দূর করতে হবে কুসংস্কার,, আপনি কি স্বজাগ?????!!!!

লিখেছেন লিখেছেন প্রিন্সিপাল ২৭ মে, ২০১৩, ১২:৩১:৪৫ রাত



অনেক খবরে দেখা যায়, অমুকের গায়ে আল্লাহ শব্দ লিখা। তমুকের উপর কালেমা লিখা, আরো অনেক কিছু।

এগুলির সম্পর্কে:

1- অনেক সময় সত্য হয়। তবে সেটা আল্লাহর অকৌকিক কিছু কি না তা বলা মুসকিল।যদি হয়েও থাকে তা দ্বারা রুগী ভাল হবে তা বিশ্বাস করা শরীয়িত পরিপন্থী।

2- বেশীরভাগ ক্ষেত্রে যা হয়ে থাকে, তা হলো: ব্যবসা-অর্থ উপার্জন করা, নিজেকে প্রকাশ করা, সমাজকে ধোকায় ফেলানো।

3- অনেক সময় দেখা যায়, ফটোসপের কারসাজী।

4- অনেক সময় বলা হয়, তা ঘটেছে: কোথায়, কবে ও কিভাবে তার কোন হদিস হাওয়া যায় না।

5- অনেক সময় তা লোকমুখেই প্রচার হয়। অমুকে শুনেছে, অমুকে দেখেছে.. ইত্যাদি। তবে অমুক বা তমুককে জিজ্ঞাসা করলে, বলে আমি অমুক থেকে শুনেছি…. শেষে গিয়ে দেখা যায় তা জিরো।

6- আবার অনেক সময় দেখা যায়, এগুলির মাধ্যমে ইসলামের শান-সওকতকে প্রকাশ করতে বা বাড়াতে চান। তবে এগুলি মিথ্যা প্রতীয়মান হওয়ার পর তার ফলাফল হয় উল্টো। তাদের নিয়ত হয়ত ভাল, তবে কাজটি শরীয়ত বহির্ভূত।

7- অনেকে আবার অজ্ঞতার কারণে তা প্রকাশ করে থাকে।

8- আরো অনেক কিছু……

আমরা প্রায়ই শুনে থাকি:

অমুক নাকি স্বপ্নের মাধ্যমে পেয়েছে।

অমুকের নিকট গেলে সকল রোগ ভাল হয়ে যায়।

অমুকের বলদ দুধ দেয়, যা সকল রোগের মহৌষধ।

অমুকের পানি পড়া পান করে অনেকেই ভাল হয়েছে।

অমুকে পুকুড়ে ডুব দিয়ে 10 দিন অহিবাহিত করে দিয়েছে, তার নিকট গিয়ে অনেকেই হারানো ধন ফেরত পেয়েছে।

অমুক জীনের মাধ্যমে চিকিৎসা করে থাকে।

অমুকে জীনের মাধ্যমে অপারেশনও করে থাকে।

অমুককে জীনে ধরেছিল, তারপর থেকে সে বড় চিকিৎসক।

অমুককে এত টাকা দিলে, তার জীন স্বপ্নে চিকিৎসা করবে।

অমুকের শরীরে আল্লাহর নাম লিখা প্রকাশ পেয়েছে, তার নিকট যা চাওয়া যায়, তাই পাওয়া যায়।

অমুকের স্ত্রী রুটি বানালে, তাতে আল্লাহর নাম প্রকাশ পায়।

অমুকে বড় রোগে পতিত হয়েছিল, অবশেষে অত্মহত্যা করতে গিয়ে, গায়েবীভাবে চিকিৎসা পেয়েছে।

অমুকের পিতা বা মাতা কুরআনের হাফেজ ছিল তাদের নিকট থেকে সে অমুক চিকিৎসা পেয়েছে।

অমুক পাগলের নিকট গেলে, বা তার কবরে গিয়ে বললে, বা তার কবরে মান্নত করলে রুগ মুক্তি পাওয়া যায় বা এমন এমন পাওয়া যায় এমনকি অনেকের ধারণা সকল গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়।

অমুক কবর থেকে কুরআন তেলাওয়াত শুনা যায়।

অমুকের শয়ন করার খাট থেকে আল্লাহর জিকির শুনা যায়।

অমুক নেংটা পাগলের নিকট এমন এমন অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে।

গায়েবী কবর প্রকাশ পেয়েছে, তাতে মান্নত করলে সকল বালা-মুসিবত দূর হয়।

ইত্যাদি ইত্যাদি।

তবে ভাবুন:

আমাদের পার্শের গ্রামে গায়েবী কবর প্রকাশ পেয়ে, তাতে লাল সালু লাগিয়ে রমরমা ব্যবসা আরম্ভ হল। পরে দেখা গেল, কবরে কলার গাছ সাদা কাপড়ে পেচানো।

সম্ভবত: 1991-1992তে বগুড়াতে পুকুরে ডুব দিয়ে সপ্তাহ পর উঠে এসে চিকিৎসা আরম্ভ করে মাস খানেকের ভিতর অনেক টাকা মালিক হয়ে, পরে পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে লাল দালানের অধিবাসী হয়। কেননা সে পুকুরের পারের এক পুরাতন কবরে এক সপ্তাহ অতিবাহিত করে, সেখানে যা খেয়েছে এবং পান করেছে তা সবই প্রকাশ পেয়েছে।

নম্বয়ের দশকে টাঙ্গাইলে একজনের কাদা মাখা শরীর থেকে আতরের ঘ্রান বের হত। পরে ধরা যানা গেলে সে অতি সুঘ্রান আতার মেখে পরে শরীরে কাদার প্রলেপ দিন। তার অবস্থানও হয়েছিল, লাল দালানে।

জুরাব আলী ময়মনসিংহ থেকে মন্সিগঞ্জে গিয়েছিল মাটি কাটার কাজ করতে, সেখানে নাকি তাকে জীনে আছর করে। পরে সে সেজে বসে বড় চিকিৎসক। ঝাড়-ফুক, তাবিজ দিয়ে হাতিয়ে নেয় জনগণের অনেক টাকা। তার কথা মতে আমি যে টাকা নেই, তা জীনে নিয়ে যায় আমার কাছে এক টাকাও থাকে না। পরে জনগণের হাতে ধরা খেয়ে তার ব্যবসা চাংগে উঠে।

বড় দাড়ি ও বড় আলখেল্লা ওয়ালা কয়েকজনকে রাতে আপ্যায়ন করাতে গিয়ে বাড়ীর সকল কিছু খুয়েছে এমন ঘটনা আমাদের সমাজে অনেক রয়েছে।

বাড়ীর স্বর্নগুলিকে দ্বিগুন বা আরো বাড়তে অমুক বাবার ফু নিয়ে সব খুইয়েছে, এমন ঘটনাও কম নেই।

কপালে আল্লাহ লিখা, শরীরের অন্যস্থান কালেম লিখা মহান ব্যক্তিকেও পুলিশের ডান্ডা খেয়ে জেলে যেতে হয়েছে।

কবর থেকে কুরআন পাঠ করা বালককে পাকড়াও করার পর সত্য ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে।

আঠা লাগিয়ে মাথায় জট বানিয়ে চিকিৎসা করার পরও ধরা খেয়ে হাত-পা লোলা হয়ে অবসর নিয়েছে।

খাটের পায়ার আল্লাহ জিকির করার বাটপারীয় ধরা খেয়েছে।

বলদের দুধ দেয়ায়, তার মালিককে উত্তম-মাধ্যমে দিয়েছে এলাকার জনগণ।

বানরের তাবীজ-কবচের ধোকাও জনগণ জানতে পেরে তা প্রত্যাক্ষান করেছে।

নেংটা বাবার ফু দেয়ার কেরামতী বুঝাতে পেরে অনেক মহিলা তাদের উজ্জত হারিয়ে, বাবাকে লাঠির আদর করেছে।

অমুক বাবার লাঠি পানির গ্লাসে ডুবালে, পানি মিষ্টি হওয়ার পর বাবাকে জনগণ কিল-ঘুসি ও লাথি উপহার দিয়েছে।

বাংলাদেশে থেকে বাবাজি মক্কাতে গিয়ে পাচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে, এমন বাবাও জনগণের মার খেয়ে শরীরের চামড়া হারিয়েছে।

মক্কা ঘরে কুকুর ঢুকতে জানতে পেরে, বাংলাদেশ থেকে তাড়ানো বাবাকেও মহিলার হাতে ঝাড়ুর পিটানী থেকে হয়েছে।

আল্লাহকে দেখে এমন বাবাকেও পুকুরে চুবিয়ে শাস্তি দিয়েছে জনগণ।

আরো অনেক ঘটনা রয়েছে, যা আপনাদের অজানা নয়।

তাই আসুন! আমাদের সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করি। আর তার জন্য দরকার ইসলামী জ্ঞান অর্জন করা।

আল্লাহ আমাদেরকে তার দ্বীনকে জেনে-বুঝে আমল করার তাওফীক দান করুন এবং সকল কুসংস্কার থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন। আমীন

বিষয়: বিবিধ

৩১৫১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File