মুভি পর্যালোচনাঃ “নামতে নামতে” এই মুভিটাকে মনে হয়েছে আমাদের ঘুণে ধরা সমাজের প্রতিচ্ছবি।
লিখেছেন লিখেছেন বাধনহারা ০৭ জুলাই, ২০১৩, ০৩:২১:০৭ দুপুর
মুভির কথা শুনে হয়তো কেউ বলবেন অলীক কল্পনা!!
হয়তো তাই, তবে সবার মনে রাখা উচিত যে গল্প উপন্যাস নাটক সিনেমা তৈরি হয় সমাজের প্রচলিত কাহিনী, ঘটনা, প্রবনতাকে ঘিরে। আগামী একশ বছর পরে আপনার আমার ইতিহাস হয়তো লেখা থাকবেনা, কিন্তু সবার জীবন যাত্রা বুঝতে তখন এসব উপাদান ই হবে মুখ্য উপাদান। যা আমরা আজকে পুরনো ইতিহাস লিখতে ব্যাবহার করি।
মুভিটির নাম “নামতে নামতে”।
এর মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন কলকাতার ভিলেন চরিত্রে বিখ্যাত “রনিদা”।
“রনিদার এক ছেলে এক মেয়ে সুখী সংসারই হবার কথা হতও তাই যদিনা আমাদের সমাজের সমস্যা গুলো না থাকতো! কলেজে পড়া মেয়ে বাড়িতেই থাকতো। ছেলেটা হোস্টেলে থাকতো। তার চরিত্র এখানে একজন নিরীহ গোবেচারা।পাড়ায় থাকেন অথচ এলাকার কাউকে চিনেনা অফিসের বড়বাবু তিনি কিন্তু সবার মত টাকা জমানোর মত বুদ্ধি তার নেই। তাকে যদি কেউ শালা বলে গালি দেয় তাহলে সে ভাই বলে চলে আসে।
বাসার মালিক প্রতিদিন বাসা ছাড়ার জন্য বলে গালিগালাজ করে। একদিন পানি বন্ধ করে দেয় বাসার সবাইকে খুব অপমান করে। এদিকে এলাকার একটি ক্লাবে কটা ছেলে সর্বক্ষন আড্ডা দিত। সে পয়হ দিয়ে যাবার সময় রনিদার মেয়েকে সবসময় উত্যক্ত করত। একদিন রনিদা রাতে পাড়ার মাস্তানটাকে একটি খুন করতে দেখে ফলে সে খুব ভয় পেয়ে যায়। তবে সেকথা সে আর কাউকে বলেনি।
তো পানি বন্ধ করা থেকে শুরু করে রনিদা অনেক সমস্যায় পরে তা থেকে উদ্ধারের জন্য সে বাধ্য হয়ে মাস্তান টোকার সাহায্য নেয়। কিন্তু তার স্ত্রী খুব রাগ হলেও তার কিছু উপায় ছিলনা।সে বলতো "তুমি একটা খারাপ লোককে শাস্তি দিতে আরেকটা খারাপ লোকের সাহায্য নিলে নিজেই একসময় এর ফাদে পড়বে। রনিদা সরল মনে বলে খারাপ লোক বলছ কেন সে তো আমাদের উপকারই করছে!!!
রনিদা মেয়েকে পড়ানোর জন্য একটি ছেলেকে ঠিক করলে সে ছেলেটির সাথে মেয়ের সম্পর্ক হয়ে যায়। মেয়েটি অনেকদিন লুকিয়ে লুকিয়ে তার সাথে দেখা করে। একদিন বাসায় কেউ না থাকায় ছেলেটি বাসায় আসে ও মেয়েটির সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়ে। তা আবার মেয়ের মা সরাসরি দেখে ফেলে। ছেলেটি সে যাত্রায় পালিয়ে যায়। কিন্তু রনিদা সমাজের ভয়ে মুখ বন্ধ করে রাখেন। মেয়েকে মামার বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
এদিকে ছেলেটির নজর বন্ধ করতে রনিদা বাধ্য হয়েই আবার টোকার কাছে গেলে টোকা এবার তার মেয়েকে তার হাতে তুলে দিতে বললে রনিদার স্ত্রী তা অস্বীকার করেন। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে রনি দা টোকার কথার সামনে হাটু কাপতে থাকেন। কোন কথা বলা তো দূরে থাক। নির্দিষ্ট সময়ে মেয়েকে না পাঠালে টোকা বাড়িতে এসে রনিদাকে মারধোর শুরু করলে তাকে মার থেকে বাচাতে স্ত্রী নিজেই তার কুপ্রস্তাবে রাজী হলে রনিদার সামনেই তাকে.........”
এখানে দেখা যায় রনিদা নিজের ব্যাক্তিত্ব না থাকার কারনে আরেকজন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারেননা ।
কোন অপরাধী যদি সাহায্য করেও থাকে তার থেকে তিনি সতর্ক না থেকে বরং তিনি তার দিকে আরও ঝুকে পড়েছিলেন। তিনি সরল মনে ভেবেছিলেন সে তার উপকার করছে। ফলে তাকে সর্বস্ব খোয়াতে হয়েছিল।
যথেষ্ঠ সম্পত্তি না থাকার কারনে তিনি সবসময় কোণঠাসা হয়ে থাকতেন। ফলে তাকে মাস্তানের সাহায্য নিতে হয়।
আরেকদিকে দেখা যায়, পড়ানোর নাম করে ছেলেটি কিভাবে মেয়েটির সর্বনাশ করে। যে মেয়েটিকে তার বাবা মা কত আদর কত ভালবাসা স্নেহ দিয়ে বড় করেছেন সেই মেয়েটিই তাদের সর্বনাশের কারন হয়ে দাঁড়ায়।
সত্যি বলতে কি? এখন রাত ৩ টা বাঝে আমি সাধারণত ১২.৩০ এর মাঝে ঘুমিয়ে গেলেও আজ আমার ঘুম আসছেনা!!(যখন লিখেছি)
ভাবতে কষ্ট হচ্ছে, এই ঘটনা হয়তো হুবহু কারো জীবনে ঘটেনা কিন্তু এমন ঘটনার সন্ধান তো আমরা আমাদের সমাজে অহরহই ঘটে থাকে!!!
কিন্তু আমরা কি সেখান থেকে পুরোপুরি কখনো সেখান থেকে বেরিয়ে আস্তে পেরেছি বা কখনো কি চেস্টা করেছি?
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন