কিসের সাথে কিসের তুলনা ! কৈ আগরতলা আর কৈ উগারতলা ?
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ রিজভী ২৬ জুন, ২০১৩, ০৮:০১:৪০ রাত
বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের নির্যাতন ও নীপিড়নে অতিষ্ঠ হয়ে অনেককেই সরকার প্রধান শেখ হাসিনাকে জার্মানীর সাবেক চান্সেলর এডলফ হিটলারের সাথে তুলনা করতে দেখা যায়। কিন্তু শেখ হাসিনা যে জার্মান জাতি ও বিশ্ব ইতিহাসের কিংবদন্তী মহা-নায়ক, সময় ও বাতাসের গতি পরিবর্তনকারী জার্মান চান্সেলর এডলফ হিটলারের পায়ের ধুলার সমান হওয়ারও যোগ্যতা রাখেননা এ বিষয়টি হয়ত তারা খেয়াল করে দেখেননি । কেননা
১.হিটলার ছিলেন স্বভাবগত ভাবে স্বাধীনচেতা ও জার্মান হিসেবে গর্বিত এক শাসক ।
উল্টোদিকে শেখ হাসিনা হলেন এমনি এক শাসক যার কাজ-কর্মে গোলামীর মানসিকতা স্পষ্ট ।
২.মানুষ হিসেবে হিটলার যেমনই হোন কেন নিজ জাতি ও স্বদেশের প্রতি তার ভালবাসা ও আবেগ ছিল প্রশ্নাতীত ।
কিন্তু শেখ হাসিনার দেশপ্রেম ও জাতিপ্রেম টেলিভিশনের পর্দায় ও জনসভার বক্তৃতা বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ বাস্তবে যার ছিটে ফোঁটাও দেখা যায় না ।
৩.হিটলার স্বপ্ন দেখতেন জার্মানীকে বিশ্বব্যাপী অজেয় শক্তিরুপে প্রতিষ্ঠা করার । সকল জাতির উপর জার্মান জাতির শ্রেষ্ঠত্ব ও আধিপত্যকে নিশ্চিত করার ।
বিপরীতে শেখ হাসিনার অবস্থান সিকিমের লেন্দুপ দর্জির চেয়ে কোন অংশে কম নয় । বরং অনেক ক্ষেত্রে তিনি লেন্দুপ দর্জিকেও অতিক্রম করে গেছেন ।
৪.জার্মানদের জন্য গোলামীর সনদ ভার্সাই চুক্তিকে হিটলার প্রকাশ্য জনসভায় ছিড়ে টুকরো টুকরো করে ছুড়ে ফেলেন । অন্যদিকে শেখ হাসিনা শত্রু রাষ্ট্রের সাথে বহু প্রকাশ্য ও গোপন গোলামী চুক্তিতে দস্তখত করে স্বদেশ ও স্বজাতিকে গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ করেছেন ।
৫.হিটলার জার্মান সামরিক বাহিনীকে এমনভাবে গড়ে তোলেন যা ছিল জার্মানির শত্রুদের জন্য সাক্ষাত্ জমদূতের মত । ক্ষমতা গ্রহনের মাত্র সাত বছরের মাথায় হিটলারের জার্মান ফৌজ এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরুপের বিশাল অংশ দখল করে নিতে সক্ষম হয় ।
অপরপক্ষে শেখ হাসিনার বাবা যেমন দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই নিজ দেশের সামরিক বাহিনীর সাথে বিমাতা সুলভ আচরণ করেছেন তেমনি ভাবে তিনিও তার বাবার মত বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীকে নখদন্তহীন বিড়ালে পরিণত করেছেন । যারা ৪২ বছরেও দক্ষিণ তালপট্টিসহ বহু বাংলাদেশী ভূখন্ড উদ্ধার করাত দূর বরং ক্ষেত্রবিশেষে অনেক ভূমি ছেড়ে দিয়েছে । বর্তমান আমলে শেখ হাসিনা শত্রুর সাথে হাত মিলিয়ে হত্যা করেছেন বহু চৌকস ও দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারকে । ধ্বংস করেছেন দুর্ধর্ষ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিডিআর) "বাংলাদেশ রাইফেলসকে" ।
৬.হিটলারের সমরকৌশল আজ বিশ্বের প্রতিটি সামরিক বাহিনীর জন্য আবশ্য পাঠ্য একটি বিষয় ।
কিন্তু শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর জন্য কোন সমর কৌশলই প্রণয়ন করেননি ।
৭.আজ অবধি কেউ হিটলারের বিরুদ্ধে কোনরুপ দূর্নীতির অভিযোগ করেননি । এমনকি হিটলার দূর্নীতি ও সমকামের এতটাই বিরুধী ছিলেন যে তার বহু ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও বন্ধুকে তিনি এ দুই অভিযোগে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছেন ।
বিপরীতে শেখ হাসিনার পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন সরকার সমকামীদের অধিকারের প্রতি সহানুভূতিশীল । দূর্নীতি ও দূর্নীতিবাজরা তাকে অষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে এবং তিনি জেনেশুনে তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দান করেছেন/করছেন । তিনি নিজে ও তার পরিবার দূর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্ত নয় ।
৮.হিটলার মনে করতেন জার্মানদের সকল সমস্যার মূলে রয়েছে ইহুদী ও কমিউনিষ্টরা । তাই তিনি এই দুই সম্প্রদায়কে ধ্বংস করতে কোনরুপ শৈতিল্য প্রদর্শন করেননি ।
কিন্তু শেখ হাসিনা কমিউনিষ্টদের তার বগলের তলায় আশ্রয় দিয়েছেন । ধর্মের নিষেদ অমাণ্য করে ইহুদী ও খৃষ্টানদের তার বন্ধু ও আত্মীয়ে পরিণত করেছেন ।
৯.হিটলার যদিও তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কখনই বরদাশত করেননি তবে এর লক্ষ্য ছিল ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী জার্মানী এবং জার্মান জাতি বিনির্মাণ ।
অপরদিকে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক নীপিড়নের লক্ষ্য ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা নয় বরং বালদেশের শত্রুদের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী শক্ত প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করার এজেন্ডা মাত্র ।
১০.হিটলার শত্রুর চোখে চোখ রেখে কথা বলতেন । জার্মানীর স্বার্থ রক্ষায় তার অবস্থান ছিল মহীরুহ বৃক্ষের ন্যায় । এক্ষেত্রে তিনি কাউকেই তোয়াক্কা করতেন না ।
কিন্তু শেখ হাসিনার কাছে বাংলাদেশের স্বার্থের চেয়ে দাদাদের স্বার্থ ও তার দলীয় স্বার্থই মুখ্য । যার প্রমাণ ভূড়ি ভড়ি ।
১১.হিটলার চার্চের পাদ্রীদের গণহারে হত্যা করেছেন এমনটা শুনা যায় না ।
অথচ শেখ হাসিনা রাতের আধারে হায়েনাদের লেলিয়ে দিয়ে স্বীয় জাতির ধর্মগুরু ও ধর্মশিক্ষার্থীদের নির্দয় নৃশংস ভাবে হত্যা করে তাদের লাশ পর্যন্ত গুম করে ফেলেছেন ।
১১.হিটলারের বিরুদ্ধে অনেক কথা থাকলেও তিনি মীরজাফর বা বিশ্বাস ঘাতক ছিলেন না ।
কিন্তু শেখ হাসিনাকে অনেকেই ঘষেটি বেগমের সাথে তুলনা করে থাকেন ।
১১.যতদিন পৃথীবী থাকবে মানুষ থাকবে ততদিন জার্মান ফুয়েরার এডলফ হিটলারের ভাল ও মন্দ দিকের আলোচনা সমালোচনা চলবে ।
কিন্তু তাঁর জীবন ও কর্মের তুলনায় শেখ হাসিনার অবস্থান বিশাল সাগর বক্ষে ভেসে থাকা খড়কুঁটোর মত । যা একসময় পঁচে গলে সাগর জলে মিশে যাবে ।
পরিশেষে বলব হিটলার ছিলেন এমন একজন মানুষ যিনি স্বজাতি ও স্বদেশের জন্য শেষমুহুর্তে তাঁর জীবনটাকে পর্যন্ত উত্সর্গ করেছেন অপর দিকে শেখ হাসিনা অবৈধ মইন-ফখর উদ্দীন সরকারের সময় স্বদেশ ও জাতিকে বিপদে ফেলে বিদেশে পাঁড়ি জমিয়েছিলেন । আবার সেই দেশদ্রোহীদের সাথে গোপন সমঝোতা করে জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেছেন । তাই আপনাদের কাছে অনুরুধ আপনারা ইতিহাসে অমর একজন দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়কের সাথে শেখ হাসিনার তুলনা করবেন না । কেননা আগরতলার সাথে কোন অবস্থাতেই উগারতলার তুলনা হতে পারেনা ।
বিষয়: রাজনীতি
১১৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন