ইসলাম ও অন্য ধর্মে নারী শিক্ষা
লিখেছেন লিখেছেন প্রিন্সিপাল ২৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:৫৪:৫৭ রাত
উল্লেখিত বিষয়ের সামান্য কিছু তুলে ধরা হলো:
তাওরাত ও কুরআনে বর্ণিত নারীদের চিত্রের মধ্যে যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে তা শুধুমাত্র নবজাতক কন্যা সন্তানের বেলায়ই সীমাবদ্ধ নয় বরং এ পার্থক্য জন্মের পরেও চলমান থাকে। এখন আমরা নারী শিক্ষা নিয়ে কুরআন ও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ নিয়ে তুলনামুলক আলোচনা করব।
ইহুদীদের মৌলিক ধর্মগ্রন্থ হচ্ছে তাওরাত। তাওরাতে এসেছে- " নারীদের তাওরাত পড়ার কোন অধিকার নেই। জনৈক ইহুদী পন্ডিত এ কথাটাকে আরও স্পষ্ট করে দিয়ে বলেছেন: "মহিলারা তাওরাত পড়ার চেয়ে তাওরাতকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা উত্তম।" এ ছাড়াও এসেছে " কোন পুরুষের অধিকার নেই তার কন্যা সন্তানকে তাওরাত শিক্ষাদানের"।
পোল নতুন নিয়মে (new testament) বলেছেন: "তোমাদের স্ত্রীরা গীর্জার ভিতরে চুপ করে থাকবে। কেননা গীর্জার ভিতর কথাবার্তা বলার কোন অধিকার তাদের নেই। এমনকি আইন যা বলবে তাকে বিনা প্রশ্নে নতশীরে মেনে নিবে। তবে যদি তারা কোন কিছু শিক্ষা গ্রহণ করতে চায় তাহলে, তা শিখবে বাড়ীতে নিজ নিজ স্বামীর কাছ থেকে। কারণ,গীর্জার মধ্যে নারীদের কথা বলা অত্যন্ত জঘন্য কাজ"। (১ করিনথিয়ান্সঃ ১৪/৩৪-৩৫)
নারীদের যদি কথা বলার কোন অনুমতি না থাকে, তাহলে তারা কিভাবে শিক্ষা গ্রহণ করবে? যদি কোন কিছু বাধ্যতামুলক ভাবে মেনে নিতে হয় তাহলে, তাদের চিন্তার বিকাশ ঘটবে কিভাবে? যদি একমাত্র স্বামীই হয় তার শিক্ষা গ্রহণের অবলম্বন তাহলে কিভাবে তারা বেশী বেশী জ্ঞানার্জন করবে? ন্যায় বিচার করতে গেলে অবশ্যই আমাকে প্রশ্ন করতে হবে যে, ইসলাম কি তার চেয়ে বিপরীত?
কুরআন শরীফে হযরত খাওলা রা. সংক্রান্ত একটা ঘটনা এসেছে সেখানে উক্ত বিষয় গুলোকে অত্যন্ত সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে। তার স্বামী আওস রা. রাগের বশঃবর্তী হয়ে বলেছিলেন: " তুমি আমার কাছে আমার মায়ের মত হারাম।" এ কথাটা ইসলাম পূর্ব যুগে আরব সমাজে তালাক ও বিবাহ বিচ্ছেদ হিসেবে ব্যবহৃত হত। কিন্তু, স্ত্রীকে অন্যত্র বিবাহ বসা বা স্বামীর বাড়ী ত্যাগ করার অনুমতি ছিল না। খাওলা রা. স্বামীর মুখে এ ধরণের কথা শুনে অত্যন্ত চিন্তিত হলেন। সরাসরি চলে গেলেন বিশ্বনবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ঘটনা বর্ণনা করতে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এহেন পরিস্থিতিতে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে কোন সমাধান না থাকায় ধৈর্য ধারণের পরামর্শ দিলেন। কিন্তু খাওলা রা. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে এটা নিয়ে বাদানুবাদ করতে থাকলেন নিজেদের বিবাহ বন্ধন অক্ষুন্ন রাখার মানসে। এমতাবস্থায় আল্লাহ তায়ালা কুরআনের আয়াত নাযিল করে তার সমস্যার সমাধান দিয়ে এ ধরণের প্রথাকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন। এ সময় সূরা মুজাদালাহ নাযিল হয়। আল্লাহ বলেন:
অর্থাৎ, যে নারী তার স্বামীর বিষয়ে আপনার সাথে বাদানুবাদ করছে এবং অভিযোগ পেশ করছে আল্লাহ তায়ালার দরবারে। আল্লাহ তায়ালা তার কথা শুনেছেন। আল্লাহ আপনাদের উভয়ের কথাবার্তা শুনেন। নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা সর্বশ্রোতা,সর্বদ্রষ্টা। (সূরা আল মুজাদালাহ: ১)
কুরআন নারীকে অধিকার দেয় স্বয়ং আল্লাহর নবীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাথে বাদানুবাদ করার। তাদেরকে চুপ করিয়ে রাখার অধিকার কারো নেই। নারীকে এতেও বাধ্য করা হয়নি যে, তার একমাত্র শিক্ষাগ্রহণস্থল হবে তার স্বামী।
আল্লাহ তায়ালা নারীদেরকে যে মর্যাদা দান করেছেন, সে মর্যাদাটুকু যেন তারা ঠিক পন্থায় অর্জন করতে পারে, আমরা সেই প্রার্থানাই তাঁর নিকট করি।
বিষয়: বিবিধ
১৩৮২ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ তায়ালা ভাই আব্দুল্লাহ শাহীনকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন
একমাত্র ইসলামই হল মানবতার মুক্তির দূত।
অথচ এরাই আবার নারী স্বাধীনতার কথা বলে????
এক মুখে দুই কথা।
আসলে এরা চায় নারীকে পণ্য বানাতে আর হতভাগা নারীরাও তা বোঝেনা।
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে জাজায়ে খায়ের দান করুন। আমীন
ওরা আসলে নারীদের জন্য কি করেছে? ওরা শুধু নারীদেরকে ঘর থেকে বাহির করে পণ্য হিসেবে ব্যবহারই করেছে।
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন। আমীন।
গোলাপ ফুলটি উপহার দেয়ার জন্য আবার ধন্যবাদ।
৮৫.) এ আনুগত্য (ইসলাম) ছাড়া যে ব্যক্তি অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে চায় তার সে পদ্ধতি কখনোই গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে হবে ব্যর্থ, আশাহত ও বঞ্চিত। সুরা আল এমরান ।
ভাই আমি মুসাফিরকে অনেক ধন্যবাদ।
ইসলামে যেন ভেজাল না ঢুকতে পারে, সেই জন্যই বিদয়াত থেকে সর্বদায় সাবধান থাকতে বলা হয়েছে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন