সাবধানে থাকুন এবং বেঁচে থাকুন
লিখেছেন লিখেছেন এ বি এম মুহিউদ্দীন ১৫ আগস্ট, ২০১৪, ০৯:৩৪:৫৭ রাত
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর আমাদের দেশের ইসলামিক পার্টিগুলোর সভা-সমাবেশে তৃণমূল নেতাদের অহরহ বলতে শুনেছি যে, পরিকল্পিতভাবে সরকার এবং ইসলাম বিরোধী শক্তি ইসলামী আন্দোলনের নেতাদেরকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে। অনেককে আরো পোক্তবাক্য প্রয়োগ করতে শুনেছি যে, ইসলামী আন্দোলনকে নেতৃত্বশূণ্য করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবন বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যারা এসব বক্তব্য প্রদান করছেন তারা এ বিষয়টি কতটুকুন বিশ্বাস করছেন এবং বিশ্বাস করলে তা থেকে পরিত্রাণের কি কোন উপায় খুঁজছেন? নাকি মাঠ গরম করতে হবে বলে অমনভাবে বলে যাচ্ছেন। আমাদের দেশের ইসলামিক পার্টিগুলোর নেতাদের অবশ্য অতিরঞ্জিত ও যসস্বী বক্তব্য দিয়ে গা গরম করার একটা কমন বাতিক রয়েছে।
যে কোন আন্দোলন দমানো এবং এর মূলোৎপাটন করতে হলে নেতৃত্বকে গুড়িয়ে দাও, তাহলে তা সহজে নেতিয়ে পড়বে -এই সাধারণ তত্ত্বটি প্রাচীন কাল থেকেই অহরহ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি সবাই খুব ভালোভাবে জানে এবং বিশ্বাস করে। তবুও প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের উদ্যোক্তাদেরকে এই চালের শিকার হতে হয়েছে। তা যে কোন ঘরানার ইতিহাস ঘাটলেই বেরিয়ে আসবে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাঃ এর বেলায়ও এ তত্ত্ব প্রয়োগ করা হয়েছে। দারুন নদওয়া এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষের দিকেও এ তত্ত্ব প্রয়োগ করে স্বাধীনতা সংগ্রামকে ঠেকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, যে জন্য আমাদের কপালে জুটেছে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। কিন্ত সে সংগ্রামে আমরা বিজয়ী হলেও জাতী হিসেবে আমাদের যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা কোন কালেই পূরণ হবার নয়! সে সময় এই উপলব্ধি থাকলে ভাল হতো না যে, আমাদেরকে সাবধানে থাকতে হবে?
বাম-ডান যে কোন আন্দোলনের জন্য ইন্টেলিজেন্ট ফোর্স একটি বিরাট সম্পদ। কোন কোন ক্ষেত্রে এক হাজার কর্মীর চাইতে একজন ইন্টেলিজেন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। (এ বলে আমি কর্মীর অবমূল্যায়ন করছি না।) যাকে ঘিরে সংগ্রাম পুণরোত্থিত ও পুনরোজ্জীবীত হতে পারে। সময়ের আগে এ ব্যাপারটি বিশেষভাবে অনুধাবন করা যায় না।
ইসলামিক পার্টিগুলোর উচিত তাদের ইন্টেলিজেন্টদের রক্ষা করা, বাঁচিয়ে রাখা। এ বিষয়টি যদি বুঝতে পারা যায় এবং বিশ্বাস করা হয় যে, নেতাদের হত্যা করার বা নিঃশেষ করে দেয়ার পরিকল্পনা বিশেষ মহলের রয়েছে, তাহলে এ মুহূর্তে তাদেরকে রক্ষার জন্য যে কৌশল অবলম্বন করা প্রয়োজন, তা গ্রহণ করা উচিত।
যারা ইন্টেলিজেন্ট রয়েছেন, তাদেরকেও নিজেদের প্রয়োজন বুঝতে হবে। খামখেয়ালী করে নিজের যবনিকাপাত ঘটানো যাবে না এবং আন্দোলনেরও ক্ষতি করা যাবে না। বাস্তবতা বুঝে তবেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে পা ফেলতে হবে।
দেশের সব কিছুই এখন সাইবার মেকানিজমের আওতায় আনা হয়েছে। এ সুবিধা যতটা না জনগণের কল্যাণ চিন্তায় বিস্তৃত করা হয়েছে, তারচেয়ে বেশী বিস্তৃত করা হয়েছে জনগণকে পাকড়াও করার চিন্তায়, নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। প্রতিনিয়ত আমরা সে ফাঁদেই পা দিয়ে চলেছি। বিশ্বাস করুন! আমাদের দেশের একটি মোবাইলও নেই যাতে কান পাতা হয় না!
বিষয়: বিবিধ
১২৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন