একজন শেখ হাসিনা, কুটনীবুড়ি এবং মিডিয়ার সেন্সরশীপ
লিখেছেন লিখেছেন উচিত কথা ০৫ নভেম্বর, ২০১৪, ০৭:০৩:৫১ সকাল
কুটনীবুড়ি সম্পর্কে আমরা সবাই কম-বেশী জানি। সাধারনতঃ কুটনীবুড়িদের কাজ হল গ্রামে কোন নতুন বউ এলে তার দোষ ধরে বদনামী করে বেড়ানো, অথবা কোথাও কারো বিয়ে ঠিক হলে তা হয় নিজের অভ্যাসগত কারনে কিংবা টাকা পয়সার বিনিময়ে ভেঙ্গে দেয়া।
এরকম এক কুটনীবুড়ির বোনের মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হল। বিয়েতে যথারীতি মেহমানসহ বরপক্ষ এলো। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার আগেই আপ্যায়ন করা হলো। আপ্যায়ন শেষে বিভিন্ন খোশ গল্প চলছিল। কোন এক কথা প্রসঙ্গে সেই কুটনীবুড়ি বলে উঠলেন, আরে ভাই গাঁয়েতো কত কথাই হয়! মানুষের নামে কত কথাইনা রটে বেড়ায়! এই ধরুন আমার কথা। আমাকে সবাই কুটনীবুড়ি বলে ডাকে। আমি নাকি মানুষের বিয়ে ভেঙ্গে দেই। পাত্রপক্ষের কাছে গিয়ে কন্যা সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলি। আচ্ছা ভাই, আপনারা যে আমাদের বাড়ীতে এলেন, খেলেন, একটু পর আমার বোনের মেয়ের সাথে আপনাদের ছেলের বিয়ে হবে। আমি কি আপনাদের একটা কথা বলেছি? উপস্থিত মেহমানরা বলে উঠলো, কোন কথা? কুটনীবুড়ি বলে উঠলেন, এই যে, আমাদের মেয়েটা এ বয়সেও বিছানা নষ্ট করে দেয়, বিছানায় প্রশ্রাব করে! কত ডাক্তার, কবিরাজ দেখিয়েছি কোন কাজই হয়না। গতকাল রাতেও সে এই অপকর্মটি করেছে। উপস্থিত মেহমানরা ছেলেকে বিয়ে না দিয়েই তওবা পড়তে পড়তে বিয়েস্থল ত্যাগ করলেন।
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে শেখ হাসিনার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের সুপার প্লফ খাওয়া জনসভায় বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে অত্যন্ত আপক্তিকর কথা -'বর্তমান সরকারকে কথায় কথায় খালেদা অবৈধ বলেন। উনি এতই জ্ঞানী হয়ে গেছেন! আমি বলব, আয়নায় নিজের চেহারা দেখলেই বোঝা যাবে। উনার ‘মেকআপ’, চুলের ‘উইগ’ দেখলেই বোঝা যায়। অবশ্য আমি সেটা বলছি না।"
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দাবীদার শেখ হাসিনার এ কথাটি আর সেই কুটনীবুড়ির কথাটির ধরনের মধ্যে প্রার্থক্য কোথায়? তিনি বুঝাতে চেয়েছেন তিনি কুটনামী করতে চাননা পক্ষান্তরে তিনি কুটনামীই করলেন।
তবে আশ্চার্য ব্যাপার হল দু’একটা মিডিয়া ছাড়া বেশীর ভাগ মিডিয়াগুলো তার সমাবেশের পুরো বক্তব্য তুলে ধরলেও এ অংশটুকো চেপে যান। ব্যাপারটা দেখে মনে হলো পত্রিকাগুলো হয়তো তাদের সেন্সরশীপ রীতি অনুযায়ী পত্রিকায় প্রকাশের অযোগ্য এ কথাগুলো বাদ দিয়ে গেছেন। যেমনটি সিনেমার বি. গ্রেড নায়িকাদের ক্ষেত্রে অথবা অশ্লীল দৃশ্যের ক্ষেত্রে করা হয়। দেশের জনগনের ভোটবীহিন প্রধানমন্ত্রী দাবীদার ব্যাক্তিটি কি এরকম গ্রেডিং এ পড়ে গেলেন কিনা? বড়ই ভাবনার বিষয়। শেখ হাসিনা যদি এরকম কুটনীবুড়িসূলভ আচরন করতেই থাকেন, আর এরকম সেন্সরশীপও যদি অব্যহত থাকে, তাহলে একসময় তিনি (শেখ হাসিনা) নিজেই যদি সেন্সরড হয়ে যান, তাহলে অবাক হবনা মোটেই।
________________মম, দাম্মাম, ০৫ নভেম্বর ২০১৪
বিষয়: বিবিধ
১৫৩৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নারিন্দা দরবার শরীফে অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান, সাবেক ত্রাণ খাওয়া প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকও উপস্থিত ছিলেন। মাহফিল শেষে একজন বললেন, "খায়রুল হক কে দেখে একটা চড় মারতে ইচ্ছা করল কিন্তু হুজুরের সম্মানে কিছু বললাম না"
"জন্মগত স্বভাব সহজে পরিবর্তন হয় না!"
"কয়লা ধুইলেও ময়লা যায় না!"
"বিষাক্ত ভাইরাস-রোগ জীবানু রক্তের প্রবাহেই বেশী বিস্তার লাভ করে"
অতএব..........................!!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন