ভাংতি গল্প
লিখেছেন লিখেছেন সুমন আখন্দ ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৪:৩২:২৪ বিকাল
শৈশবের ইচ্ছাটাকে পূরণ করতে রহমত মিয়ার প্রায় চল্লিশ বছর লেগে গেল। সে একটা সাইকেল কিনেছে এবং সাধ ও সাধ্যের সমন্বয়ে একাল-সেকালের ফিউশন করিয়েছে। মুরলীর মতো ছিপছিপে শরীর, রেসিং-চাকা, গিয়ার সিস্টেম, এবং হ্যান্ডেলটাও আধুনিক। কিন্তু সনাতনী কায়দায় এটার গলায় একটা ঝুড়ি ঝোলানো হয়েছে এবং পেছনে ক্যারিয়ারও আছে। ইচ্ছে করেই ওর সাথে নিজের জীবনের বেশ মিল রেখেছে রহমত মিয়া। সেও অনেকটা এইরকম--- এনালগ আমলের বডি নিয়ে ডিজিটাল সমাজের সাথে খাপ খাওয়াচ্ছে--- কেন যেন মনে হতে থাকে জীবনটা আসলেই একটা চমৎকার চক্রযান, জনপ্রিয় বাউল গানটির মতো---
"কী চমৎকার গাড়ির মডেল, ভাই চমৎকার গাড়ির মডেল
মানুষ একটা দুই-চাক্কার সাইকেল---"
প্যাডেলে চাপ দিলেই বাতাসে মিহি-সুর শোনা যায়, সেই সুরেও ফিউশন--- কবিতা আছে ,গানও আছে। রহমত মিয়া খেয়াল করে, সাইকেলটা কেনার পর হতেই অন্যান্য সাইকেলরা প্রথমে ফিসফিস কথায় পরে রাগীরাগী ভাষায় এটাকে ধমকাতে শুরু করেছে-- তোর জন্ম এত নীচবংশে কেন? তোর নামটা এমন কেন? দামটা এত কম কেন? এমন কালার কেন? গলায় কী ঝুলাইছস? পাছায় আবার কী লাগাইছস? তুই এতো সস্তা কেন? তুই এমন কেন? তুই কেমন কেমন যেন?
সাইকেলের মুখে ভাষা না থাকলেও রহমত মিয়া সব বুঝতে পারে, আর মৃদু হেসে অভয়ের হাতটা নতুন বন্ধুর কাঁধে রাখে ।
বিষয়: বিবিধ
৮৬০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন