সন্তানদের জন্য কেমন সমাজ যে রেখে যাচ্ছি তা ভেবে ভয় হয়

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী ১৮ আগস্ট, ২০১৪, ০৬:৪৬:৫৯ সন্ধ্যা



​​মাঝে মাঝে খুব ভয় আর আফসোস লাগে আমাদের সন্তানদের জন্য কেমন একটা সমাজ যে রেখে যাচ্ছি তা ভেবে। নিজেদের তারুণ্য আর যৌবনটাই অশ্লীলতা-নোংরামি-নির্লজ্জতা-পাপাচারের স্রোতের বিপরীতে হাঁচড়ে-পাচড়ে বেঁচে থাকার চেষ্টাতে কেটেছে তাই জানি এখনকার মুসলিম কিশোর-কিশোরীদের জীবনটা কতই না কঠিন। এখনকার সকল মুসলিম সন্তানদের অভিভাবকদের আর দোষ দিতে আগ্রহ পাইনা বিয়েতে বড় প্রতিবন্ধকতা বাবা-মা হয়ে তৈরি করার জন্যই কেননা তাদের ধারণাতেও সম্ভবত নেই যে এই সন্তানগুলো কতটা যুদ্ধ করে নিজেদের নফসকে নিয়ন্ত্রণের পিছনে। চারপাশে বন্যার পানির মতন নির্লজ্জতা আর পাপাচারের উপকরণ, নিজেকে আশ্বাস দেয়ার যেই 'বিয়ে' ব্যাপারটা, সেটাও অর্থনৈতিক-সামাজিক-পারিবারিক কারণের বেড়াজালে দূর-বহুদূর...

ছোট ভাইদের মুখে আলাপ শুনি ভার্সিটির ক্যাম্পাসে নোংরামির সয়লাব এখন। আমি নিজেও জানি, ভার্সিটির ছুটিতে বাসায় তখন বাসে করে ছেলেরা একসাথে ফিরতাম। কিছুকাল পরে জুনিয়ররা ছেলে-মেয়ে একসাথে বাড়ি ফিরতো, আবেগ রুধতে না পেরে বন্ধু-বান্ধবী পাশাপাশি সিটে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা পার করে। লেখালেখি শুরু করেছিলাম কয়েকবছর আগে, তখন 'কয়টা গার্লফ্রেন্ড তোর' টাইপের প্রশ্ন নিয়ে অবাক হওয়া অনুভূতি লিখেছিলাম একটা লেখাতে। এখন তো ফোনের আলাপ, দেখাদেখিতে সীমাবদ্ধ থাকে না। ঢাবিতে প্রায়ই যেতাম গত অনেকগুলো মাসে, রিকসায় আর বিভিন্ন চিপাচাপায় যেসব দৃশ্য দেখতাম, তাতে বেওয়ারিশ পশুর মতন মনে হয়েছে সেইসব শরীরসর্বস্ব ছেলেমেয়েদের। এদের প্রতিটি নোংরামি আর পাপের নোংরা উত্তপ্ত হাওয়ার হলকা ছড়িয়ে যায় আরো অনেক পথচারী, বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে। একটা রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম কয়েক সপ্তাহ আগে, সকাবেলাতে পাশাপাশি দুই তরুণ-তরুণীর বসে থাকার ভঙ্গি দেখে লজ্জা আমিই পেলাম। নির্লজ্জতা কেমন ওদের আত্মবিশ্বাসী রাখে?

টেলিভিশনে যেসব কার্টুন দেখায়, তাতে মেয়েগুলোর পোশাক তো সবই ভয়াবহ শিক্ষা দেয় শিশুদের। এমন সব রোমান্স তাতে, যেগুলো আমাদের জীবনকালে কল্পনাও করিনি দেখতে। এক-দেড়যুগের মধ্যেই বাঙ্গালি মুসলিম সমাজ কতটাই না বদলে গেলো! অন্যান্য হিন্দি চ্যানেল আর তার গানগুলো দেখে যেসব মানুষ খুব মিষ্টি মিষ্টি ভালো কথা বলে, তাদের অন্তরের অবস্থাটা চিন্তা করে নিজেই লজ্জা পাই। পরিপূর্ণ নির্বোধ আর প্রকৃষ্ট মিথ্যাবাদী ছাড়া কেউ কি এইসব দেখে নিজের আত্মিক অবস্থা নিয়ে নির্বিকার থাকতে পারে?

নিজেদেরকে খুব উন্নত করা দরকার। নিজেদের ব্যক্তিগত চরিত্র, একান্ত গোপনে নিজের চরিত্র, নামাজ আদায়, মানুষের সাথে দেনা-পাওনা, শেষরাতে জেগে উঠে তাহাজ্জুদ আদায় করে নিজেদেরকে তৈরি করা দরকার। দ্বীনী ইলম অর্জন ও তার আমল করার মাধ্যমে নিজেদেরকেই বাঁচানো দরকার। সমাজের আচার-আচরণগুলো যেন শয়তানির পাগলা ঘোড়ার কাঁধে সওয়ার হয়ে চলেছে, বিপরীতে কিছু করে যেতে না পারলে পরের প্রজন্ম আমাদেরকে আল্লাহর কাছে ভয়াবহ জবাবদিহিতার মুখোমুখি রেখে যেতে পারে। আল্লাহ আমাদেরকে সুন্দর একটি সমাজ গঠনের এবং তাকওয়াবান মানুষ হয়ে তৈরি হয়ে ঈমানী মৃত্যু অর্জনের তাওফিক দান করুন।

বিষয়: বিবিধ

১১৬৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

255612
১৮ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০২
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ভয়ের আর কি, জন্মে কি দেখেছিলাম – এখন কি দেখছি! ওদেরও হয়তো এমন অভিজ্ঞতা হলেও হতে পারে ..
255614
১৮ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৪
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : অবস্থা আসলেই ভয়াবহ। সমাজটা ভালো করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। ফল তো আল্লাহর হাতে।
255615
১৮ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৬
মাহফুজ আহমেদ লিখেছেন : সত্যি ভাই এ কোন পৃথিবীতে আমার সন্তানকে রেখে যাব।আল্লাহ সহায়।
255681
১৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:৫১
আবু জান্নাত লিখেছেন : এসব বিষয় মনে পড়লে নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়, মাঝে মাঝে মনে হয় বিয়ে না করাই ভাল ছিল,কেননা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ কি হবে ? নোংরামী নাকি দ্বীনি ? সমাজের দিকে তাকালে নোংরামীর ভয়ে বিয়ে করতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার বিধান ও রাসূল স. এর সুন্নাতের উপর আমল করতে বিবাহ করলাম, সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য আল্লাহর রহমতের দিকে চেয়ে থাকলাম। আল্লাহ যেন তাদের মাঝে দ্বীনের সু-বাতাস বইয়ে দেন।
255683
১৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:৫৮
আহ জীবন লিখেছেন : কষ্ট করে কিভাবে ভালো থাকা যায় শিখিয়ে যান।

সোনা যেভাবে পুড়িয়ে খাটি করা হয়।
255760
১৯ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:২০
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : সমাজ নষ্টের মূল কারণ বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা! শিক্ষা ব্যবস্থায় যৌনতা শেখানো হচ্ছে!! আগামী প্রজন্মকি পঙ্গু করার সকল পন্দি এঁটেছে আমাদের সরকার।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File