প্রবাসের ঈদ-নামাজ পড়েই নিদ
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ২৭ জুন, ২০১৭, ০৮:৫২:০৬ রাত
বাবা তুমি কেমন আছো? এবারের ঈদ কেমন কেটেছে? সেমাই সন্দেশ কি খেয়েছিস? দেশ থেকে বাবা মা তাদের প্রত্যেক প্রবাসী সন্তানকে এই কমন প্রশ্নগুলো করে থাকেন। জ্বি মা,খুব ভালো আছি। ঈদ খুব ভালো কেটেছে। সেমাই সন্দেশ নিজের হাতে বানিয়ে খেয়েছি। একগাল হাসি দিয়ে এই সাবলীল জবাব দিয়ে থাকেন প্রত্যেক প্রবাসী। কিন্তু এই হাসির আড়ালে কতশত যন্ত্রণা লুকিয়ে থাকে তা একমাত্র প্রবাসীরাই জানেন। বছরের পর বছর বাবা মা,ভাই বোন, স্ত্রী সন্তানসহ অসংখ প্রিয়জনদের থেকে দূরে অবস্থান করে ঈদ কতটা আনন্দের হতে পারে তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানে। আর সত্যিকার অর্থে দেশেও বাবা মা, স্ত্রী সন্তানরা তাদের প্রিয়জনকে দূরে রেখে স্বাচ্ছন্দে ঈদ করতে পারে না।
আসুন, জেনে নেই প্রবাসীদের ঈদ কেমন কাটে। বিশেষ করে ফ্রান্সের প্রবাসী বাংলাদেশীদের ঈদ।সাপ্তাহিক ছুটির দিন না হলে ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশীদের বেশিরভাগেরই ঈদের দিন ছুটি থাকে না। তাই যাদের ছুটি থাকে না তারা ঈদের নামাজ আদায় করেই ভূ-দৌড় দেন কাজের প্লাসে। আর যাদের ছুটি থাকে তাদের বেশিরভাগ ঈদের নামাজ পড়ে বাসায় গিয়ে লম্বা একটা ঘুম দেন। বিকালের দিকে উঠে বন্ধু বান্ধবদের সাথে নিয়ে বের হন। কোনো পার্কে হাসি আনন্দে ঘন্টা দুই ঘন্টা সময় কাটিয়ে ঘরে ফেরেন।তবে সকলেই সময় সুযোগ বের করে দেশে থাকা বাবা মা, ভাই বোন, স্ত্রী সন্তানদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন।
যারা পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন, তারা তাদের পরিবারের সাথেই সময় কাটান।ঈদের দিনের কোনো একটা সময় স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বের হন। অন্য কোনো পরিবারে বেড়াতে যান কিংবা কোনো দর্শনীয় স্থানে সবাইকে নিয়ে বেড়িয়ে আসেন। প্রত্যেকটা প্রবাসী পরিবারে ঈদের আমেজ পরিলক্ষিত হলেও প্রবাসী মেচগুলো থাকে নিষ্প্রাণ। বেশিরভাগ মেচেই ঈদের কোনো উৎসাহ উদ্দিপনা দেখা যায় না। আর দেখবেনই বা কেমনে? আগের দিন রাত ১২ টা ১ টা পর্যন্ত কাজ করে বাসায় ফেরে আর কি উৎসাহ উদ্দিপনা দেখানোর কোনো এনার্জি থাকে শরীরে?
নেই ঈদের সন্দেশ পিঠা বানানোর কোনো আয়োজন। কেউ যদি অতি উৎসাহি হয়ে বানায় তাহলে সবাই মিলে একটু মজা করে খায়। নতুবা সেমাই খেয়েই ঈদ করে। তাও যদি কেউ আগের দিন মনে করে নিয়ে আসে।নতুবা কয়েক কেজি গোস্ত রান্না করলো আর সবাই মিলে পেট পুরে খেয়েই মোবাইল কানের কাছে নিয়ে শুয়ে পড়লো।দু একটি মেচে কিছু ব্যতিক্রমও আছে। প্রবাসীদের প্রতিটা ঈদই কাটে এমনি করে। ঈদের নামাজ পড়া পর্যন্তই ঈদের আমেজ। কিছুটা পরিবর্তন আসতেছে এখন। দিনে দিনে ফ্রান্সে পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে। বিধায় আগের থেকে বেশি ঈদের আমেজ এখন পরিলক্ষিত হয়।
বিষয়: বিবিধ
৯৯৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ ফ্রান্সে যারা নেটিভ মুসলমান তারাও কি এই প্যারায় পড়ে ?
আমাদের দেশে যদি হিন্দু/বৌদ্ধ বা খৃষ্টানদের বিশেষ দিন সরকারী ছুটির দিনে না পড়লে এরকম কাজে ভোঁ দৌড় মারার প্যারা থাকতো তাহলে আমাদের দেশটাও ফ্রান্সের কাতারে না হোক নিদেন পক্ষে সিঙ্গাপুরের কাতারের চলে আসতো।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেয়ে ওদের কাছে কাজের গুরুত্ব অনেক বেশী , এজন্যই তারা অনেক এগিয়ে।
খ্রিসমাসে সরকারি প্রতিষ্ঠানে মিনিমাম এক সপ্তাহ ছুটি থাকে। আর সাধারনত একদিন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন