মিডিয়া ও আমাদের করণীয়

লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ রিজভী ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৮:৪৭:২৬ রাত

বর্তমান যুগ মিডিয়ার যুগ । মিডিয়া এমনি এক শক্তি যা ব্যক্তি থেকে শুরু করে সমগ্র বিশ্ব ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে । দুঃখ জনক হলেও সত্য যে আন্তর্জাতিক মিডিয়া থেকে শুরু করে দেশীও মিডিয়াগুলোর নিয়ন্ত্রণ আজ ইসলামের দুশমনদের হাতে কিন্তু এর বিপরীতে মিডিয়া সেক্টরে ইসলামপন্থীদের অবস্থান এককথায় বিশাল এক শুণ্য ফলে ইসলামের শত্রুরা তাদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াকে ব্যবহার করে পৃথিবীকে নিজেদের ইচ্ছামত পরিচালিত করছে । যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টি থেকে শুরু করে শান্তির বাতাবরণ নির্মাণে আজ মিডিয়ার জুড়ি মেলা ভার । গণমানুষের কাছে শান্তি প্রিয়কে সন্ত্রাসী আর সন্ত্রাসের জন্মদাতাকে শান্তির বার্তাবাহক রুপে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে তাগুত নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াগুলো অসাধারণ পান্ডিত্যের পরিচয় দিচ্ছে । যার বিষাক্ত ফল আস্বাধন করতে হচ্ছে বিশ্ব মুসলিমকে । এই মিডিয়া প্রপাগান্ডার বদৌলতে একের পর এক মুসলিম দেশ ও সমাজ আজ আক্রান্ত ও ধ্বংসের দ্ধারপ্রান্তে উপনিত । মিডিয়া যেমন ঐক্য সৃষ্টিতে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে ঠিক তেমনি ভাবে ঐক্যে ফাটল সৃষ্টি ও তা ধরে রাখার ক্ষেত্রেও সমান পারদর্শী । আর তাই নিজেদের মধ্যে ঐক্যের সৃষ্টি, মনোবল বৃদ্ধি ও তা ধরে রাখা এবং শত্রুর মনোবল ধ্বংস ও তাদের মধ্যকার ঐক্যে ফাটল সৃষ্টির জন্য মিডিয়া ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থানকে অবশ্যই শক্তিশালী করতে হবে । ইসলাম ও মিল্লাতে ইব্রাহিমের দুশমনদেরকে আর ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ দেয়া যাবে না । তাই মিডিয়া ও বুদ্ধিবৃত্তির জগতে আমাদের অবস্থানকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে যার মোকাবেলায় বাতিল শক্তি খড়-কুটার মত ভেসে যায় ।

আর এজন্য যা যা করতে হবেঃ-

প্রাথমিক পর্যায়ঃ

1. ইসলামপন্থী যে সকল মিডিয়া আছে সেগুলোকে প্রমোট করতে হবে । যেমন ইসলামপন্থী মিডিয়ার নিউজের লিংক, পেইজের লিংক, ব্লগের লিংক, পেইজ, গ্রুপ ইত্যাদির সর্বোচ্ছ পরিমানে শেয়ার দিতে ।

2. ইসলাম বিরুধী মিডিয়াকে প্রমোট করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে । অর্থাৎ এসব মিডিয়ার নিউজের লিংক, পেইজের লিংক, ব্লগের লিংক, পেইজ, গ্রুপ ইত্যাদি শেয়ার করা যাবেনা ।

3. বিরুধী শক্তির মোকাবেলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ইসলাম পন্থীদের বিচরন বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে হবে ।

4. সামজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে একাধিক ওপেন/সিক্রেট গ্রুপ ও পেজ খুলতে হবে পাশাপাশি অন্যান্য ইসলামী পেজ ও গ্রুপগুলোকেও প্রমোট করতে হবে । এসব পেজে সব সময় ব্যতিক্রম ও চিত্তাকর্ষক উপায়ে প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে ।

5. নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে পেজ ও গ্রুপগুলোকে নির্ধারিত বিষয়ে একযোগে ও সমন্বিত আকারে প্রচার প্রচারণার দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।

6. অনলাইন মিডিয়া যেমন টুইটার, গুগল প্লাস, ফেসবুক ইত্যাদির একাউন্ট, পেজ, গ্রুপ ও বিভিন্ন ব্লগে ইসলামপন্থীদেরকে লেখা-লেখির প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে । এ ক্ষেত্রে ইসলামপন্থী ব্লগ ও স্টেটাস ভিজিট এবং লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের মাধ্যমে তাদেরকে উৎসাহ দিতে হবে । প্রয়োজনে লেখার মান বিবেচনায় আর্থিক সাহায্যও করা যেতে পারে ।

7. ইসলামপন্থী লেখক ও ব্যক্তিত্বদের পক্ষে ব্যাপক প্রাচার প্রচারণার মাধ্যমে তাদেরকে আইডল/ সেলিব্রেটিতে পরিণত করতে হবে । এ ক্ষেত্রে তরুন লেখক ও ব্যক্তিত্বরা অগ্রগণ্য ।

দ্বিতীয় পর্যায়ঃ

1. ইসলামপন্থী অনলাইন এক্টিভিস্ট তরুনদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক মেধাবী এক্টিভিষ্টকে বাছাই করে লেখালেখির কৌশল ও পদ্ধতি শিক্ষা দানের লক্ষ্যে নির্ধারিত মেয়াদে বুনিয়দি প্রশিক্ষ্যণের ব্যবস্থা করতে হবে । মনে রাখতে হবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া ।

2. অনলাইনে শত শত নিউজ পোর্টাল ও ব্লগ ওপেন করতে হবে । এসকল নিউজ পোর্টাল, ব্লগ, পেইজ ও গ্রুপ একে অন্যের সহযোগী এবং পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে ।

তৃতীয় পর্যায়ঃ

1. সাংবাদিকতা পেশার প্রতি তরুন ইসলামপন্থীদের আগ্রহী করে তুলতে হবে । আগ্রহীদেরকে সাংবাদিকতার নানান দিকের পাশাপাশি কৌশল ও পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে ।

2. জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রিণ্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া সৃষ্টির দিকে নজর দিতে হবে । প্রিন্ট মিডিয়ার মধ্যে পত্রিকা, ম্যাগাজিন, ক্রোড় পত্র ইত্যদি যত বেশি সম্ভব প্রকাশ করতে হবে । আর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বলতে টেলিভিশন চ্যানেল, রেডিও, কমিউনিটি রেডিও ইত্যাদি প্রতিষ্ঠার দিকে মনোযোগী হতে হবে ।

3. একধিক নিউজ এজেঞ্চি তৈরী করতে হবে ।

চতুর্থ পর্যায়ঃ

1. ইসলাম্পন্থী লেখকদের মধ্য থেকে যারা চিন্তার জগতকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাবিত করার সামর্থ রাখে তাদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত একশ সদস্য নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ফোরাম প্রতিষ্ঠা করতে হবে ।

2. সারা দেশব্যাপী ইসলামপন্থীদের নিয়ে শত শত লেখক ফোরাম, পাঠক ফোরাম, স্পীকার্স ক্লাব ইত্যাদি তৈরি করতে হবে ।

3. ইসলামপন্থী লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখতে হবে ।

4. সব সময় ইসলামপন্থীদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও তা ধরে রাখার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে ।

5. মনে রাখতে হবে আল্লাহর যমিনে আল্লাহর দ্বীনকে পরিপূর্ণরুপে প্রতিষ্ঠাই এ সকল আয়োজনের একমাত্র লক্ষ্য । কেননা ইসলাম এসেছে সকল তাগুতি শক্তির মূল উতপাঠন করে তাদের উপর বিজয়ী হবার জন্য ।

হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে আকড়ে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইও না । নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন যারা সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় সারিবদ্ধভাবে আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করে । আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় অতি নিকটবর্তী । (আল-কোরআন)

বিষয়: বিবিধ

১৭৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File