আমার সোনার বাংলা
লিখেছেন লিখেছেন জাহিনুর ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৫:২২:৫৫ বিকাল
আমি অত্যন্ত দুঃখ নিয়ে আজ আমার সোনার বাংলা নিয়ে মনের অব্যক্ত কথা লিখছি। হয়তো কারো ভাল লাগতেও পারে আবার নাও লাগতে পারে। আমার বাড়ী বর্তমান রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলায়। আমার বাড়ীর পাশেই একটি নদী আছে নাম তার খরখরিয়া, নামের সাথে তার আচরনের যথেষ্ট মিল ছিল। খরস্রোতা নদীটিতে সবসময় পানি থাকত আর থাকত মাছ, কি বলব আমি প্রায়ই গোসল করতে গিয়ে শুধু পাঁ দিয়ে বালুর মধ্যে নারা চারা দিয়েই অনেক "বালাচাটা" মাছ ধরেছি। এই তো সেদিনও আমার সোনার বাংলার খরখরিয়া নদীটি তার খরস্রোতা রুপ হারিয়ে মৃতশয্যাবস্থায় ছিল কিন্তু এখন সেই নদীটি কোথায় ছিল তা আগে থেকে কেউ না জানলে বলতেই পারবে না, তবে আই.কিউ একটু ভাল হলে পাশাপাশি দুইটা ব্রীজ দেখলে হয়তো অনুমান করতে পারবে যে এখানে একটি নদী বা নালা ছিল।
আমার খুব খারাপ লাগে আমি হয়তো বোঝাতে পারবো না, আমি যখন এই কথাগুলো লিখতেছি তখন আমার চোখে জল বলেন আর পানিই বলেন বারন সত্বেও বারবার আসতেছে। সত্যিই আমি আপনাদের বোঝাতে পারবো না। আমি প্রথম যখন ঢাকাতে নগরবাড়ি-আরিচা ফেরিঘাট দিয়ে সেই ১৯৯৭ সালে এসেছিলাম, আসার পথে ফেরিতে চড়ে এতবড় নদী দেখে আমাদের নদীটাকে নদী বলতে লজ্জা হত। তারপরও যত ছোট নদী বা নালাই হোক না কেন খাতা পত্রে এখনও কিন্তু নদী হিসাবেই তাকে ধরা হয়। তো কিছুদিন আগে বাড়ীতে গিয়ে দেখতেছি নদীটি নাই হয়ে গেছে। এটা কিভাবে সম্ভব হল, পরে অনেক খোজ নিয়ে জানতে পারলাম যে আমাদের সৎ প্রতিবেশী, স্বাধীনতার অকৃত্তিম বন্ধু, স্বঘোষিত বড় ভাই থুক্কু দাদা, আমার সোনার বাংলার সন্ত্রাসীদের অভয়াশ্রম, ফেলানীর মত চোরা কারবারীদের ফেলায় না দিয়ে ঝুলিয়ে মারা বীর উত্তম কি কি যেন বাঁধ দিয়ে পানি আটকিয়ে দিয়েছে।
আমার বুঝে আসে না ফারাক্কা বাঁধ দিয়েছে দাদা, তো রাজশাহীতে পানি থাকবে না কিন্তু আমার খরখরিয়ার হল কি? তাই আরো খুজতে লাগলাম দাদার কারিশমা কোথায় লুক্কায়িত। সবাই বলে, খুজলে নাকি আল্লাহ সব কিছুই মিলায় দেয়। সত্যিই তো আমিও আমার জবাব পেয়ে গেলাম আমাদের পরম নমষ্কারের দাদারা আমাদেরই সুবিধার জন্য অনেক টাকা পয়সা খরচ করে নাকি গজলডোবা নামে একটি বাঁধ দিয়েছে। জানি না এটাও সঠিক কিনা আমি আবার একটু কম বুঝা আর খুতখুতে স্বভাবের মানুষ তাই মাঝে মাঝে মনে হয় নাহ বড় দাদা আমাদের রংপুর অঞ্চলের জন্য এই একটি বাঁধ দিয়েই মোটেও ক্ষান্ত হওয়ার কথা নয়। তাই যারা আমার লেখাটি পড়বেন দয়া করে জানা থাকলে আওয়াজ দিয়েন, আর কোথায় কোথায় দাদারা আমাদের জন্য কষ্ট করে বাঁধ দিয়েছেন অন্য কিছু নয় দাদাদের একটু কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতাম।
ওহহো আরও একটা উপকার অবশ্য দাদারা করেছে নদীটার পানি বন্ধ করার আগে । একবার হঠাৎ করে মাছের লেজের মধ্যে কি যেন রোগের সৃষ্টি হল সব সাটি (টাকি), চেং অর্থাৎ আমাদের এলাকার দেশি মাছের লেজটা দেখে মনে হয় যেন সাপে কামড় দিয়েছে। অনেকে এলাকার ময়মুরুব্বিরা বলে এটাও নাকি দাদাদের কারিশমা। আমি কিন্তু এটাও সত্যি সত্যি জানি না এটা দাদাদের কারিশমা কিনা। জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন। সঠিক তথ্য পেলে দাদাদের অন্তত একবার হলেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতাম, তবে কৃতজ্ঞতার ধরনটা কিন্তু আমার অন্য রকম (অপ্রকাশযোগ্য)। সবশেষে আপনাদের সবাইকে সৈয়দপুর আসার আহ্বান রাখছি, সাথে নাপা শাক ও আলুর ভর্তার দাওয়াত রইল।
বিষয়: সাহিত্য
১৪১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন