সেদিন ত আর নেই বেশী দূরে এদেশের আকাশে কালেমার পতাকা উড়বে
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ রিজভী ২১ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:৪৩:৫৮ বিকাল
ওরা মনে করে এই বুঝি তারা বিজয়ী হল অথচ আল্লাহ শুরু থেকে শেষ অবধি তাদেরকে আশায় আশায় রাখেন অতঃপর শেষমুহুর্তে এসে তাদেরকে চরমভাবে লাঞ্চিত ও অপমানিত করে তাদের সমস্ত আশা আকাংখাকে বর্থ্যতায় পর্যবসিত করেন যা তাদের অন্তরে বিষাক্ত কাঁটার লাগাতার দংশনের ন্যায় অনুভূত হয় । অতঃপর তারা আবার নতুন করে চক্রান্তের জাল বুনে এবং পূর্বের পরাজয়ের কড়া প্রতিশোধ গ্রহনের শপথ করে ওদিকে আল্লাহও তাদেরকে তাদের সীমালংঘন পর্যন্ত অবকাশ প্রদান করেন, কিন্তু যখনি তারা আবার সীমালংঘন করে তখনি আল্লাহ আবারো তাদের চক্রান্তকে নস্যাত করে দেন ফলে তারা হতাশ হয় এবং এই হতাশাই তাদেরকে বদ্ধ উন্মাদে পরিণত করে । ফলে মানুষজন তাদের থেকে ক্রমেই দূরে সরে যায় । তারা চায় আল্লাহর দ্বীনের নূরকে ফু দিয়ে নিভিয়ে দিতে অথচ আল্লাহর দ্বীনের হিফাযতকারী স্বয়ং আল্লাহই ।
বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের সূচনালগ্ন থেকেই শয়তানের অনুচররা তাকে অঙ্কুরেই শেষ করে দিতে চেয়েছে, অথচ তারা বার বার ব্যর্থমনোরত হয়েছে ।
তারা মেধাবী ছাত্র নেতা আব্দুল মালেককে বর্বর ও পৈশাচিক উন্মোত্ততায় হত্যা করে ভেবেছিল এইবার বুঝি শেষ, কেল্লা ফতেহ ! আল্লাহর কসম তাগুতের অনুসারীরা হয়ত জানেনা ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হর কারবালা কি বাদ । সময় সাক্ষী আব্দুল মালেক মরে নাই কেননা শহীদের মৃত্যু নাই ওরা চিরঞ্জীব, ওরা মৃত্যুঞ্জয়, ওরা অবিনশ্বর । আব্দুল মালেকের শাহাদাৎ ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রাকে করেছে আরো বেশি শানিত ও দূর্বার । শহীদ আব্দুল মালেকের প্রতি ফোঁটা রক্ত থেকে আজ জন্ম নিয়েছে শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবীত লাখো আব্দুল মালেক । যে আব্দুল মালেকরা ছিল হাতে গোণা আজ সেই আব্দুল মালেকের উত্তরসূরীরা সংখ্যায় লাখো কোটি । শয়তান কি এটা সহ্য করতে পারে ? কখনোই না, তাইত একাত্তরে স্বাধীনতার পর পরই ওরা আবারো ইসলামের ক্রমবর্ধমান বৃক্ষটিকে সমূলে উপরে ফেলতে চেয়েছিল, চেয়েছিল এর বিকাশকে চিরতরে রুদ্ধ ও স্তব্দ করে দিতে । এই হীন ও কদর্য্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তখন তারা একরাশ মিথ্যা অযুহাত দিয়ে বাংলার যমিনে ইসলামী আন্দোলনকে করেছিল নিষিদ্ধ । অথচ মহান আল্লাহ এমনি হাকিম ও প্রজ্ঞাময় যে তিনি তাদের এককে অপরের দ্ধারা ধ্বংস করেন এবং জালিম শাসককে সমূলে উত্খাত করেন । সে সময় সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর হাতে প্রায় চল্লিশ হাজার জাসদ কর্মী নিহত হয় । গুম ও পঙ্গুত্ত বরণ করে বেশুমার একই সময়ে জাসদ গণবাহিনীর হাতে নিহত হয় লাখের অধিক সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আওয়ামীলীগ নেতা কর্মী, আহত ও পঙ্গুত্ত বরণ করে অগণিত । আফসুস এ থেকে তারা কোন শিক্ষাই নেয়নি ।
আজ বিচার নামক এক কমেডি সিরিয়ালে ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবন্ধকে হত্যা করার এবং তাদেরকে অপমান ও অপদস্থ করার যে নাটক শুরু হয়েছে এটি ইসলামী আন্দোলনকে স্তবদ্ধ করে দেয়ার একই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশমাত্র । সূতরাং ভয়ের কিছু নেই । বরং আল্লাহ যাকে সম্মানে ভূষিত করেছেন তার সম্মান বিনষ্ট করার ক্ষমতা কে রাখে ? বরং ইতিহাস সাক্ষী তারা নিজেরাই অপমানিত ও লাঞ্চিত হয়েছে যারা সতকর্মশীলদের উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেছে । মনে রাখতে হবে আল্লাহই তার বান্দাদের জন্য যথেষ্ট ।
আল্লাহর দ্বীনের আলোকে চিরতরে নিভিয়ে দেয়ার তাগুতি প্রচেষ্টার ধারাবাহকিতায় আজ অবধি তারা হত্যা করেছে বহু তাকওয়াবান সচ্চরিত্র দ্বীনদার তরুন যুবক ও বৃদ্ধকে গুম ও পঙ্গু করেছে অগণিত বনী আদমকে অথচ তারা বার বার ব্যর্থ হয়েছে দ্বীনের অগ্রযাত্রাকে রুখে দিতে, ব্যর্থ হয়েছে ইসলামী আন্দোলনের কাফেলায় শরিক হওয়া জনতার স্রোতকে বন্ধ করে দিতে । ইনশাআল্লাহ তারা আগামীতেও ব্যর্থ হবে যেমন অতীতে ব্যর্থ হয়েছে এবং আল্লাহ তাদের মুখকে কালো করে দিবেন ।
একটু চিন্তা করে দেখুন যে আন্দোলনকে তারা সূচনাতেই বিনাশ করতে চেয়েছিল তার আহ্বান আজ বাংলাদেশের প্রতিটা প্রান্তরে প্রতিটা ঘরে পৌছে গেছে আর এটাই এপর্যন্ত অর্জিত সর্বোচ্ছ সফলতা । একথা বলতে দ্বীধা নেই যে তাগুতের অনুচরদের সর্বাত্মক বিরুধীতা আর আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে নিয়োজিত ইসলামী আন্দোলনের সৈনিকদের লক্ষ্যে পৌছার অধম্য স্পৃহা, ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা, নিরলস প্রচেষ্টা ও ত্যাগ আজ এ আন্দোলনকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে । সূতরাং হতাশার কি আছে ?
সাম্প্রতিক সময়ে তারা যে আস্ফালন শুরু করেছে তা ঠিক ঐ কুঁপি বাতির শেষ মূহুর্তের আলোর ন্যায় যখন তা নীভে যাওয়ার আগে ধপ করে জ্বলে উঠে । তাদের আস্ফালন ও লম্ফঝম্প দেখে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা যেন নিরাশ না হয় । তাদের মনে রাখা উচিত রাত যত গভীর হয় উষা ততবেশী নিকটবর্তী হয় । তারা যেন সেই সময়ের কথা স্মরণ করে যে সময়টি ছিল ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য বর্তমানের চেয়ে বহুগুণ কঠিন ও বন্ধুর । মহান আল্লাহ যিনি অসীম দয়ালু ও পরম করুণাময় তার অপার রহমতে ইসলামী আন্দোলন আজ এদেশের যমীনে এক মহীরুহ বৃক্ষে পরিণত হয়েছে যার উপস্থতিকে এখন চাইলেই কেউ আস্বীকার করতে পারছে না আর এটাই বাস্তব সত্য সূতরাং সেদিন আর দূরে নয় যেদিন মানব রচিত যাবতীয় বিধি-বিধানকে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলে ইসলামী শরীয়া-ই হবে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সংবিধানের উৎস । পরিশেষে বলতে চাই "আমরা আল্লাহর রং ধারণ করেছি আল্লাহর রংয়ের চেয়ে উত্তম রং আর কি হতে পারে ?
বিষয়: বিবিধ
১২৬৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন