মা শুধুই মা
লিখেছেন লিখেছেন কবিতা ২২ মার্চ, ২০১৩, ০৩:০৬:৪৮ দুপুর
মায়ের মত কেউ হয় না , মা শুধুই মা ।২০১০ আগষ্ট মাসে হঠাৎ আমার মায়ের লিভার ক্যানসার ধরা পরে,এবং সেটা ছিল একদম শেষ পরযায়।দেশে বিদেশে যার কোন চিকিৎসা ছিল না ,মৃত্তুর কাছে মানুষ যে কত অসহায় সেদিন সেটা হৃদয় দিয়ে উপলদ্বী করেছি।কারণ টাকা পয়সা থাকা সত্বেও আমরা আমার মায়ের কোন চিকিৎসা করাতে পারি নাই।অবশেষে ২০১০ অক্টোবর মাসের ৫ তারিখ আমার মা ৫২ বৎসর বয়সে আমাদের ছেড়ে চিরদিনের জন্য্ চলে যান।(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
যে দিন প্রথম মায়ের অসুখের কথা জানতে পারলাম মাকে ফোন দিয়ে খুব কাদতে ছিলাম তখন আমার মা আমাকে শান্তনা দিয়ে বলেছিল কাদ কেন ,কত মানুষতো ছোট ছোট ছেলে মেয়ে রেখে মারা যায় ,তোমরাতো বড় হয়েছ, তোমাদের বিয়ে দিয়েছি ,তোমাদের সংসার হয়েছে তোমারা সবাই সুখে আছ,আমারত চাওয়া পাওয়ার আর কিছু নাই, আল্লাহর দেয়া জীবন আল্লাহ যদি নিয়ে যায় আমার কোন আফশোস নাই।
যদিও আমার মা আমাদের শান্তনা দিত,কিন্ত আমি দেখেছি আমার মায়ের বেচে থাকার আকুতি,আমার মায়ের বেচে থাকার আকাংখা,আমার মা বেচে থাকতে চাইত তার সন্তানদের জন্য।মা মারা গেলে সন্তানেরা কষ্ট পাবে এ জন্য আমার মা বেচে থাকতে চাইত।
আমি দেখেছি আমার মায়ের ব্যাথার কষ্টে আমার মায়ের মুখ কালো হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমর মা মুখে একটুও শব্দ করছে না,কারণ তার কষ্ট দেখে তার সন্তানেরা কাদবে বা কষ্ট পাবে এই হলো মা ,যে মৃত্যু যাতনার সময়ো সন্তানের কষ্টের কথা ভাবে।
দেশের বাহিরে থাকি প্রতি শনিবার ফোনে মায়ের সাথে কথা বলি।কোন কারনে শনিবারে ফোন দিতে না পারলে রবিবারে ফোন দিলে মায়ের প্রথম কথ ছিল গতকাল আমি সারা দিন চেয়ে ছিলাম আজকে আমার মনু ফোন দিব।এইতো মা যে সন্তানের ফোনের আশায় চেয়ে থাকে।দেশে আত্বীয় স্বজন ,আমার আব্বার কাছে ফোন দেই কিন্তু কেউ কখনো বলে না তোমার ফোনের আশায় চেয়ে ছিলাম।
একদিন কথা শেষে মাকে বলেছিলাম মা আমদের জন্য দোওয়া কইর ।আমার একথা শুনে আমার মা কেদে ছিল আর
বলেছিল আমার কাছে তোমাদের দোওয়া চাইতে হবে! আমি সব সময় তোমাদের জন্য দোওয়া করি।মায়ের কাছে দোওয়া চাইতে হয় না মা তার সন্তানের জন্য এমনিতেই দোওয়া করে।
আমি আমার মায়ের সাথে অনেক কথা বলতাম,কোথায় গেলাম কি দেখলাম ,কি করলাম,কি রান্না করলাম,কি খেলাম
সব কথা মায়ের সাতে বলতাম।
এখনো আমার খুব ইচ্ছা করে আমার মায়ের সাথে কথা বলতে।কোথাও বেড়াতে গেলে নতুন কিছু দেখলে বা নতুন কোন রান্না শিখলে খুব ইচ্ছা করে মাকে বলতে।কখনো মনে হয় যদি একটু কথা বলতে পারতাম ,যদি বলতে পারতাম মা তুমি কেমন আছ আমাদেরকে ছেড়ে্?বলতে ইচ্ছা করে মা তোমাকে ছাড়া বেচে আছি ঠিক কিন্তু এর নাম বেচে থাকা নয়।
খুব ইচ্ছা করে মাকে জড়িয়ে ধরতে মায়ের বুকে মাথা রাখতে।খুব বেশী ইচছা করে মা মাকে জড়িয়ে ধরে আমার মাথয় পিঠে আদর করুক।
যদিও আমি আমর কল্পনাতে মায়ের সাথে অনেক কথা বলি,মাকে জড়িয়ে ধরি মাও আমাকে জড়িয়ে ধরে মাথায় পিঠে আদরও করে।কিন্তু কল্পনার আদরে আমি কোন তৃপ্তি পাই না।আমার অতৃপ্ত আত্বা অতৃপ্তই থেকে যায়।
এই অতৃপ্ত আত্বা নিয়েই হয়তো একদিন আমি ও এ দুনিয়া ছেড়ে চলে যাব।
আমরা দুই ভাই দুই বোন তার মধ্যে দুই ভাই ওামি ইউরোপের তিন দেশে থাকি ,এক বোন দেশে তো আমার মায়ের শেষ ইচ্ছা ছিল আমাদের চার ভাই বোনকে দেখা ও আমাদের রান্না করে খাওয়ানো । আমরা চার ভাই বোন মায়ের অসুখের একসাথে মায়ের পাশে ছিলাম কিন্তু আমার মা আমাদের রান্না করে খাওয়াতে পারেন নাই।
দ্বীনি ভাই ও বোনেরা সবাই আমার ও আমার মায়ের জন্য দোওয়া করবেন যেন জান্নাতে আমি আমার মাকে জড়িয়ে ধরতে পাড়ি ও আমার মা যেন আমাদের রান্না খাওয়াতে পারেন।
বিষয়: Contest_mother
২৭৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন