মুখের দাড়ি যখন ফান

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী ১৪ আগস্ট, ২০১৪, ০৬:৪১:১৪ সন্ধ্যা

দাড়ি নিয়ে ফান করাটা বেশ অতিমাত্রায় চলছে ইদানিং। 'মিডিয়াওয়াশড' মুসলিম মনগুলো খুবই করুণাদায়ক। মাঝে মাঝে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক অসারতা, আত্মপরিচয়হীনতা দেখে হতভম্ব হয়ে করুণা অনুভব করি। কিন্তু করুণা করতে গিয়েও যন্ত্রণায় পড়ি। মানসিক দারিদ্রতায় আক্রান্ত এই ছেলেমেয়েগুলো আবার ইসলামের শত্রুতা করে অবলীলায়। তাই, এদের অজ্ঞতা আর শয়তানি কাজগুলোকে নিস্পাপ চোখে দেখা সম্ভব হয় না।

শাহবাগীরা রাজাকারদের ফাঁসি চাওয়ার নাম করে কার্টুন এঁকে খুব একচোট দাড়িওয়ালাদের দেখে নেয়ার চেষ্টা করেছে। শাহবাগীদের 'মাস্টারমাইন্ড' যারা, তারা এইটা বুঝে-শুনে-ভেবে তবেই 'প্রোপাগান্ডা' এবং তার 'টুল' ডিজাইন করেছে। রাজাকার কিংবা হেফাজত-- ইস্যু ফুরালে নতুন জন্ম দিয়ে হলেও তাদের মূল লক্ষ্য যেকোন মূল্যে ইসলামকে হেয় প্রতিপন্ন করা। কিন্তু ম্যাঙ্গোপিপল শাহবাগী ইতরসম্প্রদায় সেটিকে প্রচার, প্রসার ও বিস্তার করেছে যারা সবাই হয়ত প্রথমভাগের মতন শয়তান নয়। অবশ্য দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মানুষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে কটাক্ষকারী নাস্তিক ইসলামবিদ্বেষী নরপশু থাবাবাবাকে সমর্থন করাটা ঈমানদারদের পক্ষে দূরে থাক, বিবেক ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ কখনও পারার কথা নয়। তবে এইসব মুসলিম নামধারী শাহবাগী বুদ্ধিহীন [নোট: জ্ঞান ও বুদ্ধি কখনই এক নয়] শরীরবৃত্তিক প্রজন্ম তাদের পরিচয় জানে না। কেবলমাত্র জুমু'আর নামাজে উপস্থিত হলে কিংবা হজ্ব করে আসা বাবার সন্তান হয়ে "ইসলাম আমরা কম বুঝিনা" মুডে থেকে তারা দাড়ি, বোরকা, নিকাব নিয়ে মজা-মশকরা করে, শারীয়াহ আইন নিয়ে মজা করে। মজায় মজায় ঘরবোঝাই...

দাড়ি কোন মজার বিষয় না। দাড়ি একটি সুন্নাহ। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মানুষটির দাড়ি ছিলো। বাবা-মা-পরিবার এমনকি নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসা যার প্রতি না থাকলে মুসলিমদের ঈমান থাকে না, সেই মানুষটির দাড়ি ছিলো। সেই ভালোবাসাতেই তাকে অনুসরণ করার কথা মুসলিম পুরুষদের। দাড়ি ছিলো চার খলিফার, সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহুমের, তাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাবিঈদের। দাড়ি ছিলো পূর্ববর্তী নবী-রাসূলদের। এখনো যারা ইসলামের আলেম, তাদের দাড়ি আছে। এই সুন্নাহটি একজন ইসলামপ্রিয় ও সুন্নাহপালনকারীর সাথে সারাবিশ্বের শাহবাগীদের আলাদা করে দেয়। দাড়ি রাখাটাই পুরুষের ফিতরাতের সাথে সম্পর্কিত, পুরুষমাত্রই দাড়ি থাকে, নারীদের থাকে না। হয়ত একটা সময়ের মুসলিমরা ভাবতেই পারতেন না দাড়ি আবার কেমন করে কাটা সম্ভব! এখনকার সেক্যুলার মুসলিমরা দাড়িকে 'আনস্মার্ট' মনে করাতে চেষ্টা করে। আমাদের জেনে রাখা উচিত পৃথিবীর সবচেয়ে স্মার্ট মানুষটির দাড়ি ছিলো। আল্লাহ কর্তৃক যিনি আমাদের অনুকরণীয় আদর্শ, তাকে ফলো করার মাঝেই প্রকৃত স্মার্টনেস, সৌন্দর্য নিহিত।

পথচলায় আরেকজন দাড়িওয়ালা মুসলিমকে পেলে মুসলিমরা ভ্রাতৃত্ব অনুভব করে, সালাম দেয়। সালাম তৈরি করে বন্ধন, ভালোবাসা। মুসলিম পুরুষদের নিজ স্বকীয়তা, আদর্শ আর ব্যক্তিত্বের প্রকাশ থাকে দাড়িতে, ঠিক যেমনি মুসলিম নারীদের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য তাদের ঢিলেঢালা পোশাক বোরকা, আবায়া, হিজাব ও নিকাবে। দাড়ি একটি সুন্নাহ, দাড়ি একটি ঈমানী অনুভূতি, দাড়ি একটি ভালোবাসার নাম। দাড়ির সাথে জড়িয়ে থাকে একজন মুসলিম পুরুষের স্বপ্ন-- যে চিন্তা করে ভালোবাসে যাকে অনুসরণ করতে এই প্রচেষ্টা, একদিন নিশ্চয়ই তার শাফা'আত পেয়ে, তার হাতের পানীয় পান করে অনন্তকালের জান্নাতের মঞ্জিলে প্রবেশ করা যাবে ইনশাআল্লাহ। তাইতো, প্রতিদিন চলার পথে দাড়ি নিয়ে অজ্ঞতায় ডুবে থাকা মডারেট মুসলিমদের সুন্নাহ সম্পর্কে আলোকিত করুন, অপর দাড়িওয়ালা ভাইদের প্রতি ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দিন। মনে রাখবেন, এমনি করে একটি সুন্নাহকে জীবন্ত করার মাঝে রয়েছে অকল্পনীয় সাফল্যের সম্ভাবনা...

গোধূলীবেলা। ৩০ জুলাই, ২০১৪

বিষয়: বিবিধ

১২৬৭ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

254269
১৪ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫২
কাজি সাকিব লিখেছেন : ভালো লাগলো !
ভাতখোর মুসলমান আজ ভুলেই গেছে কিসে তাদের গায়ে লাগা উচিত আর কিসে কি করা উচিত! আর তাইতো যা নিয়ে গর্ব করার কথা তা নিয়ে করে কৌতুক,ফলাফলও পাচ্ছে হাতেনাতে,বিশ্বব্যাপী মার খাচ্ছে!
254457
১৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:৫৯
আজিম বিন মামুন লিখেছেন : বাংলা ঘড়ে জন্ম নিয়েও দু পাতা ইহুদী বই পড়ে বাংলার কিছু কুলাঙ্গার এমন আচরণ করছে।অবশ্যই মহান আল্লাহ উত্তম কর্মফলদাতা।
254460
১৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:১০
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। যারাই আমার দাঁড়ি নিয়ে আপত্তি করেছে তাদের সবাইকে বাই বলে দেই, কিন্তু মজার ব্যপার হল পরে তারাই এসে সরি বলে, আর বুঝতে পারে দাঁড়ির মর্যাদা কি! দাড়ি এবং ভদ্র মার্জিত আচরণের মিশেলে ভালবাসায় পূর্ন এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
254469
১৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:৩৯
মাহফুজ আহমেদ লিখেছেন : ১ম দাড়ি রাখার পর অনেক ট্যাগ খাইছি।
254666
১৫ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:১৫
দিশারি লিখেছেন : খুব ভাল একটি পোষ্ট
254677
১৫ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৫৯
বুড়া মিয়া লিখেছেন : একটা সময় ছিলো আমিও এটা নিয়ে মজাই করতাম – এখন বাস্তবতা ভিন্ন, আমি নিজেই এখন দাড়িওয়ালা ... যদিও সবধরনের পাপ থেকে আমার মুক্তি এখনও মনে হয় অনেক দূরে – তবুও মনে হয় এগিয়েই যাচ্ছি ...
254702
১৫ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:২৭
স্বপ্নের ফেরিওয়ালা লিখেছেন : এক কথায় যেনো ফুঁৎকার দিয়ে উড়িয়ে দিলেন সমস্ত সংশয়, চক্রান্ত আর হীনমন্যতা।

ব্যাপারটা এখন হতে হতে এমন দাড়িয়েছে স্বয়ং নিজের স্ত্রীও চাইনা স্বামীর দাড়ি থাকুক। কারন তারা দাড়িহীন নপুংসক দেখতে দেখতে মাইন্ড ওয়াশড হয়ে গেছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File