ইনুর পয়সা তত্ত্ব ও আওয়ামিলিগের ফ্যা ফ্যা
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১০ নভেম্বর, ২০১৭, ০৮:০৫:৫৬ রাত
একটা গল্প দিয়েই শুরু করা যাক। গল্পটা হলো এরকম, এক লোক খুব শখ করে একটা বানর পালে। প্রতিদিন বানরকে তিনবেলা খাবার দেয়। খাবার খাওয়ার সময় বানর কাছে আসে। খাবার খাওয়া শেষ হলে বানরকে লাঠি দিয়ে দুই ঘা লাগিয়ে বিদায় করে। এটা দেখে কৌতুহলী হয়ে একজন জানতে চাইলো তার কারন কি? লোকটি বললো, কারণ জানতে চাইলে মাত্র তিনদিন একই সময়ে এসো। তৃতীয় দিন জানাবো। তারপর,প্রথম দিন খাবার শেষে লোকটি বানরকে কোনো আঘাত করলো না। এতে বানর লোকটির হাঁটুর উপর উঠে বসলো। দ্বিতীয় দিন একই ভাবে খাবারের পর বানরকে কোনো আঘাত করা হলো না। বানর লোকটির ঘাড়ে ওঠে বসলো। তৃতীয় দিনও খাবার খাওয়ানোর পর বানরকে আঘাত করা হলো না। বানর লোকটির মাথায় চড়ে বসলো। তৃতীয়দিন শেষে কৌতুহলীকে আর বলতে হয় নি খাবার খাওয়ানোর পর বানরকে কেন লাঠি দিয়ে দুই ঘা লাগানো হত।
দারউইন বলেছিলেন,বানর থেকে মানুষের সৃষ্টি। নিঃসন্দেহে এটা একটা কুফরি মতবাদ। কিন্তু তিনি যদি বলতেন,মানুষ ও বানরের মধ্যে আচরণগত অনেক মিল আছে তবে তা অনেকটা সহজে মানা যেত।বিশেষ করে এই সময়ে। যে ইনু সাহেব ৭৫ এর ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর খুশিতে ট্যাংকে উঠে খেমটা তালে নেচেছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পেছনের ইন্ধনদাতা যে জাসদ সেই দল ও দলের নেতাকে আওয়ামিলিগ খাইয়ে পুষিয়ে বড় করছে তারা আজ আওয়ামিলিগের মাথায় চড়ছে। আজ ইনু সাহেবের অবস্থাদৃষ্টে তাই ই মনে হচ্ছে।
তবে ইনু সাহেব পয়সা তত্ত্ব আবিষ্কার করে পয়সা তত্ত্বের জনক হিসাহে অমর হয়ে থাকবেন। যদিও তার এই পয়সা তত্ত্বে বড় ধরনের ফাক রহিয়াছে। তিনি নিজেকে ২০ পয়সায় উত্তীর্ণ করেছেন। কিন্তু আসলেই কি তিনি সেই মানে উত্তীর্ণ? ২০ পয়সার সাথে তিনি আরো কিছু যোগ করছেন। যদিও এরশাদ ছাড়া আর কেউই ২০ পয়সার মানে উত্তীর্ণ নন। ইনু সাহেব সহ অন্য সকলেই ১ পয়সা মানে উত্তীর্ণ নন,তা একটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাদেরকে প্রার্থী করে দিলেই প্রমান বেরিয়ে আসবে।
তিনি আরো বলেছেন, এই ২০ পয়সা না হলে আওয়ামিলিগ এক হাজার বছরেও ক্ষমতার মুখ দেখবে না;রাস্তায় ফ্যা ফ্যা করে ঘুরবে। এটা বলে তিনি আওয়ামিলিগের মাথায় বসে বানরের মত করে গালে তাপ্পড় দিচ্ছেন। আওয়ামিলিগ তাকে মাথা থেকে নামাবে কি না এটা আওয়ামিলিগের বিষয়। তবে ইনু সাহেবের এই কথার সাথেও একমত হতে পারছি না। কেননা, ৮০ পয়সা হোক আর ২০ পয়সা হোক সব মিলে ১০০ পয়সা হলেও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এই পয়সা দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া ত দূরের কথা উনারা একটা লেবেনচুষ ও পাবেন না বলে মনে হয়। মানুষ একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে। তখন সবে মিলেও আওয়ামিলিগের ফ্যা ফ্যা দূর করতে পারবেন না। কিন্তু আওয়ামিলিগ নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচন হলে ইনু বিনু কারো প্রয়োজন হবে না আওয়ামিলিগের। তখন তারা একাই একশ। বাকি সকলেই তখন ফ্যা ফ্যা নয় ভ্যা ভ্যা করে ঘুরবেন।
বিষয়: রাজনীতি
১০৭০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
৮০ পয়সা আর ২০ পয়সার তত্ত্ব যেটা উনি দিয়েছেন আমার কাছে সেটা বোকামী মনে হয়েছে । কারণ গনতণ্ত্রে ১০০ এর মধ্যে ৫১ টা পয়সা পেলেই সংখ্যা গরিষ্ঠতা হয়ে যায় । আর ৮০ পয়সা পেলে সংবিধান সংশোধন করার ক্ষমতা পেয়ে যায় । তখন ৪৯ পয়সা বা ২০ পয়সাও তার অধীনে থাকতে / চলতে বাধ্য হয় ।
১৯৯৬ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ১৪৮ টি আসন আর বিএনপি পেয়েছিল ১১৬ টি।
১০০ পয়সার শতকরা হিসেবে আওয়ামী লীগ ৫০ পয়সাও পায় নি (৪৯.৩৩ পয়সা) এবং বিএনপি ২০ পয়সার বেশী পেয়েছিল (৩৮.৬৬)।
আর ইনুরা সাথে না থাকলে আওয়ামী লীগ ১০০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না বরং রাস্তায় ফ্যা ফ্যা করে ঘুরবে - এই কথা ইনু সাহেব নিশ্চয়ই কোন একটা কারণ জানেন বলেই বলতে পারছেন , নচেৎ এরকম অপমানমূলক ফাঁপড় আওয়ামী লীগ হজম করতেছে কিভাবে ? আওয়ামী লীগের কি এমন দশাই হয়ে গেছে যে পাড়াতো নির্বাচনেও জামানত হারানো ইনুদের মত বামদের এসব ফাঁপড় সহ্য করতে হচ্ছে ?
মূলত ইনুর যোগ্যতা হল - আওয়ামী লীগের যে কারও চাইতে উনি বিএনপি , জিয়া , খালেদা জিয়াকে নিয়ে কাবযাব করতে পারেন বেশী । যেটা তার জোটের প্রধান খুবই পছন্দ করেন বলে আওয়ামী লীগের বড় বড় পান্ডাদের চেয়েও উনি ইনুকে একটা পূর্নমন্ত্রীত্বের পদে অলংকৃত করেছেন।
জীবনে কখনও ১০০ টা ভোটও না পাওয়া ইনুকে বহাল তবিয়তে মন্ত্রীত্ব উপভোগ করতে দেখে আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে নেতাদের হিংসে তো হবেই।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন