জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণে প্রধান মন্ত্রীর যুক্তি ও আমার কিছু প্রশ্ন
লিখেছেন লিখেছেন আলোকিত প্রজন্ম ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:৫৮:৪৬ দুপুর
বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। গণতন্ত্রই মানুষের স্বাধীনতার কথা বলে, সমান অধিকারের কথা বলে। বলে বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা। আর এসকল বিষয় হচ্ছে একজন ব্যক্তির নিজস্ব অধিকার। অন্য দিকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গণতন্ত্র কথা বলে বিভিন্ন দলের বৈধতার কথা। কথা বলে তাদের স্ব স্ব রাজনৈতিক মিছিল মিটিং আর বক্তব্যের স্বাধীনতার পক্ষে। আমার দেশের নারী শিশু আবাল বৃদ্ধা এই কথাতেই বিশ্বাস করে এবং এটিকেই গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র হিসেবে জানে। কিন্তু অনাকাঙ্খিত রাজনৈতিক সুর কখনো কখনো ধর্ম নিরপেক্ষতার মাধ্যমে গনতন্ত্রের সংজ্ঞা দিয়ে থাকে যাতে আমার দেশের সচেতন মানুষ কখনোই বিশ্বাস করেনা। এমন গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল হচ্ছে জামাত। গণতন্ত্রের মূলমন্ত্রে বিশ্বাসী হয়েই জামাত স্বাধীনতার কিছু কাল পর থেকে একাকী কিংবা কোয়ালিশনে নির্বাচন করে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে আসছে। স্বাধীনতা ও সংসদ প্রতিনিধিত্বের ৪০ বছর পর বর্তমান সরকার চাচ্ছে জামাতকে নিষিদ্ধ করতে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারী প্রধান মন্ত্রী এমন মন্তব্য করে বলেন: “জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই”। http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-02-17/news/329890
এর পরেই আবার আইন মন্ত্রী একি মন্তব্য করেন। আর এভাবে শুরু হল সরকারী ব্যক্তিবর্গের বক্তব্যে জামাত নিষিদ্ধকরণের হুমকি।
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2013-02-24&ni=126627
এর যুক্তি হিসেবে প্রধান মন্ত্রী কিছু কারণ উল্লেখ করেন। পাঠক মহলে সেই যুক্তিগুলো কিছু পর্যালোচনা করতে আমি কিছু প্রশ্ন রাখতে চাই।
এক: প্রধান মন্ত্রী বলেন: “কারণ, তারা সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাসী”। মানে হচ্ছে জামাত সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাসী এবং সন্ত্রাস করে। যুক্তিটি কতটুকু ঠিক? জামাত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেই রীতিমত অবস্থান করছে। সরকার কর্তৃক সৃষ্ট চলমান পরিস্থিতিতে তারা তো শুধু নিজেদের আত্নরক্ষা করছে এবং গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য রাজপথে নামছে। এতেই যদি জামাত সন্ত্রাসে বিশ্বাসী হয়ে যায় তাহলে সরকার তার পুলিশ বাহিনী দিয়ে নির্বিচারে যে গণহত্যা করছে এর মাধ্যমে কি তারা জামাত সহ অন্যান্য জনগণের নিরাপত্তা দিচ্ছে? শুধু তাই নয় জনগণ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত স্পেশল ফোর্স র্যাব এবং বিডিয়ারকে এদেশের ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষকে অহেতুক নির্যাতনে বাধ্য করছে। এতেও শেষ নয় বরং দেশের সার্বভৌত্বকে রক্ষার কাজে নিয়োজিত দেশের একনিষ্ট সেনাবাহিনীকেও ব্যবহারের আগাম হুমকি দিচ্ছে। অবশ্য ইতিপূর্বে তাঁরা সেনাবাহিনীর মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়েছেন বিধায় বাপের সম্পত্তির মত সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করতে পারার বিশ্বাস নিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে সেটি পারবেন কিনা আমার মনে হয়না। জামাত সন্ত্রাস করলে নিরীহ মুসল্লিদের জাতীয় মসজিদের ভিতরে আটকে রেখে বৃষ্টির মত মসজিদের ভিতর গুলি চালায় কারা? মুসল্লিদের মসজিদে আসতে বাধা দিয়ে ধরে নিয়ে যাচ্ছে কারা? কারা দাঁড়ি-টুপির উপর হামলা করে এদেশের ৯০ ভাগ ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় ইসলাম, কোরআন, রাসূল (সাঃ) এবং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলাকে কটাক্ষ ও আঘাত করছেন? অবশ্য ইতিপূর্বে তারা ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে রাজনীতিও করেছেন। কারা এদেশের জাতীয় মসজিদের এলাকায় রাষ্ট্রদ্রোহীর ন্যায় ট্যাংক ব্যবহারে প্রতি সেকেন্ডে মুসল্লিদের উপর গুলি বর্ষণ করে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বরতাকে হার মানিয়েছে? কারা মসজিদের বয়স্ক ইমামকে লাঞ্ছিত করেছে? কাদের হুকুমের গোলাম পুলিশ বাহিনী মুসলিমদের কপাল পেতে মহান রবের সামনে সিজদাবনত হওয়ার পবিত্র স্থান মসজিদে জুতা নিয়ে প্রবেশ করে মসজিদকে অপবিত্র করে? কারা নামাজরত অবস্থায় মুসল্লিকে গ্রেফতার করে হিংস্র হায়নার আক্রমণকে হার মানায়? কাদের ভয়ে টিনের ঘরে আত্নগোপন করেও গুলী হতে রক্ষা পায়না হেলেনা? কারা একহাতের ব্যবধানের দূরুত্বে গুলি ঠেকায় জামাত কর্মীর দেহে? কারা ঘটিয়েছে ইলিয়াস আলীর নাটকীয় কায়দার গুম? চলবে...
বিষয়: বিবিধ
১৩৫৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন