বঙ্গবন্ধু কি খুবই ভয়ংকর?
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ২২ জুলাই, ২০১৭, ০৬:২৪:২০ সন্ধ্যা
আলম মুহাম্মদ
--------------------------------
একটা শোনা গল্প দিয়ে শুরু করি। এক গ্রামে ছিলো ভয়ংকর প্রকৃতির এক লোক।চুরি, ডাকাতি,ধর্ষণ, এহেন কোনো ঘৃণ্য কাজ নেই যা সে করে নি। তার কারনে গ্রামের মানুষ ছিলো খুবই অতিষ্ঠ। হঠাৎ করে সেই লোকটি অসুস্থ হয়ে পড়লো এবং বুঝতে পারলো সে আর বেশিদিন বাঁচবে না। মনে মনে ফন্দি আঠলো, মরেও গ্রামের মানুষদের শান্তিতে থাকতে দেবে না। এমন কাজ করবে যাতে মারা যাওয়ার পর মানুষ আফসোস করে বলে যে লোকটি না মরাই ভালো ছিলো। গ্রামের মানুষকে ডাকলো। সবাই জড়ো হলো। সে সকলের কাছে কেঁদে কেঁদে মাফি চেয়ে নিলো। বললো, আমি জানি আপনাদের সাথে যে আচরণ করেছি সেই আচরণের কোনো মাফ নেই। তাই আপনাদেরকে সবিনয় অনুরোধ, আমি মারা যাওয়ার পর আমার লাশ চৌরাস্তার মুখে উঁচু বাঁশের মাথায় লটকিয়ে দেবেন। যাতে করে সকলেই দেখতে পারে যে আমার কি শাস্তি দিচ্ছেন আপনারা। এতে আপনাদের মনও কিছুটা হলে খুশি হবে।
গ্রামের মানুষ তার এই অনুরোধে অনেক খুশি। মনে মনে বললো, শালা তোমাকে ঝুলাবো না ত কি করবো। একটা দিনের জন্যও আমাদেরকে শান্তিতে রাখো নি। লোকটি মারা গেলে তার লাশ কথামত ঝুলিয়ে দেয়া হলো। সবাই খুশি,মনের ঝাল কিছুটা হলেও মিটেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে গ্রামে পুলিশ এলো, মানুষ মেরে লাশ ঝুলিয়ে রাখার অপরাধে গ্রামের লোকজনকে ধরে নিয়ে গেলো। এখন মানুষজন বলতে লাগলো, লোকটি মরেও আমাদের শান্তি দিলো না।
গল্পটি এখানেই শেষ। তবে ,গল্পের রেশ যেন এখনো কাটতে চাইছে না। বিশেষ করে আমাদের মগের মুল্লুকে। আমাদের মুল্লুকের মগ রাজারা মগামি করতে করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পর্যন্ত গ্রামের সেই মরা লাশের পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু মরিয়াও যেন দেশের মানুষকে নিস্তার দিচ্ছেন না।বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিছু বললে,করলেও নিস্তার নাই। আবার না বললে, না করলেও নিস্তার নাই। বঙ্গবন্ধুর নামে কিছু না করলে চাকরি থাকবে না। আর করলে জেল জুলুম। যার সর্বশেষ শিকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও তার উপর মামলাকারী ব্যক্তি। দুজনেরই উদ্দেশ্য ছিলো মহৎ। অর্থাৎ, নেতার প্রতি ভালবাসার প্রকাশ। কিন্তু,বিধি বাম। একজন ভালবাসা দেখাতে গিয়ে জেলে। আর অন্যজন অতি ভালবাসা দেখাতে গিয়ে বহিস্কার!!!
শোনেছি, লোকটা নাকি খুবই সৎ। যাক , অবশেষে সৎ থাকার পুরস্কার স্বরুপ জেলের ভাত। এটা আমাদের মগের মুল্লুকে খুবই স্বাভাবিক। যেই মুল্লুকে শতভাগ দূর্নীতিমুক্ত থাকার পরও সাবেক মন্ত্রীদেরকে ৪৫ বছরের আগের কল্প কাহিনী দিয়ে ফাঁসি দিতে পারে সেই মুল্লুকে সামান্য এক উপজেলা অফিসার ত তাদের কাছে নস্যি।মজার ব্যাপার হলো, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জেলে ঢুকানো হলো কারো কোনো কথা নেই। আর যখনই নেত্রী মুখ খুললেন, সাথে সাথে আরো অনেকের মুখের কপাট খুলে গেলো। আমাদের বিবেকবোধও এখন কাজ করে নেত্রীর মনোভাবের উপর। আওয়ামীলীগ বঙ্গবন্ধুকে এখন একটা ভয়ংকর পর্যায়ে নিয়ে পৌঁছিয়েছে।
বিষয়: রাজনীতি
৭৪৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন