জন্মদিন
লিখেছেন লিখেছেন সুমন আখন্দ ১৫ আগস্ট, ২০১৩, ০৭:৪৫:০১ সকাল
বাংলাদেশের আরো অনেকের মত আমার জন্মতারিখ দুটো। একটি ২৬শে ডিসেম্বর অন্যটি ১৫ই আগস্ট। ছাব্বিশে ডিসেম্বরটি আমার হাই ইশকুলের অফিস সহকারীর দেয়া। মনে আছে, ক্লাশ নাইনে রেজিষ্ট্রেশন করার সময় তিনি আমাদের বারবার ওই বিশেষ ঘরটি পূরণে বারণ করেছেন। এবং এই বলে সতর্কও করেছিলেন, নিষেধ না মানলে ফর্ম বাতিল করা হবে। পরে শুনেছি, আমাদের সরকারী চাকরির বয়স যেন বেশিদিন থাকে তাই উনি যেচে অন্যান্য ব্যাচের মত আমাদেরও বয়স কমানোর সামাজিক দায়িত্বটি(!) পালন করেছেন; মজার বিষয় হচ্ছে- আমাদের প্রায় সবারই জন্মতারিখ হয়ে গেল ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে অথবা জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে। যারা ডিসেম্বরে পড়েছি তাদের জন্মসাল এক বছর আগে, আর যারা জানুয়ারীতে তারা এক বছর পরে; আদতে সবার মাঝে দিন-পনেরর ব্যবধান!
যাহোক, 'পনের আগস্ট' যে আমার জন্মতারিখ তা জেনেছি অনেক পরে। ভার্সিটিতে পড়ার সময় দেখলাম, বন্ধুরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানায়, কেক কাটে, টিএসসিতে গিয়ে জম্পেস আড্ডার আয়োজন করে নিজ নিজ জন্মবার্ষিকীতে। তখনই লোভ হত, একদিন আমিও! কিন্তু অফিসিয়াল বার্থডের প্রতি আমার আগ্রহ ছিল না- যেহেতু জানতাম- এটা ভূয়া। একটু-আধটু কবিতা লিখি বলে মনে হত, আহারে কবিসাহেবের জন্মদিনটা পালন হবে না! খুঁজতে শুরু করলাম, ব্রাম্মণের ঘরে হইনি বলে কোনও কুষ্ঠি-ঠিকুজি ছিল না, বাবার মাথে আমার বনিবনা হয় না, আমার জন্মের সময় উনি বিদেশে ছিলেন, এবং অন্যদিকে আসক্তি ছিল বলে উনার কাছে খোঁজা বৃথা, মায়ের কাছে প্রশ্ন করলাম এবং নির্দিষ্ট দিন-সন না পেলেও জানলাম শ্রাবণ মাসের কোন এক বর্ষণমুখর রাতে, নানাবাড়িতে আমার জন্ম। আমার সেজ খালার কাছ থেকে জানলাম- তারিখটা ৩১শে শ্রাবণ, ইংরেজী ১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ সাল। আমার ডাকনামটাও সেজ খালার দেয়া, তিনি বললেন- নানা না-কি প্রায়ই গর্ব করে বলতেন- 'আমার এক বঙ্গবন্ধু গেছে, দুঃখ করি না আরেকজন তো এসেছে।' নানা সম্পর্কে শুনেছি তিনি না-কি বঙ্গবন্ধুর সাথে একই কলেজে পড়েছেন, বেঁচে থাকলে নিশ্চিত দুঃখ পেতেন- যেভাবে আমি দিনকেদিন বঙ্গশত্রু হয়ে উঠছি!
বিষয়: বিবিধ
৯৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন