টোনা-টুনির গল্প শোন-৬
লিখেছেন লিখেছেন সুমন আখন্দ ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:১৭:৩৯ সন্ধ্যা
এক ছিল টোনা আর এক ছিল টুনি। ফুয়াফুড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ে তেনারা একের পর এক কাণ্ড ঘটিয়ে চলেছেন; গল্পগুলো সবারই জানা তবু নতুন করে শুনি।
টোনার ভাই ভালো নাটক লিখতেন, এবং টোনা ভালো অভিনয় জানেন- এমন কথা বাজারে আছে; বাজারে আরো একটা কথা চালু আছে ফুয়াফুড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হবার জন্য একবার তাকে অফার দেয়া হয়েছিলো, কিন্তু তিনি ব্যাকস্টেজ ছেড়ে ফ্রন্টস্টেজে আসতে চাননি। উনি ভিসি বানাবেন; কথামতো উঠাবেন-বসাবেন, পছন্দ না হলে নামাবেন! সরকার চেঞ্জ হলেও উনার দাপট চেঞ্জ হতো না। ফুয়াফুড়িতে যে-ই ভিসি হয়ে আসুক টোনাকে ট্যাক্স এবং টুনিকে নজরানা না দিলে খবর আছে। এতদিন এই হয়ে আসছিলো, নতুন ভেজাবেড়াল ভিসিও মহাজ্ঞানী মহাজনের পথে হাটছিলেন- হঠাৎ তার উপর কি গায়েবী জোস নাজেল হলো কে জানে, তিনি ঠ্যাংটানা দিলেন-- টোনাটুনির দলে ভেড়া হয়ে তিনি থাকবেন না। ব্যস, এরপর হতেই কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গেছে, কেদেকেটে অপমানের নাটক সাজালেন টুনি এবং ইয়ালী না হলেও পুরুষালী-কণ্ঠে আওয়াজ দিলেন, ‘নাউ ইওর টাইম ইজ ওভার!’ কিন্তু ক্রিকেটে যেমন সবসময় ছয় বলে ওভার হয় না, এখানেও হলো না। ওভারের ওপর কভার পরিয়ে দিলেন ভিসিস্যার। টোনাটুনির মাথা খারাপ হলো, এবং খারাপ মাথায় নতুন প্লট এলো। ক্যামেরাম্যান রেডি রাখা হলো, সিসিটিভির ফুটেজের জন্য বলে রাখা হলো, ঢাকা অফিসে জানিয়ে রাখা হলো, ‘আজ কিছু হতে চলেছে’।
এরপর সেই দিন এসেছে, ‘বিশ্ব গুম দিবসে’ ঘুম ভেঙ্গে শুনি আজ কিছু একটা হবে! কি হবে? কি হবে? যাকেই জিজ্ঞেস করি ডিটেইলস কেউই বলতে পারেন না, যা শুনলাম ভাঙ্গা ভাঙ্গা, সেগুলো জোড়া লাগানোর পর অর্থটা দাড়াল, ‘আজ সকালেই রশি টানাটানির মতো করে ব্যানার টানাটানি খেলার আয়োজন করা হয়েছিল ভিসি-ভবনের সামনে। এই খেলায় শিক্ষকেরা হেরেছেন, শিক্ষার্থীরা জিতেছেন’। টুনি হেরেছেন, প্রতীকী প্রতিবাদে টোনা বৃষ্টিতে ভিজলেন। সেই ছবির প্রচারে প্রচারে প্রসার হলো, ফেবুতে অনেকের কভার-পিকচার হলো। ভেজাটোনা ভেজা গলায় বললেন, ‘আমার উচিত গলায় দড়ি দিয়ে মরা, জয়বাংলার এমন অবমাননা আর দেখিনি’। কি করে দেখবেন? জয়বাংলার সময়ে তার যুদ্ধ করার বয়স হলেও সাহস হয় নি, উনার বাবাও পাকিস্তানের চাকরি করা অবস্থায় সন্দেহবশত মারা পড়েছেন, কোন যুদ্ধ করতে গিয়ে তিনি প্রাণ হারাননি। অথচ জেলায় জেলায় ঘুরে মুক্তিযুদ্ধের সত্য-ঘটনাকে গল্প বলে ইশকুলের বাচ্চাদের শুনিয়েছেন। আসলে উনার কাছে এটা একটা গল্পই, উনি কখনো জয়বাংলার লোক ছিলেন না। যাহোক, সেলিব্রেটি বলে কথা--- লাইট-ক্যামেরা রেডিই ছিলো, সবুজ-সংকেত পেয়ে উড়ে এলেন চুন্নি সাহা। চুন্নি যখন ভিসিকে ভালো করে ভাজার জন্য তাওয়া-গরম প্রশ্ন করছিলো টোনা তখন শহীদ-মিণারে ডগওয়াক করছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ইন্টারভিউ দিচ্ছিলেন।
যাহোক, এতকিছুর পরেও যখন পানি গরম হচ্ছে না, তখন ভরপেট খেয়ে প্রতীকী-অনশন চলছে; এরপরও টোনাটুনির হাতে লাস্ট ট্রামকার্ড হিসেবে পদত্যাগের হুমকী থাকছে, নাটকের এটা কততম পর্ব? তা আর গুনছি না, আপনাদের মতো আমিও অপেক্ষায় আছি, দেখা যাক কি হয়!
গরম পানি জুড়ালো
গল্প আমার ফুরালো!
বিষয়: বিবিধ
১৪৪৯ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
টোনা আর টুনি
কত কথা শুনি
বলে যান গুণী
মোরা দিন গুণি......
বোধহয় ঠ্যাং ভাঙ্গলে পরে করবেন!
তাই ধন্যবাদনিন
আমাদের এই ব্লগে আপনার দাওয়াত রহিলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন