বিয়েশাদীতে দ্বীনদারীর প্রাধান্য ও ইসলামের নামে এক্সট্রিমিজম
লিখেছেন লিখেছেন সময়ের কথা ১৬ অক্টোবর, ২০১৪, ০৬:০৩:০৩ সন্ধ্যা
প্রথমেই বলি, জনপ্রিয় স্লোগান দেয়া, আর বাস্তবতার আলোকে ইসলামকে বুঝে চর্চা করার মাঝে পার্থক্য আছে। ইদানিং ইসলামি মানসিকতার মানুষদের মাঝে এটি দেখা যাচ্ছে যে, দ্বীনদারীর প্রাধান্যের কথা বলে তারা অনেক ক্ষেত্রেই ইসলামকে এক্সট্রিমলি কঠিন করে উপস্থাপন করছেন তরুন-তরুনী বিবাহইচ্ছুকদের কাছে।
ছেলেদের ক্ষেত্রে বলি। আসলে দ্বীনদ্বারীকে প্রাধান্য দেয়া মানে কি এই যে একটি দ্বীনদার মেয়ে পেলাম আর কোন কিছু দেখবো না! কেন দ্বীনদার মেয়ে কি সুন্দর হতে পারে না, তাঁর কি সামাজিক কালচারের ক্ষেত্রে পাত্রের সমপর্যায়ের পরিবেশে গড়ে উঠেছি কিনা তা দেখার দরকার পড়ে না! উত্তর হলো, একটি সুন্দর মেয়েও দ্বীনদার হতে পারে, একটি আর্থিকভাবে সচ্ছল মেয়েও দ্বীনদার হতে পারে।
আমার কাছে যদি প্রস্তাব আসে দুটি মেয়ের যার দুজনই দ্বীনদার, কিন্তু একজনের সৌন্দর্য ও আর্থিক অবস্থা অন্যজনের চেয়ে ভালো। আমি যদি আমার অবস্থার বিবেচনায় সুন্দর ও স্বচ্ছল জনকে পছন্দ করি তবে সমস্যা কি! মুলত, দ্বীনদারী ও অন্যগুনগুলো মিউচুয়েলি এক্সক্লুসিভ কিছু না। অর্থাৎ এর একটি থাকলে আরেকটি থাকবে না, এমনটি না। একজন মানুষ হিসেবে আমি দ্বীনদারিকে প্রাধান্য দিয়েও একটি সুন্দর (আমার দৃষ্টিতে যে সুন্দর) মেয়েকে বিয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারি, অথবা আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবেশে গড়ে উঠা মেয়েকে বিয়ে করতে চাইতে পারি।
অনেক সময় অনেকে প্রস্তাব আনে, প্রস্তাবের কোন কিছু ঠিক মত মিল না করলে শেষে দ্বীনদারীর ক্রাইটেরিয়াতে ফেলে বাকী সবকিছুকে অপ্রয়োজনীয় দেখাতে চায়। এখানে বড় ধরনের ইম্প্রাক্টিক্যালিটি আছে। আমি সামাজিকভাবে প্রতিষ্টিত অনেককে দেখেছি নিজে পছন্দ করে একটি কালো মেয়েকে বিয়ে করতে। ঐ মেয়ের দ্বীনদারীতেও এমন আহামরি কিছুই অন্তত আমি দেখিনি। ঐ যুগলের কাছে দ্বীনদারী কোন গোনার মাঝেও ছিল বলে মনে হয় না। আবার অনেক উত্তম মুসলিমকে দেখেছি যারা দ্বীনদারী, সৌন্দর্য, সচ্ছলতা সবই পেয়েছে।
তো বিষয়টা কি! বিষয়টা হলো, দ্বীনদার পাত্র/পাত্রী পেলেই বিয়ে করে ফেলতে হবে আর কিছু কাউন্ট না করে, রাসুল (স) এর হাদীসগুলোকে এমন এবসোলিউট চিন্তা না করে বরং সামাজিকতার পারস্পেকটিভে দেখতে হবে। কারন কোন হাদীসে এমনটি বলা হলেও, অন্য হাদীসে অন্য বিষয়কেও বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। কোন কোন হাদীসে দারিদ্রতার কথা এসেছে। তা দারিদ্রতাকি দ্বীনদারীর কিছু? অথচ রাসুল (স) নিজেই তা বলেছেন বিয়ে না করানোর পক্ষে যুক্তি হিসেবে। সুতরাং কোন একটি হাদীসের রেফারেন্স দিয়ে কেবল সেটির উপরেই জোর দেয়া এবং মানুষের দ্বীনদারী নিয়ে চিন্তায় প্রশ্ন তুলে ফেলা এক্সট্রিমিজম হতে পারে। কেউ একজন দ্বীনদার পাত্র বা পাত্রীকে রিফিউজ করলেই সে মনে হয় দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দিচ্ছে না এমন চিন্তা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। কিন্তু কেউ যদি দ্বীনদারী ভিন্ন অন্য সব কিছু পেয়ে কোন পাত্র বা পাত্রীকে গ্রহন করতে চায়, "দ্বীনদারী পরে ঠিক হয়ে যাবে" এমন অযুহাত তুলে, তবেই কেবল ধারনা করা যেতে পারে যে দ্বীনদারীকে সে প্রাধান্য দেয়নি। এ অবস্থায়তে দ্বীনদারী প্রাধান্যের গুরুত্বের কথা আসা উচিত।
বিষয়: বিবিধ
১২৫০ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ডজনাধিক নিকটাত্মীয়ের ঘটনা বিশ্লেষণে আমার ইয়াক্বীন জন্মেছে যে- ওটা তাক্বদীরের অংশ:
যোগ্যতা, সতর্কতা, অভিজ্ঞতা, বাছাই কোনকিছুই শেষপর্যন্ত কাজ করেনা!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
চেষ্টা করা কর্তব্য! কিন্তু তার পরেও যখন অন্যরকম হয়ে যায় তখন সেটাকে নেতিবাচক সমালোচনা বা (চেষ্টা না করার) ধারণা করা অনুচিত!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন