তারেক রহমান একজন রিফিউজি বাংলাদেশী
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ২৬ এপ্রিল, ২০১৮, ০৬:১৯:২৭ সন্ধ্যা
আমাদের দেশে গ্রাম্য কিছু প্রবাদ আছে যা অসামান্য অর্থ বহন করে থাকে। অনেক শিক্ষা গ্রহণ করা যায় এসকল প্রবাদ থেকে। কিন্তু প্রশ্ন হলো ক'জনে সে শিক্ষা গ্রহণ করে? বরঞ্চ, ডিগবাজীর রাজনীটিতে সেই প্রবাদগুলো নিজেদের আমলে খাইছলতে একাকার করে নিয়েছে কিছু রাজনৈতিক দল ও দলের নেতারা। শুধু রাজনৈতিক দলই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি থেকে শুরু করে অনেক উচ্চ মার্গীয় শিক্ষিত জনেরাও সাময়িক সুযোগ সুবিধার লোভে ডিগবাজীতে একাকার হয়ে হয়ে যান। আর বুদ্ধি বেচা কেনা যারা করেন,অর্থাৎ বুদ্ধিজীবিরা তারা ত তাদের ব্যবসার স্বার্থে কখনো দিনকে রাত আর কখনো রাতকে দিন বানিয়ে ফেলেন। এতে করে এসকল রাজনৈতিক দল,নেতা, শিক্ষিত জন, বুদ্ধিজীবিরা নিজেদেরকে শুধু ছোট করে থাকেন, মানুষ তাদেরকে দূর দূর, ছি ছি করে।
এমন কথা বল - কেউ না বলে দূর
এমন যায়গায় বস- কেউ না বলে সর।
-
মুখের বুলি আর বন্ধুকের গুলি - একবার বের হলে আর ফেরানো যায় না।
এই কথাগূলোর মিনিং বিজ্ঞজনেরা পড়ামাত্রই বুঝে নিয়েছেন। আমি আর মিনিং তুলে ধরতে গিয়ে লেখাটা লম্বা করছি না। যারা এই প্রবাদ গুলো মেনে চলার কথা ছিল তারা মানছে না। এতে করে তারা নিজেরাই রাষ্ট্রে, সমাজে দূর দূর, হাসি তামাশার পাত্রে পরিনত হচ্ছে নিয়মিত। মাত্র কিছুদিন আগে কোটা বিরোধী আন্দোলন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেত্রী এশা কর্তৃক অপর ছাত্রীর রগকাটা নিয়ে একেবারে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে মন্ত্রী এমপি, বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রশাসনের কথাবার্তা, আচরণে আমার কাছে তাইই মনে হয়েছে। কোটা বিরোধীরা চাইলো সংস্কার, আর সরকার প্রধান হোট করে বলে ফেললেন কোনো কোটাই থাকবে না। এতে কী হলো? উনার কথা নিয়ে মানুষ সন্দেহ সংশয় করলো, হাসি তামাশা করলো। অথচ, তিনি এটা না বললেও পারতেন। তিনি বলতে পারতেন, যেহেতু কথা উঠেছে আমরা ভেবে দেখবো। পরে তিনারা ভেবে দেখতে পারতেন।এভাবে হোটহাট বলে ফেলাতে এখন অবস্থা এমন হয়েছে যে তিনি কিছু বললে মানুষ আর বিশ্বাস করতে চায় না। ঢুগঢুগি বাজানো নেত্রী আন্দোলনকারী সকল ছাত্র ছাত্রীকে রাজাকারের বাচ্চা বলে মহান সংসদে গালি দিলেন। হলোটা কী? সারা দেশজুড়ে রাজাকারদের মিছিল শুরু হলো,মানুষ দলে দলে রাজাকার হতে লাগলো। রাজাকার বলে বুলি ছুড়ার কী দরকার ছিল?
তার গালিতেই বুঝা গেল তিনারা সমঝোতায় নয়, হুমকি দমকি, ভয় দেখিয়ে, পুলিশ দিয়ে যে কোনো আন্দোলন দমাতে চান। আর হচ্ছেও সেটাই। এশার ব্যাপারে ভিসি মহোদয় রাতে বললেন, তিনি সব ধরনের খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পেরেছেন, এশা খুব বড় গোনাহ করে ফেলেছে। তার স্থান নেই ভার্সিটিতে! ডিরেক্ট বহিস্কার এশার জান্নাত থেকে। পরদিন ভোর না হতেই এশাকে পবিত্রতার সার্টিফিকেট! এশার মত হুরকে আবার তার জান্নাতে বিপুল সংবর্ধনায় প্রতিস্থাপন। কী দরকার ছিলো আগের দিন রাতর এই নাটক? এই নাটক না করেও ত বলা যেত, প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এতে কি ভিসি মহোদয়ের মান মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে? আর ছাত্রলীগের কথা এখানে না হয় কিছুই বললাম না।
আমার এতকিছু বলার কারণ হলো উপরের প্রবাদের যথার্থতা তুলে ধরা। মানুষ একটা বুলি ছুড়ে দিয়ে কিভাবে হেস্তনেস্ত হতে পারে তার প্রামাণ্যচিত্র। এই চিত্র কল্পনায় দেখে নিবেন।
আসি তারেক রহমান প্রসঙ্গ নিয়ে। ব্যক্তিগতভাবে আমি তারেক রহমানকে পছন্দ করিনা। পছন্দ না করার অনেক কারণ আছে। আমার আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সেটা নয় বলে আমি সে দিকে যাচ্ছি না। আবার আমি পছন্দ করি না বলে অন্যরাও যে পছন্দ করে না সেটা নয়। অন্যরা পছন্দ করে এবং বাংলাদেশে তারেক রহমানের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা আছে। এই জনপ্রিয়তাই সরকারের ভয়ের কারণ। যার কারণে দূর প্রবাসে থেকেও সে সরকারের রোষানল থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।দেশের সব ধরনের মিডিয়া যখন তারেক বিষয়ে নীরব তখন উদ্ভট উদ্দেশ্য প্রণোদিত কথা বলে মিডিয়াকে সরব করছেন স্বয়ং মন্ত্রীরা। এতে করে সরকারের হীন মানসিকতা আর দৈন্যতাই ফুটে উঠছে, তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা বাড়ছে বৈ কমছে না। সেই উদ্ভট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত কথামালার এখন পর্যন্ত শেষ পেরেক হচ্ছে তারেক রহমান পাসপোর্ট জমা দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব স্বেচ্ছায় বিসর্জন দিয়েছেন।
মিডিয়ায় হৈচৈ শুরু হলো। পক্ষে বিপক্ষে নানান মত ও যুক্তি। বক্তব্য বিবৃতি চলছে পক্ষে বিপক্ষে। যারা জানে তারাও তুলে ধরছে তাদের মতামত। যারা জানে না তারাও ইনিয়ে বিনিয়ে কতকিছু লিখতেছে। সকলের জ্ঞাতার্থে আমার এই লেখা। তারেক রহমান বর্তমানে একজন রিফিউজি বাংলাদেশী। যদি তিনি বিলাতে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়ে থাকেন। যখন কোনো মানুষ অন্য কোনো দেশে তার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন এবং তার প্রার্থনা সে দেশ গ্রহণ করে তখন সেই ব্যক্তি আশ্রিত দেশে একজন রিফিউজি হিসাবে বসবাসের সুযোগ পান। সেই দেশ আশ্রয় প্রার্থনাকারীর যাবতীয় নিরাপত্তা বিধান করে থাকে। রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে গেলে আপনি যে দেশেরই হোন না কেন প্রথমেই আপনার পাসপোর্ট আশ্রয় প্রদানকারী দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিতে হবে। আপনার আবেদন মঞ্জুর হলে আপনি সে দেশের পাসপোর্ট না পেলেও পাসপোর্টের মত করে একটা ট্রাভেল ডকুমেন্ট পাবেন। যা দিয়ে আপনার নিজ দেশ ছাড়া অন্যান্ন সব দেশেই যাতাযাত করতে পারবেন। কিছুদিন পর আপনি চাইলে আপনার স্ট্যাটাস চেঞ্জ করে আপনি সে দেশের জাতীয়তাও নিতে পারেন। চাইলে আপনি আপনার রিফিউজি স্ট্যাটাস চেঞ্জ করে আপনার দেশীয় পাসপোর্ট গ্রহণ করে সে দেশে বসবাস করতে পারবেন। কিন্তু কেউই রিফিউজি স্ট্যাটাস গ্রহণ করার ফলে তার নিজ দেশের নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে যায় না। এই সুস্পষ্ট বিষয়টা নিয়ে সরকার কেন বালখেল্য কথাবার্তা বলছে আমার ছোট্ট মাথায় ঢুকছে না। তবে এটা নিশ্চিত, শুধুমাত্র তারেক ভয় থেকেই সরকারের এই দুর্নিবার প্রচারণা।
বিষয়: রাজনীতি
১৩০০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন