চাঁদে আল্লামা সাঈদীকে দেখা: একটি পর্যালোচনা-১

লিখেছেন লিখেছেন আলোকিত প্রজন্ম ০৪ মার্চ, ২০১৩, ১২:২৬:৩৫ রাত

গত দু’দিন থেকে আমাদের দেশের আকাশে একটি রব খুব ধবণিত হচ্ছে। ফেইসবুক, টুইটার, ব্লগ এবং কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যমও এ ব্যপারে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে রিপোট করেছে। এদিকে দেশ থেকে প্রবাস থেকে বাংলাদেশী বিভিন্ন লোকের জিজ্ঞাসা এবং ফোনে বারংবার এ ব্যপারে আমার কি মতামত তাও জানতে চাওয়া। তাই এ ব্যপারে যুক্তি নির্ভর কিছু পর্যালোচনা করতেই আমার এই প্রয়াস।

আল্লামা সাঈদীকে আমরা সকল মুসলিম আল্লাহর একজন প্রিয় বান্দা হিসেবে জানি। বিদেশের অনেক মহলেও তার সুখ্যাতি রয়েছে। শুধু মুসলিম নয় বরং অমুসলিমদের কাছেও তিনি একজন সৎ এবং একনিষ্ট মানুষ হিসেবে স্বীকৃত। এটিই একজন সত্যিকার নায়েবে রাসূলের চরিত্রের ভূষণ। তাঁর চারিত্রিক মাধুর্যতাই তাঁকে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় বহু বছর ধরে নির্বাচিত প্রার্থীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য পদে অধিষ্ঠিত করেছে। দুনিয়ার মানুষের কাছে তিনি অনেক ভাল বিধায় তাঁর সম্পর্কে সুধারনা রাখাই আমাদের সচেতন বিবেকের একটি দাবী। তবে তিনি আল্লাহর কাছে কেমন সেটি আমাদের জানা থাকার বিষয় না। কারণ দুনিয়াতে তিনি মানুষের সাথে যেমন ঠিক তেমনই হবে তার সাথে দুনিয়াবাসীর ব্যবহার। তবে সে আল্লাহর কাছেও তিনি অনেক ভালো বলে আমাদের ধারণা। কারণ বিশ্বনবী (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ কাউকে ভালবাসলে ফিরিস্তাদের বলে দেন আমি এই মানুষটিকে ভালবাসি তোমরা দুনিয়াবাসীকে জানিয়ে দাও যে আমি তাকে ভালবাসি এবং তারাও যেন তাকে ভালবাসে। অনুরুপভাবে আল্লাহ তাআলা কাউকে তার কাজে কর্মে অপছন্দ করলে এর বিপরীত বলে থাকেন। দুনিয়ার মানুষেরা তাকেই আন্তরিকভাবে ভালবাসে যিনি মানুষের সাথে ভাল আচরণ করেন এবং তার চরিত্র ভাল। মূলতঃ আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের ভালবাসা আল্লাহকে ভালবাসারও একটি প্রমাণ। আল্লাহ তাআলা যাদেরকে ভালবাসেন দুনিয়াতে তাদেরকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করে থাকেন এবং পরিস্থিতির আলোকে বিভিন্নভাবে সাহায্যও করে থাকেন।

কিছু মৌলিক ধারণা:

আল্লামা সাঈদীকে চাঁদে দেখার ব্যাপারটিতে সঠিক অবস্থান নিতে হলে প্রথমেই কারামত প্রসঙ্গে কিছু মৌলিক বিষয় জানা থাকা দরকার।

এক: আল্লাহ তাআলা অবশ্যই মুমিনদেরকে সাহায্য করবেন বলে ওয়াদা করেছেন। তবে সেটি কোন পর্যায়ে তা তিনিই জানেন। আমরা জানিনা বিধায় খুব তাড়াহুড়া করি এবং ধৈয্য হারিয়ে ফেলি।

দুই: কারামত মানে হচ্ছে সম্মান। আল্লাহ তাআলা অলৌকিকভাবে তার বান্দাদেরকে বিপদ থেকে রক্ষা করে সম্মানিত করেন বলে এটিকে কারামত বলা হয়। এই সম্মান অনেকভাবেই হতে পারে। তবে বিজয়ের সম্মানই সর্বশ্রেষ্ট কারামত। কারামত দু’ধরণের হতে পারে। প্রথমত: ‘সম্পূর্ণ অলৌকিক’ এবং এটি যারা কারামত লাভ করেন কিংবা যারা তার সাথে থাকেন তারাই কেবল বুঝতে কিংবা দেখতে পারেন। আর তাই এটি অন্যদের বোধগম্য নয় এবং অন্যরা এটিকে বিশ্বাস না করলেও কোন সমস্যা নেই। দ্বিতীয়ত: ‘ফিজিক্যাল’ অর্থাৎ এটি অনুভূত, প্রমাণিত এবং সবাই এটিকে বুঝতে পারে। ফিজিক্যাল কারামত বা প্রামাণ্য কারামতই শ্রেষ্ট কারামত। কারণ এটি দুনিয়ার মানুষের মাঝে বিজয়ের জলন্ত একটি প্রমাণ। এর মাধ্যমেই সত্য প্রকাশিত হয় সম্পূর্ণভাবে। এই ক্ষেত্রে পুরো জাতিকে পরীক্ষার করার জন্যই আল্লাহ তাআলা তাঁর বিশেষ বান্দাদের পরীক্ষার পাত্র বানান। তাই এটি শুধু ব্যক্তির পরীক্ষা নয় বরং পুরো জনপদ কিংবা জাতির পরীক্ষা। আর তাই সময় ও পরিস্থিতির আলোকে এই পরীক্ষার পরিধিও বেড়ে যায়। যে কোন এক এলাকা কিংবা একটি দেশের বিপদে অন্যদেরকে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে। কারণ গোটা মুসলিম উম্মাহ একটি জাতি। অপর পক্ষে ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত কারামত প্রকাশ করাও অনুচিত। আর মুজিজার অর্থ হচ্ছে অক্ষমকারী কাজ বা অন্য কিছু। আল্লাহর তাআলা অলৌকিকভাবে কিছু ঘটিয়ে অপশক্তিকে অক্ষম করে নবীদের সাহায্য করেন বিধায় এটিকে মুজিজা বলা হয়।

তিন: কারামত আল্লাহর পক্ষ থেকে শুধু ব্যক্তির নিজের জন্য। এটি অন্যদের ক্ষেত্রে কোন ধরণের প্রমান হিসেবে কাজ করেনা। কারামত কারো কাছে প্রকাশ করা উচিত নয় বরং কারামত একদিকে ব্যক্তির জন্য সম্মান হলেও অন্য দিকে থেকে ব্যক্তির জন্য আরেকটি পরীক্ষাও বটে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা ব্যক্তির কৃতজ্ঞতা/ অকৃতজ্ঞতা, আনুগত্য/ অবাধ্যতা, এবং বিনয়/ অহংকার ইত্যাদির পরীক্ষার নিয়ে থাকেন বিধায় এটি সাধারণ পরীক্ষার পথ থেকে আরেকটু বেশী পিচ্ছিল। এখানেই আমরা বিচার করতে পারি আমাদের দেশের কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ কারামত দাবী করে বহু ধরণের স্বার্থ হাসিল করতে চায়। আমাদের সমাজের সাধারণ মানুষগুলো তাদের ধোকায় প্রতারিত হয়। স্বীয় স্ত্রী, পিতা মাতা সহ সমাজের যাদের সাথে ভাল ব্যবহার করে আল্লাহর প্রিয় হওয়া দরকার তা না করে কারামতের অহেতুক গুজবে অন্ধ হয়ে তাদের কাছে ছুটে গিয়ে আল্লাহর অবাধ্য হয়।

চার: অন্যান্য উম্মতদেরকে আল্লাহ তাআলা নবী রাসূলের মুজিজার মাধ্যমে সাহায্য করেছেন। অনুরুপভাবে শেষ নবীর উম্মতদের আল্লাহ তাআলা সর্বাপেক্ষা বেশী এবং শ্রেষ্ট মুজিজা দিয়ে সাহায্য করেছেন। তবে এক্ষেত্রে শর্ত ছিলো নবীর অনুসারীরা সকলে তাদের সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আল কুরআনে আল্লাহ স্পষ্ট বলেছেন, “তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ কর, আল্লাহ তোমাদের (হাতেই) মাধ্যমে তাদেরকে শাস্তি দিবেন”। সুতরাং মুমিনদের হাতে যা আছে তা নিয়ে ময়দানে নামা আল্লাহর সাহায্যের পূর্ব শর্ত। সকল মুমিন তাদের হাত দিয়ে অন্যায়কে প্রতিহত করতে সচেষ্ট না হলে আল্লাহ সাহায্য আসেনা বরং মুমিনদের পরীক্ষা অব্যাহত থাকে এবং দিন দিন এই পরীক্ষা তীব্রতর হতে থাকে এবং এর মাধ্যমেই আল্লাহ তাআলা বান্দার গুনাহ মাফ করে তাদেরকে পূত পবিত্র করেন। পাশাপাশি কারা আল্লাহর প্রকৃত শত্রু তাদেরকে মুমিনদের সামনে উম্মোচন করে দেন। আর যখনি আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণে পরীক্ষা হয় কিন্তু মুমিনরা যথা সর্বস্ব নিয়েও অক্ষম ঠিক তখনি আল্লাহ আআলা তাঁর আসমানী সাহায্য পাঠান।

পাঁচ: আল্লাহ তাআলা কাউকে পরীক্ষার মাধ্যমে দুনিয়াতে বিজয় না দিয়েই দুনিয়া থেকে নিয়ে যান এবং আখিরাতে তাকে সম্মানিত করেন। এটিকে তিনি বান্দার জন্য সর্বোচ্চ সম্মান হিসেবে মনে করেন। আর কাউকে পরীক্ষার মাধ্যমে দুনিয়াতেও বিজয় দান করে থাকেন। এটি সম্পূর্ণই তাঁর ইচ্ছা। তবে কাকে রাখবেন আর কাকে নিয়ে যাবেন সেটি তাঁরই সিদ্ধান্ত, কিন্তু উভয়কেই তিনি ভালবাসেন এবং সম্মানিত করেন। আল্লাহ তাআলা যাকে বেশী ভালবাসেন তাকে ততবেশী কঠিন পরীক্ষা করেন। আর যাকে বেশী ভালবাসেন তাকে দ্রুত তাঁর কাছে পেতেও চান আর তাই দ্রুত তাকে দুনিয়া থেকে নিয়ে যান।

ছয়: এত সব পরীক্ষায় মানুষের করণীয় হচ্ছে তাদের সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালানো। বিজয়ের পথকে সুগম করা। বিজয়ের কাজে তাদের অংশ নেয়া। বিজয় অর্জন এবং বিজয় দেখে এর সুফল ভোগ করা তাদের দায়িত্ব এবং কাম্য কোনটাই নয়।

সাত: আল্লাহ তাআলা মানুষকে ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিপদ আপদ, অভাব অনটন, ভয় ভীতি, সন্তান সন্তুতির মৃত্য ইত্যাদি দিয়ে পরীক্ষা করেন এবং এই পরীক্ষার মেয়াদকাল বেশী দীর্ঘ নয় বরং ব্যক্তির নিজের সংশোধন ও প্রচেষ্টার উপর ভিত্তি করে তার গুনাহ মাফ করে বিপদ থেকে তাঁকে মুক্তি দেন। কিন্তু আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মানুষের জন্য সামষ্টিক পরীক্ষাই হচ্ছে প্রকৃত পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষা আল্লাহ তাআলা শক্তিশালী ও দূর্বল সকল মুমিনদের করে থাকেন। তাদের মধ্যে কিছু কাল পরীক্ষার পর শক্তিশালীরা যখন আরো শক্তিশালী হয়, দূর্বলরা যখন শক্তিশালী হয় এবং সকলে মিলে সমবেতভাবে যখন বাতিলের মোকাবিলায় সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালায় ঠিক তখনি আল্লাহ তাআলা বিজয়ের পথকে সুগম করেন এবং তার সাহায্য পাঠান।

আট: নবী রাসূলদের থেকে শুরু করে অদ্যবধি যুগে যুগে আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় বান্দাদের অনেক ভাবে পরীক্ষা করেছেন এবং পরীক্ষার শেষ মহুর্তে অলৌকিকভাবে সাহায্য করেছেন। এই ক্ষেত্রে যে কারণে আল্লাহ তাআলা সরাসরি ফেরেস্তা কিংবা সৃষ্টিজগত থেকে তাঁর অন্যান্য সৈন্যের মাধ্যমে সাহায্য করিয়েছেন সেটি হচ্ছে, সে সকল পরিস্থিতিতে আল্লাহর দ্বীনকে রক্ষা করা মত নবী-বাসূলসহ হাতে গোনা গুটি কয়েকজন (যেমন নূহ আঃ ৯৫০ বছর দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে মাত্র অল্প কয়েকজন মানুষ পেয়েছেন যারা ঈমান এনেছে।) মানুষ ছাড়া আর কেউ ছিলনা এবং তারা সকলে তাদের যথা সর্বস্ব নিয়ে আল্লাহর দ্বীনের জন্য কুরবানী করতে প্রস্তুত ছিল। আল্লাহ তাআলা যখন দেখলেন তাদেরকে সহযোগিতা করার আর কেউ নেই কিংবা সর্বসাকুল্যে তাদের যে প্রস্তুতি তা দিয়ে দুনিয়ার বিচারে শত্রুদের মোকাবেলার জন্য যথেষ্ট নয় ঠিক তখনি আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সাহয্য করেছেন। তাদের নির্যাতন যখন আকস্মিক ছিল, একাকী ছিল, এবং ঈমান ও কুফরের সত্যতার বিষয় ছিল তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আকস্মিক ও অলৌকিক সাহায্যে তাদেরকে রক্ষা করেছেন এবং আল্লাহর অস্তিত্ব, সাহায্য ও শক্তিকে প্রমাণ করেছেন। যেমনটি ঘটেছিল নূহ আঃ এর কিস্তি রক্ষা, ইব্রাহীম আঃ এর অগ্নিশীতল, বায়তুল মাকদাসের দৃশ্যাপট রাসূল সাঃ এর সম্মুখে ভেসে আসা, ইয়ামেনী বাদশাহ আবরাহ এর আক্রমণ থেকে আবাবিল পাখির মাধ্যমে কাবা রক্ষা সহ রাসূলুল্লাহ সাঃ এর ব্যক্তি সত্ত্বার সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন অলৌকিকতা। এগুলোকে আমরা নবী রাসূলদের মুজিজা হিসেবে জানি। আর নবী রাসূল ছাড়া আল্লাহর অন্য প্রিয় বান্দাদের ক্ষেত্রে অলৌকিকতাকে আমরা কারামত হিসেবে জানি।

নয়: অপর দিকে দুনিয়াতে যখন অনেক সংখ্যক মুমিন থাকে এবং তারা পৃথিবীতে সত্য প্রতিষ্ঠার কাজের এগিয়ে আসেনা, সত্যকে সমর্থন করেনা এবং তাদের এই অনীহার কারনে অপশক্তি দুনিয়াতে ক্ষমতার আসন দখল করে সত্যপন্থীদের সহ সকল মানুষের উপর জুলুম নির্যাতন চালায় তখনি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুমিনদেরকে সামষ্টিকভাবে পরীক্ষা করাকে আরো তীব্র করে তোলেন। এ ক্ষেত্রে যতক্ষন পর্যন্ত সত্য মিথ্যার পরিষ্কার পার্থক্য সূচিত না হবে, যারা শুধু নামেই মুমিন তারা তাদের প্রকৃত পরিচয়, সম্পর্ক এবং সমর্থনকে পরিষ্কার না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলার পরীক্ষা অব্যাহত থাকে। আর যখন প্রকৃত মুমিন এবং প্রকৃত মুনাফিকের পরিষ্কার পার্থক্য সূচিত প্রকৃত মুমিনরা সমবেতভাবে তাদের যথা সর্বস্ব নিয়ে মিথ্যার মোকাবিলায় ঝাপিয়ে পড়ে এবং কিন্তু তাদের প্রস্তুতি সীমিত ঠিক তখন আল্লাহ তাআলা অপশক্তির মনে মুমিনদের ব্যপারে ভীতির সঞ্চার করে দেন। আর মুমিনদেরকে আধ্যাত্নিক সাহায্য দিয়ে ময়দানে টিকিয়ে রাখেন এবং বিজয় দান করেন। আর যখন তারা তাদের সবাই যথা সর্বস্ব নিয়ে ময়দানে ঝাপিয়ে পড়ে কিন্তু তাদের এই প্রস্তুতি দুনিয়ার বিচারে অপশক্তির মোকাবেলায় যথেষ্ট নয় ঠিক তখনি আল্লাহ তাআলা মুমিনদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য তাদেরকে আসমানী ফিরিস্তা কিংবা তার সৃষ্টিরাজির অন্যান্য বাহিনীকে সৈন্য হিসেবে পাঠান। যেমনটি ঘটেছিল বদরের প্রান্তর সহ অন্যান্য কিছু যুদ্ধে। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের চুড়ান্ত পরীক্ষার পর তাদেরকে বিজয় দানের উদ্দেশ্যে হাজার হাজার ফিরিস্তাকে সৈন্য বাহিনী করে পাঠিয়েছেন।

দশ: আল্লাহ তাআলা কাউকে পরীক্ষায় ফেলে এই পরীক্ষায় অলৌকিক কিছু দিয়ে তাঁকে সহযোগিতা করেননা। এটি আল্লাহ তাআলার রীতি। যেমনি ভাবে কোন অভিজ্ঞ ও বুদ্ধিমান শিক্ষক কঠিন প্রশ্ন করলেও পরীক্ষার হলে তার প্রিয় ছাত্রকে সহযোগিতা করেননা। কারণ সহযোগিতা করার মাধ্যমে পরীক্ষার উদ্দেশ্যই ব্যহত হবে। বরং কঠিন পরীক্ষায় সঠিক জবাব দিলে তাকে সর্বোচ্চ নাম্বার দিয়ে থাকেন। আরো একটি সুন্দর উদাহরণ হচ্ছে, কোন সেনা অফিসার তার অধীনস্থ সেনাদের মানোন্নয়ন করার জন্য বিভিন্ন কঠিন ট্রেনিং করিয়ে থাকেন এবং দূর্লভ অভিযানে পাঠান। তিনি সরাসরি সহযোগী হয়ে সহযোগিতা করেননা। বরং তার সহযোগিতা হচ্ছে শুরুতেই সব নিয়ম কানুন ও পরামর্শ দিয়ে দেয়া। এসব অনুসরণ করেই পরীক্ষার্থী সেনা তার অভিযানে বের হবে। এই অভিযানে সফল হলেই তার পদোন্নতি হয়ে থাকে। এটি হচ্ছে দুনিয়ার নীতি। অনুরুপভাবে এই বিশ্বজগতের পরিচালনায় আল্লাহ তাআলারও কিছু সাধারণ রীতি আছে যেগুলোকে সুন্নাতুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর সুন্নাত বা আল্লাহর রীতি বলা হয়। তবে আল্লাহ তাআলা যেহেতু সর্বোপরি বান্দার কল্যাণই চান তাই এমন পরীক্ষায় বান্দাকে ফেল না করিয়ে বরং পাশ করিয়ে দেন। কিন্তু সেটি হয়ে থাকে নিদিষ্ট একটি সময়ের পর, অলৌকিকভাবে নয়। বরং এমন পরীক্ষায় তাঁর সাহায্য হচ্ছে তিনি বান্দাকে অনেক মনোবল, সৎ সাহস এবং বীরত্ব দান করেন। আল্লাহর প্রতি তার ঈমান, ভরসা বৃদ্ধি করেন। আল্লাহর তালার এমন সুন্নাতগুলোর কিছু কিছু ইঙ্গিত কুরআন-হাদীসের বিভিন্ন ভাষ্যে পাওয়া যায়। আর কিছু কিছু রীতি রাসূলের সিরাত, সাহাবাদের জীবনী এবং ইতিহাসের বিভিন্ন যুগ পর্যালোচনা করলে অনুধাবন করা যায়। এক্ষেত্রে বিশিষ্ট শরীয়া স্কলার আব্দুল করিম যায়দান এর ‘সুনানুল্লাহিল ইলাহিয়্যাহ’ বা আল্লাহর রীতি নামে একটি বই রয়েছে। পাঠকের জ্ঞাতার্থেই উল্লেখ করলাম। চলবে >>>

দ্বিতীয় পর্ব পড়তে Click this link

বিষয়: বিবিধ

১৯১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File