আল্লাহু আক্বার মানুষের নয়! সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর। আমীর, ইসলামী সমাজ।
লিখেছেন লিখেছেন স্বপন২ ০১ জানুয়ারি, ২০১৭, ০৭:৪৯:৪৬ সন্ধ্যা
কল্যাণ ও মুক্তির পথে আসুন
আল্লাহু আক্বার
মানুষের নয়! সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর।
দেশের সকল নেতৃবৃন্দ এবং দেশবাসী সকল ভাই ও বোনদের প্রতি আন্তরিক আহ্বান–
আপনারা সংঘাত ও সংঘর্ষসহ সকল প্রকার আযাব-গযবের পথ পরিত্যাগ করে
কল্যাণ ও মুক্তির পথে আসুন!
বিতাড়িত অভিশপ্ত শয়তানের কুমন্ত্রনা থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে
অসীম দাতা ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
আসসালামূ আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!
সম্মানিত দেশের সকল নেতৃবৃন্দ এবং দেশবাসী ভাই ও বোনেরা,
আমরা মানুষ সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বূল আলামীনের সর্বোত্তম সৃষ্টি এবং পৃথিবীতে তাঁরই সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্বের প্রতিনিধি। সার্বভৌমত্ব হচ্ছে- মানুষের জীবনের সকল দিক ও বিভাগসহ সমগ্র সৃষ্টিজগতের চূড়ান্ত মালিকানা এবং হুকুম, নিয়ন্ত্রন ও পরিচালনা করার সর্বোচ্চ ক্ষমতা। সার্বভৌমত্বের মালিক যিনি তাঁর ইচ্ছা ও মতামত বা আদেশ ও নিষেধই আইন-বিধান এবং আইন প্রয়োগই হচ্ছে কর্তৃত্ব। সার্বভৌমত্ব যার, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব তারই হয়। সার্বভৌমত্বের মালিক হওয়ার জন্য চিরন্তন ও চিরস্থায়ী সত্ত্বা হওয়া অপরিহার্য্য বিধায়; আল্লাহই একমাত্র সার্বভৌমত্বের মালিক; মানুষ নয়। কেননা মানুষসহ কোন সৃষ্টিই চিরন্তন ও চিরস্থায়ী নয়। কাজেই মানুষের নয়, সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর এটাই মহা সত্য।
বিজ্ঞ নেতৃবৃন্দ ও দেশবাসী বন্ধুগণ,
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বের প্রতিনিধি হিসেবে মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে, জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহকেই সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক মেনে তাঁরই প্রদত্ত্ব আইন-বিধানের ভিত্তিতে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে দেশ ও জাতি পরিচালনা করা। তাহলেই সমাজ ও রাষ্ট্রে মানুষের জীবনে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সকল ধর্ম ও মত পথের সকল মানুষের মৌলিক অধিকারসহ সকল অধিকার আদায় ও সংরক্ষণ হবে। আর যারা আল্লাহরই সার্বভৌমত্বের প্রতি ঈমানের ভিত্তিতে আল্লাহরই সর্বশেষ নাবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’এর অনুসরণ ও অনুকরণে জীবন গঠন ও পরিচালনা করবেন তারা আখিরাতে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে জান্নাত লাভ করবেন।
সম্মানিত নেতৃবৃন্দ এবং বিজ্ঞ দেশবাসী,
মানুষ সমাজবদ্ধ জীব, মানুষের প্রয়োজন ও কল্যাণেই সমাজ ও রাষ্ট্র। সমাজ ও রাষ্ট্রের মূল বিষয় সার্বভৌমত্ব। সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সার্বভৌমত্ব হচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্রের মালিকানা এবং সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের সর্বোচ্চ ক্ষমতা। মানুষ যখন তাদের সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনায় সার্বভৌমত্ব মানুষের এ মহা মিথ্যার ভিত্তিতে মানুষেরই মনগড়া আইন-বিধান দ্বারা সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা করে তখনি তাদের উপর আল্লাহর বিশেষ রহমতের পরিবর্তে তাঁরই আযাব-গযব অবতীর্ণ হতে থাকে এবং গযবের মাত্রা ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে তীব্র হয়। কেননা সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব মানুষের মেনে নেয়ার অর্থ হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে চরম বিদ্রোহ-শিরকে আকবার এবং মারাত্মক কুফুরী, ক্ষমার অযোগ্য মহা অপরাধ। এটাই দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের মূল উৎস এবং আল্লাহর ক্রোধ বৃদ্ধির মূল কারণ। সুতরাং সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় মানুষের সার্বভৌমত্ব এবং মানব রচিত ব্যবস্থা মূলতঃ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আযাব-গযবের পথ। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, এসিডবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস, ভূমিকম্প, ভূমিধ্বস ইত্যাদি এবং অর্থ সম্পদ ও ক্ষমতার মোহে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে মানুষে মানুষে দ্বন্ধ, সংঘাত ও সংঘর্ষ এসবই মূলতঃ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আযাব-গযব।
বিভিন্ন জোট ও দল সমূহ এবং দেশের সকল প্রতিষ্ঠানের সম্মানিত নেতৃবৃন্দ ও প্রিয় দেশবাসী,
আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় মানব রচিত ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশ ও জাতির মানুষ সার্বভৌমত্ব মানুষের মেনে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে তাঁরই সার্বভৌমত্বে শিরক ও কুফরীতে লিপ্ত হয়ে মহা ক্ষতিতে নিমজ্জিত। শিরক ও কুফুরীর পরিণতি সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ফরমান- যদি তুমি শির্ক করো, তবে তোমার সকল আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তুমি ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হবে (সুরা আয যুমার:৬৫)।
পবিত্র কুরআনের সুরা ফাতিরের ৩৯ আয়াতে আল্লাহ বলেন- আর কুফরকারীদের কুফুরী তাদের রব্বের নিকট ক্রোধ ছাড়া অন্য কিছু বৃদ্ধি করেনা এবং কুফরকারীদের কুফুরী তাদের জন্য ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করেনা ।
শির্ক ও কুফুরীর পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ আরও ফরমান- নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শির্ক করবে, আল্লাহ তার উপর (তার জন্য) জান্নাত হারাম করে দিবেন, আর তার স্থায়ী ঠিকানা হবে (জাহান্নামের) আগুনে এবং জালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। (সুরা মায়েদা:৭২ আয়াতের শেষাংশ)।
পবিত্র কুরআনের সুরা মুলক’এর ৬নং আয়াতে আল্লাহ বলেন- আর যারা আপন রব্বের সাথে কুফুরী করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব, আর এটা হচ্ছে অত্যন্ত মন্দ ঠিকানা। শির্ক প্রসংগে আল্লাহ আরও বলেন- তুমি আরো বলো, তিনি (আল্লাহ) তোমাদের উপর উপরের দিক থেকে কিংবা তোমাদের পায়ের নীচ থেকে আযাব-গযব পাঠাতে সক্ষম। তিনি তোমাদের দল উপদলে বিভক্ত করে একদলকে আরেক দল দ্বারা স্বাদ গ্রহণ করাতেও সম্পূর্ণরুপে সক্ষম (সুরা আনআম:৬৫)।
মানুষের সার্বভৌমত্ব মেনে নেয়ার কারণেই অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ইত্যাদি উপরের দিকের আযাব এবং জলোচ্ছাস, ভূমিকম্প ইত্যাদি নীচের দিকের আযাব-গযবের শিকার দেশ ও জাতি এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আযাব গযব-এর অংশ হিসাবেই জাতি আজ বিভিন্ন জোট ও দলে বিভক্ত হয়ে সংঘাত ও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে ধ্বংসের মুখোমুখি। মানুষের সার্বভৌমত্বের অধীনে জীবন যাপনের স্বাভাবিক পরিণতি আখিরাতেও নিশ্চিত জাহান্নাম। সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় মানুষের সার্বভৌমত্ব অমান্য ও পরিত্যাগ করে সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহর মেনে না নিলে এবং আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’এর অনুসরণ ও অনুকরণে জীবন গঠন এবং সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত চেষ্টা না করলে কল্যাণ ও মুক্তি লাভ আদৌ সম্ভব নয়। মানুষের সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে মানব রচিত ব্যবস্থা দ্বারা সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালিত হতে থাকলে আল্লাহর বিভিন্ন প্রকার আযাব-গযব এবং ভয়াবহ সংঘাত ও সংঘর্ষের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে জাতির অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যেতে পারে।
সম্মানিত নেতৃবৃন্দ এবং প্রিয় দেশবাসী ভাই ও বোনেরা,
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে সকল মানুষের কল্যাণে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে একমাত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং তাঁরই প্রদত্ত্ব একমাত্র জীবন ব্যবস্থা ইসলাম-এর ভিত্তিতে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনার জন্যই ইসলামী সমাজ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীর মাধ্যমে ঈমানী দায়িত্ব পালন করছে। মানুষের সার্বভৌমত্ব এবং মানব রচিত ব্যবস্থার আনুগত্যের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে একমাত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্বের প্রতি ঈমানের এবং তাঁরই প্রদত্ত্ব ব্যবস্থার আনুগত্যের অঙ্গীকারের দাওয়াতের মাধ্যমে দাওয়াত কবুলকারীদের নিয়ে “ইসলামী সমাজ” গঠন আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকা এবং সকল প্রকার বিরোধীতার মোকাবিলার দায়িত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট ছেড়ে দিয়ে উত্তম ধৈর্য্য ও ক্ষমার নীতিতে অটল থেকে ঈমানের সর্বোচ্চ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই ঈমানদার সৎকর্মশীলদেরকে
রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা আল্লাহ দিবেন আর তখনি ঈমানদারগণ সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর আইন চালু করবেন। এটাই সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত পদ্ধতি। সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না থাকলে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত চেষ্টা করাই আল্লাহর ক্ষমা ও জান্নাত লাভের উপায়, এটাই কল্যাণ ও মুক্তির পথ।
সংঘাত ও সংঘর্ষসহ সকল প্রকার আযাব-গযবের পথ পরিত্যাগ করে কল্যাণ ও মুক্তির পথে আসার আন্তরিক আহ্বান-
সম্মানিত নেতৃবৃন্দ এবং প্রিয় দেশবাসী ভাই ও বোনেরা,
ইসলামী সমাজ-এর নেতা ও কর্মীগণ উত্তম ধৈর্য্য ও ক্ষমার নীতিতে দৃঢ় থেকে সকল প্রকার দুর্নীতি, সন্ত্রাস, উগ্রতা, জঙ্গীতৎপরতা নির্মূলে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছে। মানুষের সার্বভৌমত্ব এবং মানব রচিত ব্যবস্থা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আযাব-গযবের পথ বিধায়; সকল প্রকার মানব রচিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে “ইসলামী সমাজ”এর দৃঢ় অবস্থান। দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণে দেশের বৃহৎ দুই জোটের দুই নেত্রীসহ দেশের সকল নেতৃবৃন্দ এবং দেশবাসী সকল ভাই ও বোনদের প্রতি আমাদের আন্তরিক আহ্বান- আপনারা সকলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আযাব-গযবের পথ- সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় মানুষের সার্বভৌমত্ব ও মানব রচিত ব্যবস্থা পরিত্যাগ করে একমাত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং তাঁরই প্রদত্ত্ব জীবন ব্যবস্থা ইসলাম এর ভিত্তিতে সমাজ ও রাষ্ট্র এবং মানুষের জীবনের সকল দিক-বিভাগ গঠন ও পরিচালনার লক্ষ্যে কল্যাণ ও মুক্তির পথে আসুন এবং এ লক্ষ্যে ইসলামী সমাজে এ শামিল হয়ে সার্বিক সহযোগিতা করে সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং তাঁর প্রদত্ত্ব কল্যাণকর ও পরিপূর্ণ একমাত্র জীবন ব্যবস্থা ইসলাম প্রতিষ্ঠার ঈমানী দায়িত্ব পালন করুন।
সার্বভৌম ক্ষমতার একমাত্র মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামীনই আমাদের একমাত্র সহায় ও সাহায্যকারী, আমরা তাঁর উপর পূর্ণ ভরসা করছি, সকল প্রশংসা একমাত্র তাঁরই। আমীন!
সকলের সার্বিক কল্যাণে- সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠায়
আল্লাহর সার্বভৌমত্বের প্রতিনিধিত্বকারী নেতা
সৈয়দ হুমায়ূন কবীর
আমীর, ইসলামী সমাজ।
বিষয়: বিবিধ
১২৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন