যেদিকে তাকাই ফতোয়াবাজদের বসন্তঃ মিশর নাকি ফেইলড কেস, আসলেই কি তা? তাহলে সাকসেস কেস কোনটা?
লিখেছেন লিখেছেন সময়ের কথা ২৭ জুলাই, ২০১৩, ০৭:৪৯:২১ সন্ধ্যা
এরচাইতে বেশী রক্ত ঝরেছে তুরস্কে, এরচাইতে বেশী লেগিটিমেট সরকার বিলীন হয়েছে তুরস্কে, তারপরো এরদোগানরা টিকে আছে, এগিয়ে যাচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের সমস্যা হল, আমরা বেশী তাড়াহুড়ো করি। অল্পতেই ঠিক বেঠিকের গননায় চলে যাই। নিছক বাড়াবাড়ি ছাড়া এগুলো কিছুই না।
মিশরে যা হচ্ছে, তা অনাকাংখিত কিছু না। তুরস্কেও তা হয়েছে, এর চাইতে কম হয়নি, এরপর বিজয় এসেছে। একদিন বাংলাদেশে ইনশা আল্লাহ এই অবস্থা হবে। তখন যারা গনতন্ত্র-খেলাফত, পশ্চিমাবিশ্ব ইত্যাদি নিয়ে ফতোয়াবাজী করার তাঁরা করবে, যারা রক্ত দিয়ে শাহাদাতের প্রমান দেয়ার তারা দিবে। এখানে নতুন কিছু নেই। সব আইটেম সব যুগেই ছিল, আছে, এবং থাকবে।
সফলকামতো তারাই ইনশা আল্লাহ, যারা কিছু রক্ত দেখেই ফতোয়াবাজীতে নেমে পড়েনি, বরং শহীদদের রক্তের শপথ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সাহস দেখিয়েছে। যাদের সে সাহস নেই, তারা ঘরে বসে আঙ্গুল চুষুন, বা গনতন্ত্র-খিলাফতের তর্ক করুন, বা নামাজ-রোজা করুন। কারন ইসলাম প্রতিষ্টার কাজ বুঝার মত জ্ঞানও আপনার হয়নি, এই ব্যাপারে হেদায়াততো দুরের কথা। আপনি সব মিলিয়ে বুঝবেন খতনা করা, জানাযা পড়া পর্যন্ত। এর বেশী বুঝ আপনাদের থাকলে ইসলাম বহু আগেই সারা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারত। রক্ত ঝরতনা মানুষের, অভাবের তাড়নায় শরীর বিক্রি করতো না কেউ, সুদ-ঘুষ-খুন-দুর্নীতিতে জর্জরিত হত না মানবতা। কিন্তু আপনার তা বুঝার দরকার নেই, আপনার কেবল নামাযে হাত বুকে বাধবেন না পেটে, বিবি তালাকের আরো আরো নিয়ম ইত্যাদি নিয়েই ব্যস্ত থাকলে চলবে।
আমি আপনার সাথে নেই। আছি তাদের সাথে যারা আছে মিশরের রাজপথে জীবনবাজি রাখে। যারা আছে তুরস্কের সরকারে জীবন বাজি রেখে। যারা আছে ইরানের হুকুমাতে। যারা আছে বাংলাদেশের কারাগারে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করায়। আপনি বসে বসে আঙ্গুল চুষূন, বিবি তালাকের ফতোয়া খুজুন, খতনা জানাযার বিধান বার বার আওড়ান যাতে ভুলে না যান...
অনেকে ইরানী বিপ্লব বা অস্ত্রের জিহাদের কথা বলছেন। ইরানের বিপ্লব ছিল কিছুটা চান্স বিপ্লব। সেখানেও গনভোট করেই শরীয়া চালু হয়েছিল। সমস্যা সেখানেও হতে পারত। সময়টা এখন ১৯৮০ না, আর ইরানের মত অবস্থাও কোথাও নাই। সেই ফর্মেটে বিপ্লব এখন অনেকটাই অসম্ভব। সময়ের সাথে সাথে কর্মপদ্ধতি পরিবর্তন হয়। আমরা মুসলিমরা সব সময়ই একসাথে সব হয়ে যাবে টাইপ চিন্তা করি। অথচ কাফিররাও আমাদের চাইতে মনে হয় বেশী ধৈর্যশীল। তারা তাদের মুবারকের পতনে হালতো ছাড়েইনি বরং প্রতিটী পদক্ষেপে দুরদর্শী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আবার আজকের পর্যায় পর্যন্ত এসেছে। কারন তারা জানে একদিনে মুসলিমদের প্রাসাদ ভাঙ্গা যাবে না। কিন্তু আমরা শুধু একটু এদিক ওদিক হলেই একলাফে তালগাছ টাইপ চিন্তাতে চলে যাই। প্রশ্ন করা শুরু করি একলাফে বিপ্লব হইলা কেন? একদিনে কেন কুফফারদের পতন হয়ে তাদের প্রাসাদ ভেঙ্গে আমাদের প্রাসাদ করা যাবে না, টাইপ চিন্তা। মনে রাখুন, আমাদের সমাজে টিভির বেলেল্লাপনা, বেহায়াপনা, খুনোখুনির রাজনীতি, গরিবদের অধিকার বঞ্চিত করা ইত্যাদি একদিনে ঢুকেনি। কুফফারদের অনেক বছরের পরিশ্রমে গড়া হয়েছে এটা। আপনি মুসলিম হিসেবে তাদের প্রাসাদ ভেঙ্গে আপনার ইসলামী প্রাসাদ গড়তেও সময় লাগবে, তাদের প্রাসাদ ভাঙ্গতে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে, জয় পরাজয় আসবেই, বদর আসবে, আবার উহুদ আসবে, আবার খন্দক আসবে। এভাবেই একসময় তাদের প্রাসাদের জায়গায় আপনার প্রাসাদ আসবে। তখনও সমস্যা থাকবে। কারন তখন তারা আবার আপনার প্রাসাদ ভাঙ্গতে চাইবে। সত্যমিথ্যার এই চিরন্তন দ্বন্ধ চলতে থাকবে। মাঝখানে লাভ হল ইসলাম আসলে মানবতা মুক্তি পাবে, অন্যায় হবে না শাসকদের পক্ষ থেকে, রাতের আধারে বাতি নিভিয়ে হত্যাকান্ড হবে না, মিলিটারী ট্যাঙ্কের নিচে চাপা পড়বে না সাধারন মানুষ। অন্যায়ের মাত্রা কমে আসবে, শান্তিপুর্নভাবে মানুষ জীবন যাপন করতে পারবে।
---------------------------
জামায়াত ইসলামীর জোট ভাঙ্গার জন্যে আওয়ামীলীগের প্রচেষ্টার একটি এনালাইসিস, এই ব্লগের সবচেয়ে বেশী পঠিত একটি পোষ্টঃ বিএনপিকে ত্যাগ করে আলাদা নির্বাচনে জামায়াতঃ আওয়ামী আবদারে জামায়াতের ভাবনা
একটি বারুদ পোষ্ট, চিন্তাকে কিছুটা নাড়া দেবে আশাকরিঃ মুসলিম হিসেবে ডাঃ জাকির নায়েককে শ্রদ্ধা করা গেলে, মাওলানা মওদুদী বা নিজামীকে নয় কেন?
তামীম ইকবালের বিয়েতে মাওলানা নিজামীর উপস্থিতি নিয়ে একটি স্বপ্নচিত্র আকা হয়েছে এই পোষ্টটিতেঃ তামিমের বিয়েতে সপরিবারে মাওলানা নিজামীঃ কেসস্টাডি
ইসলামে গোড়ামীর কোন স্থান নেই। তাই গোড়ামীর জাল ছিন্ন করে সঠিক চিন্তায় ইসলামের সৌন্দর্যকে তুলে ধরার প্রচেষ্টা দেখুন এই পোষ্টেঃ গোঁড়াদের ঘোড়সওয়ারী ও তীরন্দাজীর ইসলাম বনাম বুঝদারদের ক্রিকেট-ফুটবল সমেত ইসলাম
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান নিয়ে অনেকের প্রশ্নের অন্ত নেই। শিয়া-সুন্নীর বিভেদ কেবল নয়, বরং কাফির-মুসলিমের বিভেদে গিয়েও আলোচনা শেষ হয় না। ইরান নিয়ে কিছু চিন্তাকর্ষক কথা পড়ুন এক নিঃশ্বাসেঃ ইসলামী ঐক্যের ভিত্তিঃ ইরান প্রসঙ্গে আলোচনা
ইসলামের সঠিক বুঝ পাওয়ার ক্ষেত্রে এই পোষ্টটিতে কিছু চিন্তাকর্ষক পয়েন্ট তুলে ধরা হয়েছেঃ ইসলামের যুগ বা জাতিবদ্ধতার বিশ্লেষনঃ ইসলাম কি আরবীয়, মধ্যযুগীয় বা প্রাচীন যুগীয়
আমার ফেসবুকঃ Mohamad Ahsanul Haque Arif
বিষয়: বিবিধ
১৬৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন