আধুনিক নামধারী কিছু অপদার্থের যুক্তি যেগুলো অনেক আগেই খন্ডানো হয়েছে , রাসুল (সঃ) এর আগমনের আগে
লিখেছেন লিখেছেন তিতুমীর সাফকাত ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৪:৩৯:৩৩ বিকাল
অনেক দিন পর আমার এক কাজিনের বাসায় দাওয়াত খেতে গেলাম। গিয়ে তো পুরোই অবাক। প্রচলিত ভাষায় বলতে গেলে উনি "হুজুর" হয়ে গেছেন। এবং শুধু উনি একাই নন, ওনার স্ত্রী সহ ছেলে মেয়ে এমন কি ঘরের পরিচারিকারাও দেখলাম মাথায় কাপড় দিয়েছেন।
অত্যন্ত খুশি হলাম, কারণ এত দিন আমার পরিবারে আমি একাই "হুজুর" ছিলাম। যাক এখন একজন সঙ্গী মিলল। তবে খুশি বেশিক্ষণ টিকলোনা। আমাদের অন্যান্য আত্মীয়স্বজনদের বিদঘুটে সব কমেন্ট শুনতে শুনতে মনটা এমন খারাপ হলো বলার মত না।
কথাটা শুরু হয়েছিল এভাবে, উনি বলছিলেন, ঘরে ইসলাম অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশে উনি সর্বপ্রথম যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা হল, টিভি বন্ধ করে দেয়া।
উনি খেয়াল করেছেন একঘণ্টা ইসলামিক লেকচারের প্রভাব গায়েব হয়ে যেত যখন কেউ তার পরপরই টিভি দেখতে বসে যায়। আমরা যদিও টিভি নিছক বিনোদনের জন্যই দেখি, কিন্তু টিভির প্রচারিত অনুষ্ঠান, বিজ্ঞাপন দ্বারা কিন্তু আমাদের মনোজগৎ, দৈনন্দিন কার্যক্রম অনেক প্রভাবিত হয়। যা হয়ত আমরা বুঝতে পারিনা। অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত কথা এবং আমি ব্যাপারটা আপ্রিসিয়েট করলাম।
কিন্তু দেখলাম আমি ব্যাতিত অন্য সবাই ব্যাপারটা অত্যন্ত নেগেটিভ ভাবে নিলো।
কেউ বলল উনি নাকি প্রস্তর যুগে চলে যাচ্ছেন, কেউ আবার পুর ব্যাপারটায় জঙ্গি ষড়যন্ত্রর গন্ধ পেল। কেউ বলল ইসলাম বর্তমান যুগে চলবেনা, এই ধরনের গৎবাঁধা কথাবার্তা।
আমি কিছু কিছু উত্তর দিলাম। তবে কোন একজনের একটা কথা আমাকে অত্যন্ত চিন্তিত করে তুলল। যদিও সে নিজে নামধারী মুসলিম এবং সে নাকি ঈদের নামাযও পড়ে , কিন্তু সে মুখ বাঁকা করে ব্যাঙ্গাত্মক সুরে বলল --
"এই মুসলিমরা নিজেদের বেশি পবিত্র মনে করে, তাঁরা নিজেদের পিউর রাখতে চায়, টিভি দেখা যাবেনা, ব্যাংকে যাওয়া যাবেনা, পরপুরুষের সামনে যাওয়া যাবেনা আরও কত কি।"
এই কারণে বললাম যে তাঁর এই কথাটা আমার মনোজগতে আঘাত করেছে, কারণ তাঁর এই কথাটা শুনবার সাথে সাথেই আমার কুরআনের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল।
হাজার বছর আগে এক নবীকে কাফেররা বিদ্রূপ করে এমন কিছুই কথা বলেছিল।
হযরত লুতকে পাঠানো হয়েছিল বর্তমান ফিলিস্তিনের সডম নামক এক অঞ্চলে। সেখানের লোকেরা সমকামিতা সহ নানা রকম বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। হযরত লুত যখন তাদের ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতেন, তাদের আহবান করতেন পাপ পঙ্কিলতা পরিত্যাগ করে পবিত্রতার দিকে, তারা হযরত লুত ও তাঁর সাথিদের বিদ্রূপ করে বলত 'দেখ এই লোকেরা নাকি নিজেদের পবিত্র রাখতে চায়'।
লক্ষ করে দেখুন, তাদের কাছে পাপ, অনাচার, অশ্লীলতা এতই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল যে কেউ পবিত্র হতে চাইছে এটাই হাস্যকর তাদের কাছে একটা ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছিল। পবিত্র থাকার ইচ্ছা হয়ে পড়েছিল একটা ভীষণ অপরাধ ।
আজ একই ঘটনা ঘটছে আমাদের সমাজে। কেউ নিজেকে আল্লাহর জন্য পবিত্র করতে চাইলেই সে সমাজের ঠাট্টা বিদ্রূপের স্বীকার হচ্ছে। ইসলামের কথা বলা এখন ধীরে ধীরে অপরাধে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। এবং আমাদের জাতীর মন মানসিকতায় ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হাসি ঠাট্টা করা মামুলি ব্যাপার হয়ে যাচ্ছে। যেমন জিহাদি বই সহ ধরা পড়া এখন একটা খুবি স্বাভাবিক ব্যাপার।
আমাদের বুঝতে হবে একটা সমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে একদিনে চলে যায়না। হটাৎ করেই সে চরম জাহেল সমাজে পরিণত হয়না। যে এখন বড় ডাকাত সে হয়ত শুরু করেছিল হাট বাজার ছিচকে চুরি করে।
বর্তমানে যে ধারায় ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে, মুসলিমদের কথা কার্যক্রম নিয়ে হাসি ঠাট্টা হচ্ছে, তা যদি চলতে অব্যহত থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতেই আমাদের পেপারে পড়তে হবে "গতরাতে অমুক জেলায একদল মুসলিম রাতের অন্ধকারে চুপি চুপি নামায পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে অভিযান চালায়। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে মুসলিমরা পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাবার আগে তারা কয়েক রাউন্ড আল্লাহু আকবর বলেছে, যার দরুন বেশ কয়েকজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মানসিক আঘাত পেয়েছেন। তারা বর্তমানে মানসিক চিকিৎসাধীন রয়েছেন।"
আবু মুয়ায ভাই এর লেখা থেকে কপি করা ।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন