খাবার তুলে দেয় আরবুদ্ধিমান মাত্রই জানে এধরনের মানুষগুলোই থাকে পরাজিতদের কাতারে!

আর বয়ফ্রেন্ড/ গার্লফ্রেন্ডের প্রতি আবেগতাড়িতহয়ে এমন কাজ করছে, এধরনের উদাহরণ যেসব জ্ঞানীগুণী প্র্যাক্টিসিং মুসলিমদের মধ্যথেকে আসে, তারা মূলত কামনা বাসনা আর খেয়াল খুশিরই অনুসরণ করে যা তাদেরকে শেষপরিণতির দিকেই ধাবিত করে।

“আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল-খুশীকে স্বীয় উপাস্য স্থির করেছে? আল্লাহ জেনে শুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান ও অন্তরে মহর এঁটে দিয়েছেন এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। অতএব, আল্লাহর পর কে তাকে পথ প্রদর্শন করবে? তোমরা কি চিন্তাভাবনা কর না?”[সূরা জাসিয়াঃ ২৩]

কাতাদা (আল্লাহ তার উপর রহম করুন) বলেন, “সেকোন কিছুর প্রতি আকর্ষণ বোধ না করলেও এটা তাকে নিয়ন্ত্রণ করবে কারন সে আল্লাহকে ভয়করেনা। [তাফসীর আল তারাবীঃ ২২/৭৬]

আর আল্লাহ মুমিনা সতী নারীদের ব্যাপারে বলেছেনতারা তাদের “বয়ফ্রেন্ড” পরিত্যাগ করবে।

“আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন মুসলমান নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, সে তোমাদের অধিকারভুক্ত মুসলিম ক্রীতদাসীদেরকে বিয়ে করবে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। তোমরাপরস্পর এক, অতএব, তাদেরকে তাদের মালিকের অনুমতিক্রমে বিয়ে কর এবং নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর এমতাবস্থায় যে, তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে-ব্যভিচারিণী কিংবা উপ-পতি গ্রহণকারিণী হবে না। অতঃপর যখন তারা বিবাহবন্ধনে এসে যায়, তখন যদি কোন অশ্লীল কাজ করে, তবে তাদেরকে স্বাধীন নারীদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ ব্যবস্থা তাদের জন্যে, তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে ভয় করে। আর যদি সবর কর, তবে তা তোমাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।“ [সূরা নিসাঃ ২৫]

এই আয়াতে “মুসাফেহাত” বলতে বোঝানো হয়েছে ঐ সবব্যাভিচারিনীদের যাদের সাথে কেউ যেনা করার ইচ্ছে করলে তাকে সে তার সাথে যেনা করাথেকে বিরত রাখেনা। ইবন আব্বাস (রাঃ) সহ অন্যান্য সালাফগন “গোপনে ভিন্ন পুরুষেরসাথে মিলামেশা করে এমন মহিলার কথা বলেছেন” যার আধুনিক ডিজিটাল ভার্সন বয়ফ্রেন্ডনিয়ে ঘোরা!!

একইসাথে আল্লাহ সৎ মুমিনদের কথা বর্ণনা করেছেনযারা আল্লাহ্‌র অনুমোদিত এবং কল্যাণের বিষয়টাই গ্রহণ করে।

“আজ তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ হালাল করা হল। আহলে কিতাবদের খাদ্য তোমাদের জন্যে হালাল এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য হালাল। তোমাদেরজন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর তাদেরকে স্ত্রী করার জন্যে, কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে কিংবা গুপ্তপ্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্যে নয়। যে ব্যক্তি বিশ্বাসের বিষয় অবিশ্বাস করে, তার শ্রম বিফলে যাবে এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।“[সূরা মাইদাঃ ৫]

ইবন কাসির (আল্লাহ্‌র তার উপর রহম করুন) বলেন,নারীদের ক্ষেত্রে যেমন জিনা থেকে বিরত থাকার শর্ত আরোপ করা হয়েছে তেমনি একই শর্তপুরুষের বেলাতেও আরোপিত হয়েছে।“ব্যাভিচারের জন্য নয়” বলে ওসব ব্যাভিচারিদের বোঝানো হয়েছে যারা অপরাধ করতে কেঁপেউঠেনা, তাদের কাছে যে কেউ অন্যায়ে লিপ্ত হতে আসুক তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়না। আর তারাএমন প্রেমিক যারা শুধু তাদের প্রেমিকাদের সাথেই অবৈধ যৌনকর্মে লিপ্ত হয়ে থাকে। যাসূরা নিসায় নারীদের বলা হয়েছিল তাদের বয়ফ্রেন্ডের ব্যাপারে আর এখানে সূরা মাইদায় পুরুষদের বলা হয়েছে তাদের গার্লফ্রেন্ডেরব্যাপারে!

পরিশিষ্টঃ এই প্রশ্নটা এক বোন করেছিলেন একটা ওয়েবসাইটে। এটা মূলত অনুবাদ নয় আমি মূল কথাগুলো নিজের ভাষায় বলার চেষ্টা করেছি।আল্লাহ আমার সীমাবদ্ধতাকে ক্ষমা করুন। এই কাজটা গুরুত্ব নিয়ে করার কারণ দ্বীনেআসার পর অসংখ্যবার আমি এই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি আমার জাহেল বন্ধুদের কাছ থেকে।কেন ঐ হিজাবির বয়ফ্রেন্ড আছে? কেন অমুক হুজুর গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে? তারাও তোইসলাম পালন করে!! ইসলামে এত কঠোরতা নেই!! ব্লা ব্লা ব্লা! আমাদের আধুনিক সমাজেরদৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে খুবই ছোট একটা কাজ, “অমুকের গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড আছে”।কিন্তু এই ছোট মনে হওয়া কাজটির জন্য ইসলামের কি কঠিন কঠিন বিধান! তাই না??

একজন মুসলিমের জন্য সবচেয়ে বাজে ব্যাপারটা হলনিজের পাপকে ছোট মনে করা কিংবা অগ্রাহ্য করা! হারাম সম্পর্কে জড়িয়ে “আমি তো ইসলামপ্র্যাকটিস করি” সান্ত্বনায় নিজের পাপকে ছোট ভাবা মানুষগুলো জানেনা শয়তান তাদেরজন্য হাজারটা হারামের পথ খুলে রেখেছে এই একটা পাপকে পুঁজি করে এবং তারা অলরেডিসেসব হারামের পথে পা বাড়িয়েছে। মানুষের ইলম যদি হয় গাধার পিঠে বস্তা বোঝাই বইয়েরমত তাহলে তার কি কোন মূল্য আছে? সেই ইলমের গুরুত্ব আল্লাহ্‌র কাছে আছে যা কাজেরসমানুপাতিক! আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য যে অন্তর উন্মুখ সে অন্তর কখনো হারামেলিপ্ত হতে পারেনা আর লিপ্ত হলেও তাতে অবিচল থাকতে পারেনা। আল্লাহ্‌র ভয়ে বিগলিতঅন্তর কোন পাপকে নিজের ভেতর পুষতে পারেনা। অজুহাত দেখাতে পারেনা স্বীয় পাপের জন্য।এটা অন্তর শক্ত হয়ে যাওয়ার একটা লক্ষণ। এটা একটা sign যেআপনি আল্লাহ্‌র দ্বীন থেকে ছিটকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। শয়তানের হাতে নিজের প্রবৃত্তিকেসঁপে দেওয়ার নাম ইসলাম নয়। বাহ্যিক কিছু আচার অনুষ্ঠান পালন করে দ্বীন পালনেরমিথ্যে কিছু সান্ত্বনা হয়ত আছে কিন্তু যতক্ষণ আপনার প্রবৃত্তি শয়তানের জিম্মায়থাকবে ততক্ষন সবকিছুই শূন্য! স্রেফ শূন্য! আল্লাহ আমাদের অন্তরগুলোকে হেফাজত করুন।আমীন।

- এক মুসলিম ভাইয়ের পক্ষ থেকে সংগৃহীত

বিষয়: বিবিধ

১৮০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File