শসা খান, সুস্থ্য জীবন গড়ুন (প্রতি দিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে যেন ভুল না হয়)
লিখেছেন লিখেছেন প্রিন্সিপাল ০৫ জুন, ২০১৩, ১০:৩৫:৩৫ রাত
শসাকে যেমন পুষ্টিকর সবজি হিসেবে খাওয়া হয়, তেমনি ব্যবহার করা হয় রোগ নিরাময়ে।
পুষ্টি উপাদান
শসা ভিটামিন এবং মিনারেলেস পরিপূর্ণ একটি সবজি। এর ৯৬ শতাংশ পানি। শসা ভিটামিন-কে, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ, ফলিক এসিড, পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের উত্তম উৎস। এ ছাড়া রিবোফ্লাবিন, প্যান্টোথেনিক এসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সালফার, সিলিকা এবং ভিটামিন বি-৬ আছে বেশি পরিমাণে। শসা থেকে খাদ্য আঁশ পাওয়া যায়। এতে আরো রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, কিউকারবিটাকিন্স, লিগনান্স এবং ফ্লাভনয়েডস।
স্বাস্থ্য তথ্য
* শসার মাল্টি ভিটামিনস ও মাল্টি মিনারেলস প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে এবং ভিটামিন ও মিনারেলসের অভাবজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
* শসার পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
*এর ম্যাগনেসিয়াম রক্ত চলাচল সচল করে।
* শসার আঁশ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে।
* এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস; লিগনান্স হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানোসহ জরায়ু ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
ঔষধি গুণ
* শসায় প্রচুর পানি থাকে তাই, শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে মনকে প্রশান্ত করে তোলে।
* এটি মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। শরীরের জমানো ক্ষতিকর ও বিষাক্ত উপাদানগুলো অপসারণ করে রক্তকে পরিষ্কার রাখে।
* শসা বুক জ্বলা, পাকস্থলীর এসিডিটি এমনকি গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি দিতে পারে।
* প্রতিদিন শসার জুস খেলে অ্যাকজিমা এবং গাউটে উপকার পাওয়া যায়। এটি ডায়াবেটিসও কিছুটা উপশম করে।
* বাত-ব্যথা প্রশমনের জন্য শসা ও গাজর একসঙ্গে জুস বানিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
* শসার জুস কিডনি এবং গলব্লাডারের পাথর অপসারণে সহায়তা করে।
* শসা হাত ও পায়ের নখ ভাঙা প্রতিরোধ করে।
* পাইরিয়ার কারণে দাঁত ও মাড়ির রোগে শসা উপকারী।
সুরক্ষায় শসা
শসা সেই আদ্দিকাল থেকেই এদেশে। প্রায় সব ব্যস্ত এলাকায় শসাওয়ালাদের অবাধ ঘোরাফেরা। নগরবাসীও চলার পথে কাজের ফাঁকে শসাওয়ালাদের কাছেঢুঁ মারেন। পেটে ক্ষুধা, রাস্তায়জ্যাম, বাড়ি ফিরতে ঢের দেরি তো খাও শসা। শখ করে কিংবা হেলাফেলা করে যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন, শসা কিন্তু শরীরের জন্য ভারী উপকারী। এক গবেষণায়বলা হয়েছে, উচ্চ রক্তচাপে যারা ভোগেন শসা তাঁদের জন্যভালো ওষুধ। নিয়মিত শসা খেলেরক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায়ফিরে আসে। শসা ভিটামিন সি-এর খুব ভালো উৎস। খনিজ মলিব ডেনামও আছে প্রচুর পরিমাণ।এ ছাড়া শসায়আছে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফলয়েট, পাচক আঁশ এবংম্যাগনেসিয়াম। আবার সারা দিনে কাজের চাপে খাওয়া হয়ে ওঠেনি কিছুই। পুরোনো সেই গ্যাস্ট্রিকের ব্যথাটা একটু একটু করে জানান দিচ্ছে। এখানেও কিন্তু শসা। গ্যাস্ট্রিক এবংডিওডেনাল আলসারের চিকিৎসায় শসার রস খুব উপকারী। এ তো গেল রোগশোকের কথা। যারা সৌন্দর্যসচেতন শসা তাদের কাছে বাড়তি কিছু। শসার রসে আছে সিলিকন। যা ত্বকের রং ও স্বাস্থ্যউন্নত করে। তা ছাড়া এতে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক জল থাকায়দেহে জলের মাত্রা বাড়ায়যা উজ্জ্বল ত্বকের জন্য খুব জরুরি।
শসার খাদ্যগুণ
শসা গরমের সময় শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। শসার উপকারী দিক নিয়ে কয়েকটি তথ্য।
* শসা শরীরের ফাইবার ও ওয়াটার ইনটেক বাড়াতে সাহায্য করে। গরমের দিনে শসার রসের সঙ্গে সেলোরির জুস মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে বডি টেম্পারেচার নরমাল রাখতে সাহায্য করে।
* কিডনি, ইউরিনারি ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যায় ডায়েটে শসা খুবই উপকারী। শসা বা শসার রস ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যও উপকারী। * শসার রস আর্থর্্রাইটিস, এগজিমা, হার্ট, ফুসফুসের সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ডায়েটে রাখতে পারেন। গাজরের রসের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে খেতে পারেন। ইউরিক এসিড থেকে ব্যথার সমস্যা হলে অনেক কাজে দেবে। * শসা খুবই ভালো কাজ করে ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য। শসার স্লাইস ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আর শসার জুস ত্বকের ক্লান্তি কাটাতে খুবই উপকারী। মিনারেলসমৃদ্ধ শসা নখ ভালো রাখতে, দাঁত ও মাড়ির সমস্যায় সাহায্য করে। এটি খুবই উপকারী চুলের জন্য।
আল্লাহ তায়ালা সবাইকে সুস্থ্য রাখুন। আমীন
বিষয়: বিবিধ
২৬৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন