একটি ছবি, স্বপ্ন এবং বাস্তবতা

লিখেছেন লিখেছেন উচিত কথা ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:২৪:৪১ সন্ধ্যা



‘একটি ছবি, স্বপ্ন এবং বাস্তবতা’

সময় তখন সকাল ৭ টা। দীর্ঘক্ষন আকাশে উড়া এমিরেটস এয়ারলাইলস এর বিমানটি তখন পাখা গুটিয়ে চাকা রাখল পৃথিবীর ব্যস্ততম লন্ডনের হিথ্রো বিমান বন্দরে। টার্মিনালে অপেক্ষমান হাজার হাজার নেতাকর্মীও তখন ব্যস্ত হয়ে উঠল ফূল আর ফুলের তোড়া নিয়ে। উদ্দেশ্য তাদের প্রিয় নেত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করা। কিছুক্ষনের মধ্যে বেরিয়ে আসলেন দেশ বাচাও, মানুষ বাচাও আন্দোলনের, গনতন্ত্র-প্রিয় মানুষের প্রিয় নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। শত সহস্র নেতা কর্মীদের মাঝ থেকে প্রিয় নেত্রীর দিকে ধীর পায়ে অশ্রুসজল এগিয়ে আসলেন একজন। কাছে, অত্যন্ত কাছে চলে আসলেন। নেত্রী তাকে জড়িয়ে ধরলেন, বুকে টেনে নিলেন। কপালে, গালে-মুখে চুমু খেলেন। নেত্রীর চোখ দিয়ে পানি, অনবরত পানি গড়াতে লাগলো, সাথে আগুন্তকেরও। দীর্ঘক্ষন কেউ কেউ কোন কথা বলতে পারলেন না। টার্মিনালে তখন সুনসান নীরবতা। সেই এক অভাবনীয় দৃশ্য, আবেগঘন পরিবেশ। প্রিয় নেত্রীকে বরন করতে আসা নেতাকর্মীদের চোখেও পানি। দীর্ঘদিন বুকের মধ্যে জমে থাকা দু:খ-মেঘ গুলো কান্না-বৃষ্টি হয়ে কিছুটা হাল্কা হল। নেতা কর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দিতে লাগলেন মা খালেদা আর তার প্রিয় সন্তান তারেক জিয়া।

নেতাকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছা শেষে মাকে নিয়ে গাড়ীতে উঠলেন লক্ষ কোটি তরুনের প্রানের স্পন্দন তারেক জিয়া। নিজে ড্রাইভিং ষ্টিয়ারিংএ আর পাশে মা। ক্যামেরার ফ্লাশগুলো একের পর এক জ্বলে উঠলো। ফটো সাংবাদিকরা এ বিরল দৃশ্যের ছবিটিই পাঠিয়ে দিলেন তাদের স্ব স্ব পত্রিকা অফিসে। পত্রিকা থেকে ঘুরতে লাগলো জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে। নানা জন, নানা মত।

একটি ছবি, আর এ ছবিটিকে কেন্দ্র করেই যুতসই নেতৃত্বের অভাবে দলে নির্যাতিত নীপিড়িত অসংখ্য নেতা কর্মী সমর্থক একটি স্বপ্ন দেখতে শুরু করল। দলের চেয়ারপার্সন হিসাবে দেশনেত্রী বেগম জিয়ার উপর সাধারন নেতাকর্মীদের যেমন শ্রদ্ধা, আস্থা আর বিশ্বাস রয়েছে ঠিক তেমনি পারিবারিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে বেগম জিয়া যেভাবে অত্যাচারিত, নির্যাতিত এবং নিপিড়িত হয়েছেন তার প্রতি রয়েছে সেরকম সহানুভূতিশীল দৃষ্টি ভঙ্গি। গাড়ীতে বেগম জিয়া যখন তারেক জিয়ার পাশের সিটে আর তারেক জিয়া যখন ষ্টিয়ারিংএ তখন বিএনপি নামক গাড়ীটিতে বেগম জিয়াকে দলের সম্মানীত স্থান চেয়ারপার্সনে রেখে দলের মূল দায়িত্ব তারেক জিয়াই পালন করুক -এরকম একটা স্বপ্ন দেখতেই পারে।

এতো গেল স্বপ্নের কথা। এবার আসি বাস্তবতায়। বাস্তবতা হল মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন এর সাথে আতাত করে ৫ বছরের ক্ষমতা আর ০৫ জানুয়ারীর অবৈধ এবং অনৈতিক নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত সরকার যতটা না নিজের দল বা দেশের প্রতি ব্যয় করেছে তার চেয়ে বেশী সময় এবং অর্থ ব্যয় করেছে তারেক জিয়ার পিছনে। হাওয়া ভবনের মিথ্যা দূর্নীতির তকমা লাগিয়ে তারেক জিয়াকে দেশের সাধারন মানুষ, বিএনপি’র নেতাকর্মী সমর্থকসহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত করার সর্বপ্রকার অপচেষ্টাই চালানো হয়েছে। সেখানে ব্যর্থ হয়ে ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ মানি লন্ডারিং মিথ্যা মামলায় তারেক জিয়াকে জড়িয়ে স্বাভাবিকভাবে তার দেশে আসার পথ রুদ্ধ করে রেখেছে। নিন্দুকেরা কিংবা একনায়কতন্ত্র বাস্তবায়নকারীরা যা-ই বলুক না কেন তৃনমূল থেকে শুরু করে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী নেতৃত্ব পর্যন্ত বিশ্বাস করে বেগম জিয়াকে পাশে রেখে একমাত্র তারেক জিয়াই পারে বিএনপি নামক এ বিশাল গাড়ীটির ষ্টিয়ারিং হাতে রেখে বিএনপিকে সঠিক পথে পরিচালিত করে বিএনপি’র মধ্যে ঐকমত্যতা ধরে রেখে শেখ হাসিনার অবৈধ মসনদ ভেঙ্গে জনগনের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়ে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম।

বিএনপি-প্রিয় মানুষদের স্বপ্ন, আকাঙ্খা বাস্তবায়িত করতে গেলে তারেক জিয়াকে অবশ্যই দেশে আসতে হবে –এর কোন বিকল্প নেই, হতে পারেনা। কিন্তু বাকশাল প্রতিষ্ঠাতা বাবার যোগ্য উত্তরসূরী একনায়কতান্ত্রিক হায়ানার থাবায় তারেক জিয়ার দেশে আসাটা কতটা নিরাপদ বা নিজের রক্ত বিন্দু দিয়ে তাকে নিরাপদ রাখার জন্য নেতা কর্মীরা কতটুকো প্রস্তুত তা-ই ভাববার বিষয়।

বিষয়: বিবিধ

১২৮৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

342685
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৫
শেখের পোলা লিখেছেন : তারেককে তার বাবার পথ অনুসরণ করে তারই রেখে যাওয়া কাজ সমাধা করার শপথ নিতে হবে৷ আর হাওয়া ভবন নয়৷ নয় কমিশন বানিজ্য৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File