অনেক পুরানো একটি কবিতা (কবর), ভাল লাগবে বলে আশা রাখি

লিখেছেন লিখেছেন প্রিন্সিপাল ২১ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:৫৩:২৩ দুপুর

কবর

- জসীমউদ্দীন আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে সাম্মানি করুন। আমীন

এই খানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে,

তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।

এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,

পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।

এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,

সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া দিল কারা!

সোনালি ঊষার সোনামুখ তার আমার নয়নে ভরি

লাঙল লইয়া খেতে ছুটিলাম গাঁয়ের ও-পথ ধরি।

যাইবার কালে ফিরে ফিরে তারে দেখে লইতাম কত

এ কথা লইয়া ভাবি-সাব মোরে তামাশা করিত শত।

এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে

ছোট-খাট তার হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।

বাপের বাড়িতে যাইবার কাল কহিত ধরিয়া পা

আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু উজান-তলীর গাঁ।

শাপলার হাটে তরমুজ বেচি পয়সা করি দেড়ী,

পুঁতির মালার একছড়া নিতে কখনও হত না দেরি।

দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,

সন্ধাবেলায় ছুটে যাইতাম শ্বশুরবাড়ির বাটে!

হেস না হেস না শোন দাদু, সেই তামাক মাজন পেয়ে,

দাদি যে তোমার কত খুশি হত দেখিতিস যদি চেয়ে!

নথ নেড়ে নেড়ে কহিত হাসিয়া, এতদিন পরে এলে,

পথ পানে চেয়ে আমি যে হেথায় কেঁদে মরি আঁখিজলে।

আমারে ছাড়িয়া এত ব্যথা যার কেমন করিয়া হায়,

কবর দেশেতে ঘুমায়ে রয়েছে নিঝঝুম নিরালায়!

হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়,

আমার দাদীর তরেতে যেন গো ভেস্ত নসিব হয়।

তারপর এই শূন্য জীবনে যত কাটিয়াছি পাড়ি

যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।

শত কাফনের, শত কবরের অঙ্ক হৃদয়ে আঁকি,

গণিয়া গণিয়া ভুল করে গণি সারা দিনরাত জাগি।

এই মোর হাতে কোদাল ধরিয়া কঠিন মাটির তলে,

গাড়িয়া দিয়াছি কত সোনামুখ নাওয়ায়ে চোখের জলে।

মাটিরে আমি যে বড় ভালবাসি,মাটিতে মিশায়ে বুক,

আয়-আয় দাদু, গলাগলি ধরি কেঁদে যদি হয় সুখ।

এইখানে তোর বাপজি ঘুমায়, এইখানে তোর মা,

কাঁদছিস তুই? কী করিব দাদু! পরাণ যে মানে না।

সেই ফালগুনে বাপ তোর এসে কহিল আমারে ডাকি,

বা-জান, আমার শরীরআজিকে কী যে করে থাকি থাকি।

ঘরের মেঝেতে সপটি বিছায়ে কহিলাম বাছা শোও,

সেই শোওয়া তার শেষ শোওয়া হবে তাহা কী জানিত কেউ?

গোরের কাফনে সাজায়ে তাহারে চলিলাম যবে বয়ে,

তুমি যে কহিলা বা-জানরে মোর কোথা যাও দাদু লয়ে?

তোমার কথার উত্তর দিতে কথা থেমে গেলমুখে,

সারা দুনিয়ার যত ভাষা আছে কেঁদে ফিরে গেল দুখে!

তোমার বাপের লাঙল-জোয়ালদুহাতে জঢ়ায়ে ধরি,

তোমার মায়ে যে কতই কাঁদিতে সারা দিনমান ভরি।

গাছের পাতার সেই বেদনায়বুনো পথে যেতো ঝরে,

ফালগুনী হাওয়া কাঁদিয়া উঠিত শুনো- মাঠখানি ভরে।

পথ দিয়া যেতে গেঁয়ো পথিকেরা মুছিয়া যাইত চোখ,

চরণে তাদের কাঁদিয়া উঠিত গাছের পাতার শোক।

আথালে দুইটি জোয়ান বলদ সারা মাঠ পানে চাহি,

হাম্বা রবেতে বুক ফাটাইত নয়নের জলে নাহি।

গলাটি তাদের জড়ায়ে ধরিয়া কাঁদিত তোমার মা,

চোখের জলের গহীন সায়রে ডুবায়ে সকল গাঁ।

ঊদাসিনী সেই পল্লী-বালার নয়নের জল বুঝি,

কবর দেশের আন্ধারে ঘরে পথ পেয়েছিল খুজি।

তাই জীবনের প্রথম বেলায় ডাকিয়া আনিল সাঁঝ,

হায় অভাগিনী আপনি পরিল মরণ-বিষের তাজ।

মরিবার কালে তোরে কাছে ডেকে কহিল, বাছারে যাই,

বড় ব্যথা র’ল, দুনিয়াতে তোর মা বলিতে কেহ নাই;

দুলাল আমার, যাদুরে আমার, লক্ষী আমার ওরে,

কত ব্যথা মোর আমি জানি বাছা ছাড়িয়া যাইতে তোরে।

ফোঁটায় ফোঁটায় দুইটি গন্ড ভিজায়ে নয়ন¬ জলে,

কী জানি আশিস করে গেল তোরে মরণব্যথার ছলে।

ক্ষণপরে মোরে ডাকিয়া কহিল আমার কবর গায়

স্বামীর মাথার মাথালখানিরে ঝুলাইয়া দিও বায়।

সেই যে মাথাল পচিয়া গলিয়া মিশেছে মাটির সনে,

পরাণেরব্যথা মরে নাকো সে যে কেঁদে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে।

জোড়মানিকেরা ঘুমায়ে রয়েছে এইখানে তরু¬ ছায়,

গাছের শাখারা স্নেহের মায়ায়লুটায়ে পড়েছে গায়।

জোনকিমেয়েরা সারারাত জাগি জ্বালাইয়া দেয় আলো,

ঝিঁঝিরা বাজায় ঘুমের নূপুর কত যেন বেসে ভালো।

হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, রহমান খোদা!

আয়; ভেস্ত নসিব করিও আজিকে আমার বাপ ও মায়!

এখানে তোর বুজির কবর, পরীর মতন মেয়ে,

বিয়ে দিয়েছিনু কাজিদের বাড়ি বনিয়াদি ঘর পেয়ে।

এত আদরের বুজিরে তাহারা ভালবাসিত না মোটে,

হাতেতে যদিও না মারিত তারে শত যে মারিত ঠোঁটে।

খবরের পর খবর পাঠাত, দাদু যেন কাল এসে

দুদিনের তরে নিয়ে যায় মোরে বাপের বাড়ির দেশে।

শ্বশুর তাহার কশাই চামার,চাহে কি ছাড়িয়া দিতে

অনেক কহিয়া সেবার তাহারে আনিলাম এক শীতে।

সেই সোনামুখ মলিন হয়েছে ফোটে না সেথায় হাসি,

কালো দুটি চোখে রহিয়া রহিয়া অশ্রু উঠিছে ভাসি।

বাপের মায়ের কবরে বসিয়া কাঁদিয়া কাটাত দিন,

কে জানিত হায়, তাহারও পরাণে বাজিবে মরণ¬ বীণ!

কী জানি পচানো জ্বরেতে ধরিল আর উঠিল না ফিরে,

এইখানে তারে কবর দিয়েছি দেখে যাও দাদু! ধীরে।

ব্যথাতুরা সেই হতভাগিনীরে বাসে নাই কেহ ভালো,

কবরে তাহার জড়ায়ে রয়েছে বুনো ঘাসগুলি কালো।

বনের ঘুঘুরা উহু উহু করি কেঁদে মরে রাতদিন,

পাতায় পাতায় কেঁপে উঠে যেন তারি বেদনার বীণ।

হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা!দয়াময়।

আমার বুজীর তরেতে যেন গো ভেস্ত নসিব হয়।

হেথায় ঘুমায় তোর ছোট ফুপু, সাত বছরের মেয়ে,

রামধনু বুঝি নেমে এসেছিল ভেস্তের দ্বার বেয়ে।

ছোট বয়সেই মায়েরে হারায়ে কী জানি ভাবিত সদা,

অতটুকু বুকে লুকাইয়াছিল কে জানিত কত ব্যথা!

ফুলের মতন মুখখানি তার দেখিতাম যবে চেয়ে,

তোমার দাদির ছবিখানি মোর হদয়ে উঠিত ছেয়ে।

বুকেতে তাহারে জড়ায়ে ধরিয়া কেঁদে হইতাম সারা,

রঙিন সাঁঝেরে ধুয়ে মুছে দিত মোদের চোখের ধারা।

একদিন গেনু গজনার হাটে তাহারে রাখিয়া ঘরে,

ফিরে এসে দেখি সোনার প্রতিমা লুটায় পথের পরে।

সেই সোনামুখ গোলগাল হাত সকলি তেমন আছে।

কী জানি সাপের দংশন পেয়ে মা আমার চলে গেছে।

আপন হস্তে সোনার প্রতিমা কবরে দিলাম গাড়ি,

দাদু! ধরধর বুক ফেটে যায়, আর বুঝি নাহি পারি।ৎ

এইখানে এই কবরের পাশে আরও কাছে আয় দাদু,

কথা কস নাকো, জাগিয়া উটিবে ঘুম¬ ভোলা মোর যাদু।

আস্তে আস্তে খুঁড়ে দেখ দেখি কঠিন মাটির তলে,

দীন দুনিয়ার ভেস্ত আমার ঘুমায় কিসের ছলে !

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কবিতাটি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার তাওফীক দান করুন। আমীন

বিষয়: বিবিধ

২৮৭১ বার পঠিত, ৪৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

165383
২১ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:০৯
আহমদ মুসা লিখেছেন : আমার স্মরণ যদি ঠিক হয় সম্ভবত কবিতাটি ডিগ্রী পাসকোর্সে বাংলা সাহিত্যের বইতে পড়েছিলাম। কবি জসিম উদ্দিনের এই কবিতাটি আমি বেশ কয়েকবার পড়েছিলাম। এখন এত সুন্দর কবিতাটি সিলেবাসে আছে কিনা জানি।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৫
119575
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : ধন্যবাদ আহম মূসা ভাই, আপনাকে আরেকটু সহযোগিতা করতে পারি, তার আগে এই কবিতাটি এসএসসির পাঠ্য ছিল। সেই বইয়ের একটি ছিন্ন কপি এখনো আমার ব্যক্তিগত জাদুঘরে সয়রক্ষিত আছে।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০০
119634
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
165388
২১ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:১৭
ইমরান ভাই লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ Rose Rose
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০০
119635
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
165389
২১ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৩০
সায়েম খান লিখেছেন : আমার প্রিয় কবিতাগুলোর একটি
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০১
119637
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
165394
২১ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৪
আবু নাইম লিখেছেন : কবিতাটি আগে পড়েছিলাম.. কিন্তু আজকের পুরোটা পড়ে মনে হল অনেক কিছু নতুন লাগল.....
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০০
119636
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
165399
২১ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৫২
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ কবিতাটি শেয়ার করার জন্য। এ কবিতাটিকে আমার একটি বিশেষ স্মৃতি সেটা হলো তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময় (সালটা সম্ভবত ১৯৭৯-৮০ এর দিকে হবে) স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এই কবিতাটি আবৃতি করে একটি কাঁচের গ্লাস উপহার পেয়েছিলাম।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৩
119638
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : পুরষ্কার ছোট কি বড় তা দেখার বিষয় না। তবে আপনি যে শিশু কাল থেকে নিজের প্রতিভাকে ফুটাতে পেরেছিলেন, তা প্রতীয়মান হল আপনার শিশুকালের ইতিহাস থেকেই।
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে আরো সম্মানিত করুন। আমীন।
165401
২১ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:১২
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ভালো লাগলো
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৩
119639
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
165414
২১ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৬
শহীদ ভাই লিখেছেন : কবিতাটি আমার খুব প্রিয়।
এখনও মাঝে মধ্যে আবৃতি করে শুনাই অনেক জনকে।
আপনার অনেক ভুল আছে।
অনেক অংশ বাদ পড়েছে।
সম্পুর্ণ কবিতাটি নিচে দেখুন:

এই খানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।
এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,
সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া দিল কারা!
সোনালি ঊষার সোনামুখ তার আমার নয়নে ভরি
লাঙল লইয়া খেতে ছুটিলাম গাঁয়ের ও-পথ ধরি।
যাইবার কালে ফিরে ফিরে তারে দেখে লইতাম কত
এ কথা লইয়া ভাবি-সাব মোরে তামাশা করিত শত।
এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে
ছোট-খাট তার হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।

বাপের বাড়িতে যাইবার কাল কহিত ধরিয়া পা
আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু উজান-তলীর গাঁ।
শাপলার হাটে তরমুজ বেচি পয়সা করি দেড়ী,
পুঁতির মালার একছড়া নিতে কখনও হত না দেরি।
দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,
সন্ধাবেলায় ছুটে যাইতাম শ্বশুরবাড়ির বাটে!
হেস না­ হেস না­ শোন দাদু, সেই তামাক মাজন পেয়ে,
দাদি যে তোমার কত খুশি হত দেখিতিস যদি চেয়ে!
নথ নেড়ে নেড়ে কহিত হাসিয়া, এতদিন পরে এলে,
পথ পানে চেয়ে আমি যে হেথায় কেঁদে মরি আঁখিজলে।
আমারে ছাড়িয়া এত ব্যথা যার কেমন করিয়া হায়,
কবর দেশেতে ঘুমায়ে রয়েছে নিঝঝুম নিরালায়!
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়,
আমার দাদীর তরেতে যেন গো ভেস্ত নসিব হয়।

তারপর এই শূন্য জীবনে যত কাটিয়াছি পাড়ি
যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।
শত কাফনের, শত কবরের অঙ্ক হৃদয়ে আঁকি,
গণিয়া গণিয়া ভুল করে গণি সারা দিনরাত জাগি।
এই মোর হাতে কোদাল ধরিয়া কঠিন মাটির তলে,
গাড়িয়া দিয়াছি কত সোনামুখ নাওয়ায়ে চোখের জলে।
মাটিরে আমি যে বড় ভালবাসি, মাটিতে মিশায়ে বুক,
আয়-আয় দাদু, গলাগলি ধরি কেঁদে যদি হয় সুখ।

এইখানে তোর বাপজি ঘুমায়, এইখানে তোর মা,
কাঁদছিস তুই? কী করিব দাদু! পরাণ যে মানে না।
সেই ফালগুনে বাপ তোর এসে কহিল আমারে ডাকি,
বা-জান, আমার শরীর আজিকে কী যে করে থাকি থাকি।
ঘরের মেঝেতে সপটি বিছায়ে কহিলাম বাছা শোও,
সেই শোওয়া তার শেষ শোওয়া হবে তাহা কী জানিত কেউ?
গোরের কাফনে সাজায়ে তাহারে চলিলাম যবে বয়ে,
তুমি যে কহিলা বা-জানরে মোর কোথা যাও দাদু লয়ে?
তোমার কথার উত্তর দিতে কথা থেমে গেল মুখে,
সারা দুনিয়ার যত ভাষা আছে কেঁদে ফিরে গেল দুখে!

তোমার বাপের লাঙল-জোয়াল দুহাতে জঢ়ায়ে ধরি,
তোমার মায়ে যে কতই কাঁদিতে সারা দিনমান ভরি।
গাছের পাতার সেই বেদনায় বুনো পথে যেতো ঝরে,
ফালগুনী হাওয়া কাঁদিয়া উঠিত শুনো-মাঠখানি ভরে।
পথ দিয়া যেতে গেঁয়ো পথিকেরা মুছিয়া যাইত চোখ,
চরণে তাদের কাঁদিয়া উঠিত গাছের পাতার শোক।
আথালে দুইটি জোয়ান বলদ সারা মাঠ পানে চাহি,
হাম্বা রবেতে বুক ফাটাইত নয়নের জলে নাহি।
গলাটি তাদের জড়ায়ে ধরিয়া কাঁদিত তোমার মা,
চোখের জলের গহীন সায়রে ডুবায়ে সকল গাঁ।

ঊদাসিনী সেই পল্লী-বালার নয়নের জল বুঝি,
কবর দেশের আন্ধারে ঘরে পথ পেয়েছিল খুজি।
তাই জীবনের প্রথম বেলায় ডাকিয়া আনিল সাঁঝ,
হায় অভাগিনী আপনি পরিল মরণ-বিষের তাজ।
মরিবার কালে তোরে কাছে ডেকে কহিল, বাছারে যাই,
বড় ব্যথা র’ল, দুনিয়াতে তোর মা বলিতে কেহ নাই;
দুলাল আমার, যাদুরে আমার, লক্ষী আমার ওরে,
কত ব্যথা মোর আমি জানি বাছা ছাড়িয়া যাইতে তোরে।
ফোঁটায় ফোঁটায় দুইটি গন্ড ভিজায়ে নয়ন­জলে,
কী জানি আশিস করে গেল তোরে মরণ­ব্যথার ছলে।

ক্ষণপরে মোরে ডাকিয়া কহিল­ আমার কবর গায়
স্বামীর মাথার মাথালখানিরে ঝুলাইয়া দিও বায়।
সেই যে মাথাল পচিয়া গলিয়া মিশেছে মাটির সনে,
পরাণের ব্যথা মরে নাকো সে যে কেঁদে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে।
জোড়মানিকেরা ঘুমায়ে রয়েছে এইখানে তরু­ছায়,
গাছের শাখারা স্নেহের মায়ায় লুটায়ে পড়েছে গায়।
জোনকি­মেয়েরা সারারাত জাগি জ্বালাইয়া দেয় আলো,
ঝিঁঝিরা বাজায় ঘুমের নূপুর কত যেন বেসে ভালো।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, রহমান খোদা! আয়;
ভেস্ত নসিব করিও আজিকে আমার বাপ ও মায়!

এখানে তোর বুজির কবর, পরীর মতন মেয়ে,
বিয়ে দিয়েছিনু কাজিদের বাড়ি বনিয়াদি ঘর পেয়ে।
এত আদরের বুজিরে তাহারা ভালবাসিত না মোটে,
হাতেতে যদিও না মারিত তারে শত যে মারিত ঠোঁটে।
খবরের পর খবর পাঠাত, দাদু যেন কাল এসে
দুদিনের তরে নিয়ে যায় মোরে বাপের বাড়ির দেশে।
শ্বশুর তাহার কশাই চামার, চাহে কি ছাড়িয়া দিতে
অনেক কহিয়া সেবার তাহারে আনিলাম এক শীতে।
সেই সোনামুখ মলিন হয়েছে ফোটে না সেথায় হাসি,
কালো দুটি চোখে রহিয়া রহিয়া অশ্রু উঠিছে ভাসি।
বাপের মায়ের কবরে বসিয়া কাঁদিয়া কাটাত দিন,
কে জানিত হায়, তাহারও পরাণে বাজিবে মরণ­বীণ!
কী জানি পচানো জ্বরেতে ধরিল আর উঠিল না ফিরে,
এইখানে তারে কবর দিয়েছি দেখে যাও দাদু! ধীরে।

ব্যথাতুরা সেই হতভাগিনীরে বাসে নাই কেহ ভালো,
কবরে তাহার জড়ায়ে রয়েছে বুনো ঘাসগুলি কালো।
বনের ঘুঘুরা উহু উহু করি কেঁদে মরে রাতদিন,
পাতায় পাতায় কেঁপে উঠে যেন তারি বেদনার বীণ।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়।
আমার বু­জীর তরেতে যেন গো ভেস্ত নসিব হয়।

হেথায় ঘুমায় তোর ছোট ফুপু, সাত বছরের মেয়ে,
রামধনু বুঝি নেমে এসেছিল ভেস্তের দ্বার বেয়ে।
ছোট বয়সেই মায়েরে হারায়ে কী জানি ভাবিত সদা,
অতটুকু বুকে লুকাইয়াছিল কে জানিত কত ব্যথা!
ফুলের মতন মুখখানি তার দেখিতাম যবে চেয়ে,
তোমার দাদির ছবিখানি মোর হদয়ে উঠিত ছেয়ে।
বুকেতে তাহারে জড়ায়ে ধরিয়া কেঁদে হইতাম সারা,
রঙিন সাঁঝেরে ধুয়ে মুছে দিত মোদের চোখের ধারা।

একদিন গেনু গজনার হাটে তাহারে রাখিয়া ঘরে,
ফিরে এসে দেখি সোনার প্রতিমা লুটায় পথের পরে।
সেই সোনামুখ গোলগাল হাত সকলি তেমন আছে।
কী জানি সাপের দংশন পেয়ে মা আমার চলে গেছে।
আপন হস্তে সোনার প্রতিমা কবরে দিলাম গাড়ি,
দাদু! ধর­ধর­ বুক ফেটে যায়, আর বুঝি নাহি পারি।
এইখানে এই কবরের পাশে আরও কাছে আয় দাদু,
কথা কস নাকো, জাগিয়া উটিবে ঘুম­ভোলা মোর যাদু।
আস্তে আস্তে খুঁড়ে দেখ দেখি কঠিন মাটির তলে,
দীন দুনিয়ার ভেস্ত আমার ঘুমায় কিসের ছলে !

ওই দূর বনে সন্ধ্যা নামিয়ে ঘন আবিরের রাগে,
অমনি করিয়া লুটায়ে পড়িতে বড় সাধ আজ জাগে।
মজিদ হইতে আযান হাঁকিছে বড় সুকরুণ সুরে,
মোর জীবনের রোজকেয়ামত ভাবিতেছি কত দূরে।
জোড়হাত দাদু মোনাজাত কর, আয় খোদা! রহমান।
ভেস্ত নসিব করিও সকল মৃত্যু­ব্যথিত প্রাণ।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৫
119640
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : সহযোগিতা করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
একটি প্রবাদ বাক্য মনে করিয়ে দিলেন:
সামানে তোর তারীফ করে সেই দুশমন
সামনে তোর ভুল ধরে সেই আপনজন।
অনেক ধন্যবাদ।
165421
২১ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:০০
শহীদ ভাই লিখেছেন : "মজিদ হইতে আযান হাঁকিছে বড় সুকরুণ সুরে,
মোর জীবনের রোজকেয়ামত ভাবিতেছি কত দূরে।"


এই লাইন দুটি যখন আবৃতি করি তখন আমার কন্ঠ বাষ্পরুদ্ধ হয়ে যায়।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৬
119641
আহমদ মুসা লিখেছেন : অনেক দিন পর শহীদ ভাই দেখা গেল। তা ভাইজান কেমন আছেন? শারিরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ্য আছেন তো?
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৬
119642
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সবাইকে ক্ষমা করুন এবং কিয়ামতে নাজাতের জন্য আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন
165459
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১২
এনামুল মামুন১৩০৫ লিখেছেন : আমার প্রিয় কবিতা= ধান্যবাদ শেয়ার করার জন্য
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৬
119643
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
১০
165480
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৮
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : কত ভালোবাসা জড়িত এই কবিতায়।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩২
119653
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : হ্যা, সত্যিকারের ভালবাসা পরিষ্ফুটিত হয়েছে।
তবে, বর্তমানে দেখা যায়, প্রথম স্ত্রী মারা গেলে মনে করে যে, ভালই হয়েছে, নতুন মিলেছে।
২০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৮:০৩
220173
নিরবে লিখেছেন : Crying Crying Crying
১১
165486
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৫
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫০
119659
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
১২
165534
২১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:০৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
এই কবিতাটি আমাদের প্রায় সকলের স্মৃতিকে সামনে নিয়ে আসে।
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৩৬
119861
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : সত্যিই ভাই।
১৩
165536
২১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:০৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই সুন্দর কবিতাটি অনেক ক্ষেত্রেই পাঠ্য থেকে বাদ পড়েছে। জসিমউদ্দিন খুব অল্প বয়সেই কবিতাটি লিখেছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকা অবস্থায়ই কবিতাটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাট্রিক এর সিলেবাস ভুক্ত হয়।
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৪০
119863
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : হ্যা, ভাই!
কবিতাটির মাঝে আমাদের হৃদয় সংস্করণের অনেক কিছু রয়েছে।
সত্যি বলতে কি, আগের দিনের কবিতাগুলিতে শিক্ষনীয় বিষয়গুলি প্রধান্য পেত।
আপনাকে ধন্যবাদ।
১৪
165551
২১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৪৯
শেখের পোলা লিখেছেন : স্যার, এই ১১৬ লাইনের কবিতাটি পাকা দাড়ি আর হাতে লাঠি নিয়ে কোমর বাঁকিয়ে নাতির ( মরহম, আবুসাঈদ)য়হাত ধরে আবৃতি অভিনয় করে স্কুলে জসীমুদ্দীন সাহেবের সোজন বাদিয়ার ঘাট জিতে ছিলাম৷ এখনও কিছু কিছি লাইন মনে আছে৷ ধন্যবাদ৷
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৩৮
119862
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : শুনে সত্যিই আনন্দেবোধ করছি।
১৫
165599
২২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৪৩
আলোর আভা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৪১
119864
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
১৬
165613
২২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:১৭
সবুজেরসিড়ি লিখেছেন : কবিতাটি আমারও খুব প্রিয় ধন্যবাদ . . .
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৪১
119865
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : কেনই হবে না, সে তো অন্তরের কথা বলে।
অনেক ধন্যবাদ।
১৭
165618
২২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৩৯
বড়মামা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৪২
119866
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
১৮
165623
২২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:০৫
গন্ধসুধা লিখেছেন : কি নিদারুনভাবে পৃথিবীতে মানুষের আগমনের চক্রটি ফুটে উঠেছে এই কবিতায়!!ধন্যবাদ।
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৪৩
119867
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : সত্যিই ভাই!
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মৃত্যুর জন্য সর্বদায় প্রস্তুত থাকার তাওফীক দান করুন। আমীন
১৯
165733
২২ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৩০
সালাহ লিখেছেন : একদিন ক্লাসে কবিতাখানি পড়ছিলাম । ক্লাসের মেয়েরা সেদিন সবাই চোখ ভিজিয়ে ফেলেছিল । আমিও একটু আবেগাক্রান্ত হয়ে গিয়েছিলাম । সেই দৃশ্য আজো আমাকে নাড়া দেয় । মনের জিনিস দেয়ার জন্য ধন্যবাদ
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৬
120042
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ভাই সালাহ!

আগের দিনের কবিতাগুলিতে সমাজ সংস্করণের শিক্ষা ছিল, ছিল মানুষ গড়ার মন্ত্র।
২০
165829
২২ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:০৫
জোবাইর চৌধুরী লিখেছেন : প্রিয় কবিতার অন্যতম একটি। ধন্যবাদ।
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৬
120043
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভাই জোবাইর চৌধুরীকে।
২১
166253
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮
সালাহ লিখেছেন : ঠিক বলেছেন প্রিন্সিপাল সাহেব । অথচ , এখনকার কবিরা শুধু প্রেমের চর্চা করে । মনে করে সব সুখ বুঝি প্রেমের মধ্যেই
৩০ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৪৩
123997
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
২২
169959
৩০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:১০
অজানা পথিক লিখেছেন : কবর পড়ে আমার এক কবি বন্ধুর একটা কবিতা মনে পড়ে গেল। আমিও তাই শেয়ার করলাম।

জসিমের সেই কবর কবিতা শুনিয়া জুরায় মন
কেমন বেদনা বুকের মাঝেতে হারালে আপন জন?
সব কিছু যার হারিয়ে গিয়েছে সেইতো বেদনা বুঝে।
আখি কোণ আজ সিক্ত হইয়া ভালবাসাটাই খোজে
এমন দুঃখিনী মাতা বেঁচে আছে আমার পাশের বাড়ি।
তাকে রেখে সব আপন মানুষ গিয়াছে দুনিয়া ছাড়ি
বৃদ্ধা সে এমন, পারেনা চলিতে ওঠেনা তাহার হাত।
হাত না পাতিলে মানুষের তরে জোটেনা দু’বেলা ভাত
খানিক জমির মালিক ছিলেন তাও নিয়ে গেছে কারি।
এ গাঁর মোড়ল জমিদার এক করেছে সেথায় বাড়ি।
তার এক জোড়া কালো ছাগি ছিল চরিত সবুজ মাঠে
ছাগির দুগ্ধ দহন করিয়া বেচিত গায়ের হাটে।
হঠাৎ করিয়া একদিন রাতে চোর এসেছিল ঘরে
ছাগিরে তাহার নিয়ে গেল আসি হাঠে বেচিবার তরে।
বৃদ্ধার এখন উপায় হবে কি,কি কারে বাঁচিবে আজ
জমিদার বাড়ি চাকর সাজিল করিল সেথায় কাজ।
একদিন কিছু ভুলের কারনে হারাতে হইলো তাহা
ভাগ্যে কিছু শাস্তি জুটিল তবে; কর্ম করেছে যাহা
কাজ নাই আর আজ কোথা তার আজ কাজে সে যে বৃথা।
ভিক্ষাই তাহার একটি পন্থা বাচিবার তরে হেথা
চলিতে চলিতে একদিন কবে হইলো আমার দেখা।
তাকে দেখে আজ হৃদয় মাজেতে জলিল অগ্নি শিখা
হায় একি সেযে চিনিলনা মোরে চাহিলনা মোর দিকে।
নষ্ট চোখে যে দেখিতে পায়না মরিতেছে ধুকে ধুকে
আন্দাজ করি পথ চলে সে যে চিনে না কাউকে আর।
জীবনের শেষ বেলায় আসিয়া মরন হইলো তার
কোথাকার এক পুকুরে পড়িয়া নিশ্বাস হইল বন্ধ।
তিন দিন সেথা পচিয়া গলিয়া লাশ হয়ে গেল গন্ধ
বিনা গোসলে কবর মাঝেতে শুয়াইয়া দিল তাকে।
এমন দুঃখির খবর কেউকি ভুল করিয়াও রাখে ???
৩০ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৪৬
124001
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : আমরা মনে হচ্ছে সেই কবি আপনিই।

পড়ে অনেক আনন্দ লাগল।
আমাদের মাঝে এমন প্রতিভাবানও আছেন ভেবে অনেক খুশী লাগল।
আল্লাহ তায়ালার নিকট আবেদন, তিনি যেন আপনার মেধাকে আরো বাড়িয়ে দেন এবং ইসলাম, মুসলিম, দেশ ও জাতির জন্য আপনাকে কবূল করে নেন। আমীন
অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।
২৩
180711
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:১৪
বিন হারুন লিখেছেন : কবি আল মাহমূদ, জসীম উদ্দীন এর মতো কবিরাই প্রকৃত কবি.

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File