কোটা প্রথা: যুক্তি কি বলে আর এইচ.টি. ইমাম কি বলে
লিখেছেন লিখেছেন শাহেদ তাসলীম শাহাদাত ১১ জুলাই, ২০১৩, ০৭:৫৪:২০ সন্ধ্যা
হাম্বালীগের নৌকা ডুবানোর অন্যতম কান্ডারী এইচ. টি. ইমাম বলেছেন, কোটাপ্রথা অত্যান্ত যৌক্তিক এবং তাহা আরো বাড়ানো উচিত। তো আসেন আমরা একনজরে দেখে আসি এই মহাযৌক্তিক কোটার ক্যারিশমাটিক গুণাগুণ।
দেশে ১৫-১৯ মার্চ পরিচালিত আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১ অনুযায়ী বাংলাদেশে বর্তমান জনসংখ্যা ১৫ কোটি ২৫ লাখ ১৮ হাজার। তো তাহলে আমরা এখন খাতা-কলম ও ক্যালকুলেটর নিয়ে বসে যাই এই জটিল ও মহাযৌক্তিক কোটার গুষ্টি উদ্ধারের জন্য।
সরকারী চাকরিতে প্রচলিত কোটার শতকরা হার নিন্মরূপ,
১. মুক্তিযোদ্ধা কোটা- ৩০% ২. নারী কোটা- ১০ % ৩. জেলা কোটা- ১০ % ৪.উপজাতি কোটা- ০৫ % ৫. প্রতিবন্ধী কোটা- ০১ % ৬. মেধা কোটা- ৪৬ %
সর্বমোট আমরা এখানে ১০০ % হিসাব পেলাম। এবার আসেন মূল ক্রাইম উদঘাটনে,
▼ মুক্তিযোদ্ধা কোটাঃ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রায় দু’লাখ। এই দু’লাখ হলো মোট জনসংখ্যার ০.১৩ % থেকে সামান্য বেশী। আর এই দু’লাখেরজন্য কোটা বরাদ্ধ আছে ৩০%। বাহ কি চমৎকার এবং মহাযৌক্তিক দেখা গেল তাই না এইচ.টি. ইমাম সাহেব?
▼ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী যাদেরকে কোটায় উপজাতি বলা হয়েছে তাদের সংখ্যা ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৫১ জন। এরা হচ্ছে মোট জনসংখ্যার ১.০৩৯৯ % বা ১.০৪ %। এদের জন্য কোটা হচ্ছে ৫%। এটা কিন্তু, মনে রাইখেন, খুব যৌক্তিক। আমরা কি এইচ টি ইমাম সাব থেকে বেশী বুঝি নাকি! উনি সক্রেটিস এর জামানার মানুষ। তাই উনি যৌক্তিক, আর আমরা অযৌক্তিক।
▼ প্রতিবদ্ধী কোটা ১%। ওদের বর্তমান সংখ্যা ৩০ লাখ ১৭ হাজার। মোট জনসংখ্যার ১.৯৮%। তো তাহলে এটা যৌক্তিক দেখা গেল। ওকে ফাইন, এটা থাক। ইমাম সাব, যদি পারেন এটা আরো ১% বাড়িয়ে দিয়েন। নো প্রবলেম।
▼ নারী কোটাসহ সব মিলিয়ে দেখা গেল, ৫৬% কোটা মোট জনসংখ্যার ৪%। এই ৪% জনসংখ্যা বা ৫০ লাখ (around) জনসংখ্যা ভোগ করবে ৫৬% কোটা বা ৫৬ % সরকারী চাকরি। আর বাকী ১৪ কোটি ৭৫ লাখ ১৮ হাজার জনসংখ্যার জন্য থাকলো ৪৪% কোটা বা ৪৪% সরকারী চাকরি। কি যৌক্তিক দেখা গেল তাই না ইমাম সাব। কি রাজা-বাদশাহী কাণ্ড চলতাছে দেশে। লেস দেন ৪% জনসংখ্যা বর্জোয়া শ্রেণীর লোক দেশে আবিস্কৃত হইলো আর বাকীরা হইলো ধইঞ্চা বা প্রোলেতারিয়েত। মুরগীর চাইতে ডিম বড় আর কি !! আফ্রিকার জংগলেও মনে হয় না কখনো এই রকম অযৌক্তিক কান্ড ছিল।
আমি কোটার বিপক্ষে না। কোটা যদি রাখতে হয় বা থাকে কিন্তু সেটা কোনভাবেই মোট ৪% এর বেশী থাকতে পারবেনা। যদি এই ৪% কোটা রাখতে হয় তাহলে তা পরবর্তীতে ০% এ কমিয়ে আনতে হবে। কেউ যদি অনগ্রসর থাকে তাহলে তাকে অগ্রসর কারার ব্যাবস্থা করা হোক। তাকে মেধাবী করে গড়ে তোলা হোক। কিন্তু তা কোন ভাবেই যেন কোটা দিয়ে না হয়।
মেধাবীদের জয় হোক। -শাহেদ তাসলীম শাহাদাত
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন