জাবের (রাHappy-এর মেহমানদারী ও রাসূ্ল (সাঃ)-এর মুজিযা

লিখেছেন লিখেছেন কবিতা ২৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:২৯:৫৬ রাত

জাবের (রাHappy বলেন, খন্দকের যুদ্ধের প্রাক্কালে আমরা পরিখা খনন করছিলাম। এমন সময় একটা শক্ত পাথর দেখা দিল। তখন লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট এসে বলল, পরিখা খননকালে একটি শক্ত পাথর পাওয়া গেছে। তিনি বললেন, ‘আচ্ছা আমি নিজেই খন্দকের মধ্যে নামব। অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন, সে সময় তাঁর পেটে পাথর বাঁধা ছিল।আর আমরাও তখন তিনদিন পর্যন্ত কিছু খেতে পায়নি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কোদাল হাতে নিয়ে পাথরটির উপর আঘাত করলে তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে বালুকণায় পরিণত হয়।

জাবের (রাHappy বলেন, আমি আমার স্ত্রীর নিকটে এসে বললাম, ‘তোমার কাছে খাওয়ার কিছু আছে কি? আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে ভীষণ ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখলাম। তখন সে একটি চামড়ার পাত্র হতে এক ছা‘পরিমাণ যব বের করল। আমাদের একটি মোটাতাজা বকরীর বাচ্চা ছিল। তা আমি যবেহ করলাম আর আমার স্ত্রী যব পিষল। অবশেষে আমরা হাঁড়িতে গোস্ত চড়ালাম।

অতঃপর আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট এসে চুপে চুপে বললাম, ‘আল্লাহ্‌র রাসূলুল্লাহ(সাঃ)! আমরা একটি বকরীর বাচ্চা যবেহ করেছি। আর এক ছা’যব ছিল, আমার স্ত্রী তা পিষেছে। সুতরাং আপন আরো কয়েকজন সঙ্গে নিয়ে চলুন।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) উচৈচঃস্বরে সবাইকে বললেন, ‘হে পরিখা খননকারীগণ! এস তোমরা তাড়াতাড়ি চল, জাবের তোমাদের জন্য খাবার তৈরী করেছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে বললেন, ‘তুমি বাড়ী ফিরে যাও। আমি না আসা পর্যন্ত গোস্তের ডেকচি নামাবে না এবং খামির থেকে রুটিও বানাবে না। এরপর তিনি লোকজনসহ উপস্থিত হলেন। তখন আমার স্ত্রী খামিরগুলি রাসূলের সম্মুখে দিলে তিনি তাতে লালা মিশিয়ে দিয়ে বরকতের জন্য দোআ করলেন।

অতঃপর ডেকচির নিকট অগ্রসর হয়ে তাতেও লালা মিশিয়ে বরকতের জন্য দোআ করলেন। এরপর বললেন, ‘তুমি আরো রুটি প্রস্ত্ততকারিণীদের ডাক, যারা তোমার সাথে রুটি বানাবে। আর চুলার উপর থেকে ডেকচি না নামিয়ে তুমি তা থেকে তরকারী নিয়ে পরিবেশন কর’।

জাবের (রাHappy বলেন, ‘ছাহাবীদের সংখ্যা ছিল এক হাযার। আমি আল্লাহ্‌র কসম করে বলছি, সকলে তৃপ্তি সহকারে খেয়ে চলে যাওয়ার পরও ডেকচি ভর্তি তরকারী ফুটতেছিল এবং প্রথম অবস্থার ন্যায় আটার খামির হতে রুটি প্রস্তুত হচ্ছিল’ (মুত্তাফাকুন আলাই, মিশকাত হা/৫৮৭৭ ‘ফাযায়েল ও শামায়েল’অধ্যায়, ‘মু‘জিযা’অনুচেছদ) ।

শিক্ষা:

১. কর্মীদের উৎসাহ ও প্রেরণা দানের জন্য নেতাকে তাদের সাথে যে কোন কাজে নিজ হাতে সহযোগিতা করা।

২. কর্মীদের অন্যতম কর্তব্য হল নেতার সার্বিক বিষয়ের প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা।

৩. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পক্ষ হতে প্রকাশিত প্রত্যেক মুজিযার প্রতি সুনিশ্চিত বিশ্বাস রাখা।

৪. দ্বীনের পথে যত কষ্টই আসুক না কেন হাসিমুখে তা বরণ করে নেওয়া।

বিষয়: বিবিধ

১৩৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File