মুহররম মাসে দশ তারিখে রোযা রাখার ফজিলত

লিখেছেন লিখেছেন প্রিন্সিপাল ০৪ নভেম্বর, ২০১৩, ০১:৩৬:২৮ রাত

রমজান মাসের রোযা ফরজ হওয়ার পূর্বে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মুসলামনরা আশুরা অর্থাৎ মুহররম মাসের দশ তারিখের রোযা রাখতেন। হাদীসে এসেছে:



আয়েশা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: কুরাইশ গোত্র জাহেলী যুগে আশুরার রোযা রাখতো এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও রোযা রাখতেন। অতঃপর তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদীনায় হিজরত করলেন, তখন তিনি নিজে রোযা রাখলেন এবং অন্যদের রোযা রাখার আদেশ করলেন। তার পর যখন রমযান মাসের রোযা ফরয করা হল, তখন তিনি বললেন: “ইচ্ছা হলে রোযা রাখো না হলে রাখো না”। [মুসলিম, সিয়াম, নং ২৬৩)

ইমাম নবভী বলেন: “উলামাগণ এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, আশুরার রোযা সুন্নত। ওয়াজিব (আবশ্যক) নয় “। [শারহ মুসলিম,৭-৮/২৪৫]

কারণ একাধিক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযান মাসের রোযা ফরয হওয়ার পর এই রোযার সম্পর্কে বলেছেন: “যার ইচ্ছা রোযা রাখবে আর যার ইচ্ছা রাখবে না “।

এ রোযার গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় আগমন করার পর:

ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদীনায় হিজরত করলেন, তখন ঈহুদী সম্প্রদায়কে আশুরার দিনে রোযা পালন করতে দেখলেন। তাই তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন:

“এটা এমন কোন্ দিন, যে দিনে তোমরা রোযায় আছো? তারা বললোঃ এটি একটি মহান দিন, আল্লাহ তায়ালা এই দিনে মুসা (আঃ) এবং তাঁর অনুসারীদের লোকজনকে নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফেরাউন ও তার অনুসারী লোকজনকে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। তাই মুসা (আঃ) কৃতজ্ঞতা স্বরূপ রোযা রাখেন। অতএব আমরাও রোযা করি। তার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: তাহলে তো মুসা (আঃ) এর ব্যাপারে তোমাদের তুলনায় আমরা বেশি হকদার। অতঃপর তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোযা রাখেন এবং রোযা রাখার আদেশ দেন।[মুসলিম, সিয়াম, নং ২৬৫৩ ]

অর্থাৎ ঈহুদীরা মুসা আলাইহিস সালাম এর দ্বীন ও শিক্ষাকে পরিবর্তন করে তাতে শিরক ঢুকিয়েছে আর মুসলিমরা তার প্রকৃত শিক্ষাকেই মেনে চলে, সে দিক দিয়ে মুসলিমরা ঈহুদীদের চেয়ে বেশী তার অনুসারী।

আশুরার রোযা রাখার ফযিলত:

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আশুরার রোযার ফযীলত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন

“এটা বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা। “অর্থাৎ এর মাধ্যমে বিগত এক বছরের গুনাহ ক্ষমা হয়।

আশুরার রোযা রাখার পদ্ধতি:

প্রথম পদ্ধতি: মুহররম মাসের 9, 10 ও 11 তারিখে রোযা রাখা।

দ্বিতীয় পদ্ধতি: মুহররম মাসের 9 ও 10 তারিখে রোযা রাখা।

তৃতীয় পদ্ধতি: মুহররম মাসের 10 ও 11 তারিখে রোযা রাখা।

চতুর্থ পদ্ধতি: মুহররম মাসের শুধু 9 তারিখে রোযা রাখা।

আল্লাহ তায়ালা সবাই তার অনুসরণ ও বেশী বেশী সওয়াব অর্জন করার তাওফীক দান করুন। আমীন

বিষয়: বিবিধ

১৪১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File