বিবাহে প্রচলিত কু-প্রথা যা পরিত্যাগ করা জরুরী
লিখেছেন লিখেছেন প্রিন্সিপাল ২৯ জানুয়ারি, ২০১৪, ১২:২৭:৩৫ দুপুর
বিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিবাহ করা নবীগণের (আলাহিসসালাতু আসসালাম) সুন্নাত।
রাসুল(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
যে বাক্তি বিয়ে করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিয়ে করে না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। (দারিমী-কিতাবুন নিকাহ)
ইমাম রাগিব বলেনঃ
বিয়েকে দুর্গ বলা হয়েছে,কেননা(বিয়ে) স্বামী-স্ত্রী উভয়কে সকল প্রকার লজ্জাজনক কাজ থেকে দুর্গবাসীদের মতোয় বাচিয়ে রাখে। (মুফরাদাত)
তবে এই পবিত্র কর্ম পালন করতে গিয়ে মাঝে মাঝে কিছু কু-প্রথা মানা হয়।যা কিনা অনুচিত।আসুন নবীগণের(আলাহিসসালাতু আসসালাম) এই সুন্নাত কে সুন্নাত তরীকায় পালন করি।
বিবাহে প্রচলিত কু-প্রথা:
১.চন্দ্র বর্ষের কোন মাসে বা কোন দিনে অথবা বর/কনের জন্ম তারিখে বা তাদের পূর্ব পুরুষের মৃত্যুর তারিখে বিবাহ শাদী হওয়া অথবা যে কোন শুভ সৎ কাজ করার জন্য ইসলামী শারী’য়াতে বা ইসলামী দিন তারিখের কোন বিধি নিষেধ নেয়। বরং উপরিউক্ত কাজগুলো বিশেষ কোন মাসে বা যে কোন দিনে করা যাবে না মনে করাই গুনাহ।
২.বিবাহ উৎসবে অথবা অন্য যে কোন উৎসবে পটকা-আতশবাজি ফুটান,অতিরিক্ত আলোকসজ্জা করা, রংবাজী করা বা রঙ দেওয়ার ছড়াছড়ি ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ ও অপচয়।
আল্লাহু-তা’য়ালা বলেনঃ
“নিশ্চয় অপচয়কারী শয়তানের ভাই। আর শয়তান হচ্ছে তার প্রভুর প্রতি বড় অকৃতজ্ঞ।” (বানী ইসরাঈল-২৭)
৩.বাঁশের কুলায় চন্দন,মেহদি,হলুদ,কিছু ধান-দূর্বা ঘাস কিছু কলা, সিঁদুর ও মাটির চাটি নেওয়া হয়।মাটির চাটিতে তেল নিয়ে আগুন জ্বালানো হয়। স্ত্রী ও বরের কপালে তিনবার হলুদ লাগায় এমনকি মূর্তিপূজার ন্যায় কুলাতে রাখা আগুন জ্বালানো চাটি বর-কনের মুখের সামনে ধরা হয় ও আগুনের ধুঁয়া ও কুলা হেলিয়ে-দুলিয়ে বাতাস দেওয়া হয়। এসব হিন্দুয়ানী প্রথা ও অনৈসলামিক কাজ।
৪.বরের আত্মীয়রা কনেকে কোলে তুলে বাসর ঘর পর্যন্ত পৌছে দেওয়া অথবা বরের কোলে করে মুরুব্বীদের সামনে স্ত্রীর বাসর ঘরে গমনের নীতি একটি বেহায়াপনা, নিরলজ্জতা ও অনৈসলামিক কাজ।
৫.বরের ভাবী ও অন্য যুবতী মেয়েরা বরকে সমস্ত শরীরে হলুদ মাখিয়ে গোসল করিয়ে দেওয়া নির্লজ্জ কাজ যা ইসলাম সমর্থন করে না।
৬.বর ও কনেকে হলুদ বা গোসল করতে নিয়ে যাওয়ার সময় মাথার উপর বড় চাদর এর চার কোনা চার জনের ধরা হিন্দুয়ানী প্রথা।
৭.বিবাহ করতে যাওয়ার সময় বরকে পিড়িতে বসিয়ে বা সিল-পাটাই দাড় করিয়ে দই-ভাত খাওয়ান ইসলামিক প্রথা নয়।
৮.বিবাহ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর বরকে দাড় করিয়ে সালাম দেওয়ানোর প্রথা রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার সাহাবীদের (রাযি আল্লাহু আনহুম) দ্বারা প্রমানিত নয়।
৯.বর ও কনের মুরুব্বীদের কদমবুসি করা একটি মারাত্মক কু-প্রথা। বিয়ে তো নয় এমনকি যে কোন সময় কদমবুসি করা রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার সাহাবীদের (রাযি আল্লাহু আনহুম) দ্বারা কোন কালে প্রমানিত নয়। কদমবুসি করার সময় সালাতের রুকু-সিজদার মত অবস্থা হয়। বেশি সম্মান প্রদর্শন করতে গিয়ে হিন্দুয়ানী প্রণামকে প্রথা হিসেবে নিয়ে আসা মুমিনদের বৈশিষ্ট্য নয়।
হে আল্লাহ! দয়া করে আমাদের তুমি সুন্নাত তরীকায় বিবাহ করার তওফিক দিয়।আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১৬২১ বার পঠিত, ৩৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
আাবর এটাও ঠিক না যে, দেবমোহর পরিশোধ না করা।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
বিয়ে নিজ এলাকায় ব্যাবস্থা করা।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
=> আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিয়ের সময় উকিল বাপ (বাবা)দেওয়া হয়...এটা কি ইসলাম সম্মত নাকি সামাজিক বদ-রীতি?
=> বিয়ের সময় বরের সক্ষমতার বাইরে মোহরানা ধার্য্য করা হয়...এটা কি ইসলাম সম্মত না সামাজিক বদ-রীতি?
=> বরযাত্রীর নামে কনে পক্ষের উপর চাপিয়ে দেওয়া অনুষ্ঠান কি ইসলাম সম্মত নাকি সামাজিক বদ-রীতি?
আমার জানা মতে এটা ঠিক না।
বিয়ের সময় বরের সক্ষমতার বাইরে মোহরানা ধার্য্য করা হয়...এটা কি ইসলাম সম্মত না সামাজিক বদ-রীতি?
আমার জানা মতে যদি মোহর ধার্য না করেই বিবাহের কার্য সম্পাদন করা হয়, সেক্ষেত্রে উল্লেখিত ব্যবস্থাটা গ্রহণ করা হয়।
তবে সর্ব ক্ষেত্রে তা করাটা শরীয়ত সম্মত না।
বরযাত্রীর নামে কনে পক্ষের উপর চাপিয়ে দেওয়া অনুষ্ঠান কি ইসলাম সম্মত নাকি সামাজিক বদ-রীতি?
না, এটা তার উপর অত্যাচার করার শামীল।
ভালো লাগলো আপনাকে
ধন্যবাদ
||
আল্লাহ তায়ালা তাওফীক দান করুন, আমরা যেন সে জন্য কাজ করতে পারি।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন