অন্য ধর্মে নারী কর্তৃক মান্নত, আর দেখুন ইসলাম কি বলে?
লিখেছেন লিখেছেন প্রিন্সিপাল ২৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ১২:২০:৩২ দুপুর
বাইবেল অনুযায়ী আল্লাহর পথে যে কোন মান্নত পুরন করা আবশ্যক। মান্নত করার পর তা আদায় করতে টালবাহানা করা বাঞ্চনীয় নয়। কিন্তু, নারীদের নিজ ইচ্ছায় মান্নত করা বৈধ নয়; বরং অবিবাহিতা হলে পিতা আর বিবাহিতা হলে স্বামীর অনুমোদন লাগবে। তারা যদি অনুমোদন না দেয়, তাহলে তারা মান্নতই করে নাই বলে গণ্য হবে। বাইবেলের ভাষ্য অনুযায়ী "কোন পুরুষ যদি আল্লাহর নামে মান্নত করে বা কসম করে তাহলে তার মুখের কথা অনুযায়ী তা পূর্ণ করা আবশ্যক। কিন্তু,মহিলারা যদি আল্লাহর নামে মান্নত করে এবং তার পিতা (পিত্রালয়ে থাকার সময়) তা শুনে চুপ করে থাকে তাহলে,সে মান্নত পূর্ণ করা আবশ্যক হবে। মান্নতের কথা শ্রবনের দিন পিতা যদি নিষেধ করে তাহলে,তার মান্নতসমূহ পুরণ করার কোন অধিকার থাকবে না; বরং তা প্রত্যাখ্যাত হবে। যদি সে তার স্বামীর জন্য বা অন্য কোন কারণে মান্নত করে থাকে, স্বামী তা শুনে চুপ থাকলেই তা অনুমোদিত হবে; অন্যথায় তা প্রত্যাখ্যাত হবে"। (নং:৩০/২-১৫)
কেন মান্নত করার সময় নারীর কথা গৃহীত হবে না? উত্তর খুবই সংক্ষেপ: সে বিবাহের পুর্বে পিতার মালিকানাধীন আর বিবাহের পরে স্বামীর। এ মালিকানা পিতাকে নিজ কন্যাকে বিক্রি করার অধিকার পর্যন্ত দিয়ে দেয়। পিতা চাইলে কন্যাকে বিক্রি করতে পারে এ অধিকার তার আছে। আর ইহুদী পন্ডিতরা বলে থাকে, পিতা তার কন্যাকে বিক্রি করতে পারে কিন্তু,মা তার কন্যাকে বিক্রি করতে পারবে না। পিতা তার কন্যাকে বিবাহ দেয়ার জন্য কাউকে প্রস্তাব দিতে পারে কিন্তু,মা সেটা পারে না"।
ইহুদী পন্ডিতরা আরও পরিস্কার করে বলেছেন যে, কোন মহিলা বিবাহ করার পর তার স্বামীর পূর্ণ মালিকানায় স্থানান্তরিত হয়। তাদের মতে- " বিবাহ মহিলাকে তার স্বামীর মালিকানাধীন বানিয়ে দেয় যা কখনো নষ্ট হবার নয়"।
তাই কোন মহিলার উচিত নয় তার মালিকের বিনা অনুমতিতে কোন কিছুর প্রতিশ্রুতি বা প্রতিজ্ঞা করা।
ইহুদী ও খৃষ্টান ধর্ম বিশ্বাসের এ অবস্থান নারীদের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলেছে, বর্তমান শতাব্দীর প্রথম ভাগ পর্যন্ত। পশ্চিমা বিশ্বে বিবাহিতা মহিলারা যাই করতে চেয়েছে তার কোন বৈধতা ছিল না। তাদের স্বামীদের অধিকার ছিল স্ত্রী যে কোন চুক্তি করলে তারা তা বাতিল করতে পারবে। ইহুদী ও খৃষ্টান সমাজে স্ত্রী কোন কিছু করার ব্যাপারে স্বাধীন নয়। কেননা, তারা অন্যের মালিকানাধিন পণ্যের মত। পশ্চিমা মহিলারা প্রায় দুই হাজার বছর পর্যন্ত পিতা ও স্বামীর অধিকারে থাকার কারণে পরাধীনতার দুঃসহ যন্ত্রণায় ভূগেছে।
ইসলামে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবার অধিকার আছে স্বেচ্ছায় মান্নত করার। তার ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি থেকে দূরে থাকতে বাধ্য করার নৈতিক অধিকার কারো নেই। পুরুষ বা নারী যদি কোন কারণে ওয়াদা পুরণে ব্যর্থ হয় তাহলে, তার জন্য কাফফারা বা প্রায়শ্চিত্য প্রদান করা আবশ্যক।
কুরআনে এসেছে-
আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; বরং পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্য যা তোমরা মজবুত করে রাখ। অতএব,এর কাফফারা হচ্ছে, দশজন দরিদ্রকে খাদ্য দান করবে; মধ্যম শ্রেণীর খাদ্য যা তোমরা তোমাদের পরিবারকে দিয়ে থাক। অথবা তাদেরকে বস্ত্র প্রদান করবে কিংবা একজন ক্রীতদাস মুক্ত করবে। যে ব্যক্তি সামর্থ রাখে না সে তিনদিন রোজা রাখবে। এটা তোমাদের শপথের কাফফারা যখন তোমরা শপথ কর। তোমরা তোমাদের কৃত শপথসমূহকে রক্ষা কর। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন,যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।(সূরা মায়েদাহঃ ৮৯)
স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে মু'মিন পুরুষ ও নারীরা আনুগত্য ও আল্লাহর ইবাদতের ব্যাপারে বায়আত বা অঙ্গীকার করত। নারীরা ও ছিল পুরুষের সমানে সমান। (সূরা মুমতাহিনাঃ ১২ দেখুন) এমনকি কোন পুরুষের অধিকার নেই স্ত্রী বা কন্যার পক্ষ থেকে নিজে শপথ করবে বা তারা শপথ করলে তা প্রত্যাখ্যান করবে।
আল্লাহ তায়ালা নারীদেরকে যে মর্যাদা দান করেছেন, সে মর্যাদাটুকু যেন তারা ঠিক পন্থায় অর্জন করতে পারে, আমরা সেই প্রার্থানাই তাঁর নিকট করি।
বিষয়: বিবিধ
১৫৮৬ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বিস্তারিত পড়ুন....
Click this link
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ও আমাদের সবাইকে কবূল করুন।
ভালো লাগ্লো...
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর দ্বীনকে আকঁড়ে ধরার তাওফীক দান করুন।
আপনাকে ধন্যবাদ।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে শুকরিয়া করার তাওফীক দান করুন। আমীন
অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন