আজকের সমাবেশে আগত প্রতিবাদীদের ব্যাপারে এক বেয়াদবের দম্ভোক্তি ও এর প্রতিবাদ
লিখেছেন লিখেছেন এ বি এম মুহিউদ্দীন ০৬ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:২৫:৪৪ রাত
ফেসবুকে একটু আগে এক বেয়াদব লিখলো- হেফাজতে ইসলামের ডাকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত প্রতিবাদী জনতাকে নাকি ভাতের লোভ দেখিয়ে ঢাকায় ডেকে আনা হয়েছে। সে আরো মন্তব্য করেছে- আজ যারা ঢাকায় জমায়েত হয়েছে, তারা নাকি গ্রামের সে সব দরিদ্র মানুষ যারা তিন বেলা ঠিকমত খেতে পায় না। যারা জানে না ব্লগ কি জিনিস এবং ব্লগ দিয়ে আসলে কি করা হয়। কিন্তু তারা ঢাকায় এসে ব্লগারদের ফাঁসির দাবিতে লম্ফ-ঝম্ফ করছে।
এই বেয়াদব জানে না যে, আজকে যারা ঢাকায় এসেছে তারা তাদের পিঠে ঝুলানো ব্যাগে করে অগ্রিম খাবার-দাবার নিয়েই তবে ঢাকায় হাজির হয়েছে। ওদের মত চাঁদাবাজির পয়সায় কেনা খাবারে উদর পূর্তি করে এভাবে দূরপথ পাড়ি দেয়া এবং বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে প্রতিবাদ জানাতে আসা সম্ভব নয়।
আজকের সমাবেশে সদূর নর্সিংদি থেকে পায়ে হেঁটে ঢাকায় আসা কয়েকজন প্রতিবাদীর পাশে বসার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। কৌতুহলবশত: আমি তাদের সাথে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। আমরা ঢাকা থেকে সমাবেশে যোগ দিয়েছি। কিন্তু দুপুরের পর তারাই তাদের ব্যাগ থেকে সঙ্গে বয়ে আনা খাবার-দাবার আমাদের সাথে শেয়ার করতে চাইলেন। আমরা তখন তাদের এমন বিনয়ের জন্য আবেগপ্রবণ না হয়ে পারি নি। পরে নৈতিকদায়বোধ থেকে তাদেরকে জায়গা ছেড়ে দিয়ে আরামে বসতে দিয়েছি।
গ্রাম থেকে ছুটে আসা এসব মানুষকে এক পলক দেখে যে কেউ এক নিমিশে বলে দিতে পারবে, এরা কোন জাতের মানুষ। গায়ের পোড়া রং, মুখের পরিশ্রমী গড়ন আর মাংসপেশীর ভাঁজ দেখে একটুও চিনতে কষ্ট হয় না যে, এরাই ক্ষেতে ধান বুনে শহরের মানুষের ভাতের যোগান দেয়।
কি অসভ্যই না আমরা এসব তথাকথিত শহুরেরা, যারা কি না জ্ঞান আর আধুনিকতার বড়াই করি। অথচ নাস্তিদের আস্ফালনের মোকাবেলায় এত জ্ঞানী হয়েও নিজেরা ইতিপূর্বে পারি নি আজকের মত একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করতে। অথচ সুদুর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পায়ে হেঁটে ঢাকায় আসা এসব অভাবী মানুষ আমাদেরকে শিখিয়ে গেছে- মানুষের স্বভাব কেমন হওয়া উচিত।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন