হেলিকপ্টার ভ্রমনে শফি সাহেব
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ রিজভী ০২ মে, ২০১৩, ১০:২১:৪৫ রাত
বর্ষীয়ান আলেম আল্লামা আহমদ শফি দাঃ বাঃ বগুড়ায় অনুষ্ঠিত হেফাজতের মহাসমাবেশে হেলিকপ্টার যোগে যোগদানের পর থেকে একটা চিন্হিত মহল এই বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে; "যেখানে কাওমী মাদ্রাসাগুলো চলে মানুষের দানে সেখানে হুজুরদের কাছে হেলিকপ্টারে সফরের মত এত টাকা কোথা থেকে আসল অথবা এটা কি বিলাসিতা নয় ?"
সাধারণ দৃষ্টিতে দেখলে উপরের প্রশ্নগুলো যে কোন সাধারণ মানুষের মনে জাগাটা স্বাভাবিক ।
কিন্তু নিরপেক্ষভাবে যদি আপনি চিন্তা করেন তখন আপনার সামনে বিষয়টি পরিস্কার হতে বেশী সময় লাগবে না ।
প্রথমত; আল্লামা শফি ৯৫ বর্ষীয় একজন বৃদ্ধ আলেম যিনি তার জীবনের শেষ প্রান্তে এসে উপনীত হয়েছেন ফলে বার্ধক্য জনিত বহু রুগে তিনি আক্রান্ত যা ইতিমধ্যেই আপনারা জানতে পেরেছেন । তাই সুদূর হাটহাজারী থেকে বগুরায় গাড়ি দিয়ে সফর করাটা তার স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই উপযোগী নয় । ইতিপূর্বে বিগত ৬ মার্চের লংমার্চে যোগদানের উদ্দেশ্যে তিনি গাড়িত করে ঢাকায় যাত্রা করলে শারিরিকভাবে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েন যার দরুন সেদিনের সমাবেশে বক্তব্য দিতে পারেননি তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ছেলে আনাস মাদানী ও আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী । আর এজন্যই হেফাজত নেতৃবৃন্দের সর্বসম্মতিক্রমে তার এ সফরের জন্য হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয় ।
দ্বিতীয়ত; আপনারা এও জানেন যে আল্লামা শফি সাহেব ছাড়াও হেফাজতে ইসলামের আরও যেসব কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আছেন তাদের মধ্যে অনেকেই বার্ধক্যে উপনীত হয়েছেন এমতাবস্থায় তারাও বার্ধক্য জনিত অসুখ বিসুখ থেকে মুক্ত নন ।
তৃতীয়ত; সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নটি সবার মনে আসে তাহল মানুষের দানের টাকায় চলা কাওমী মাদ্রাসার হুজুরদের হেলিকপ্টারে সফরের মত ব্যয়বহুল সফরে অর্থের সংস্থান হচ্ছে কোথা থেকে ?
উত্তর দেয়ার আগে আপনার কাছে একটি প্রশ্ন আপনি কি এদেশের সকল উলামায়ে কিরামকে হতদরিদ্র মনে করেন ?
না বরং একটু খোঁজ নিয়ে দেখুন এদেশে বহু আলেম আছেন যারা উত্তরাধিকার সূত্রেই বহু সম্পদের মালিক যা দিয়ে তাদের পক্ষে হেলিকপ্টার ভ্রমন ত সামান্য বরং ঐ রকম পাঁচ সাতটা হেলিকপ্টার উনারা পাঞ্জাবীর পকেটে রাখার সামর্থ্য রাখেন ।
তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামীর আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে দেশে বিদেশে অবস্থানরত কাওমী মাদ্রাসাগুলোরর সাবেক ছাত্র এবং শুভানুধ্যায়ীরা ছাড়াও আন্দোলনের সাথে একাত্ম
ও সহানুভূতিশীল প্রত্যেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ইনফাক ফি সাবিলিল্লাহর (আল্লাহর পথে ব্যয় ) উদ্দেশ্যে তাদের সাধ্যমত অর্থ ও শ্রম দিয়ে সহায়তা করছেন যা অব্যাহত আছে । এমতাবস্থায় যারা হেফাযতের আন্দোলনে অর্থের সংস্থান নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে চলমান আন্দোলনকে জনগণের কাছে বিতর্কিত করা । এবং দেশের প্রধান ইসলমপন্থী ধারার আলেমদেরকে মানুষের কাছে নেতিবাচক ভাবে উপস্থাপন করা । বাংলাদেশের মত একটা দরিদ্র রাষ্ট্রে এজাতীয় প্রচার মানুষের মনে সাইকোলজিকালী ব্যাপক ইম্পেকট সৃষ্টি করবে তা জেনেই ব্যাপারটি নিয়ে কায়েমী শক্তি অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে । সূতরাং এজাতীয় অপপ্রচার সম্পর্কে সজাগ থাকার কোন বিকল্প নেই ।
এতদিন কওমীর উলামা ও ছাত্ররা কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠির কাছে কোন ফ্যাক্টর ছিলেননা কিন্তু হেফাজতের ব্যানারে ৬ মার্চের মহাসমাবেশে দেশব্যাপী মহাজগরণ কাওমী ধারার অনুসারীদের শক্তি সামর্থকে তোলে ধরে । ফলে বাতিল শক্তি ভীত হয়ে এখন হেফাজতে ইসলামীর বিরুধীতায় আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছে । এরই অংশ হিসেবে আন্দোলনের দূর্বার গতিকে স্তব্ধ করে দিতে তারা এখন আলেমদের চরিত্র হরণ ও মানহানীর চেষ্টা চালাচ্ছে । দ্বীন রক্ষার এ আন্দোলন সম্পর্কে মানুষকে বিভ্রান্ত করাই তাদের এসব অপপ্রচারের আসল উদ্দেশ্য ।
তাই এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে একটু বিচার বিবেচনা করেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া উত্তম । তবে একটা কথা না বললেই নয় কানার কাছে দিন আর রাতের মধ্য কোন পার্থক্য নেই ।
বিষয়: বিবিধ
১০৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন