এ্যাংগেইজম্যান্ট : অবৈধ কাজের সামাজিক বৈধতা

লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ০৮ অক্টোবর, ২০১৬, ০৮:১৭:৩২ রাত



জ্ঞান বিজ্ঞান যত অগ্রসর হচ্ছে , মানুষ যত আধুনিক হচ্ছে শয়তানের কলা কৌশলও তত আধুনিক হচ্ছে। মানুষ যতটা সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, শয়তান তার চেয়েও দ্রুত গতিতে মানুষের সামনে তার নতুন আবিষ্কার তুলে ধরছে এবং মানুষ তা অবলীলায় গ্রহণ করছে। অবৈধ যৌন চাহিদা পুরন করা থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহ তায়ালা বিয়ের মত একটি পন্হা দিয়ে বৈধ যৌন চাহিদা পুরনের সুযোগ করে দিয়েছেন। আর বিয়ের মত সেই পুন্য কাজে শয়তান এমন কিছু ঘৃন্য আবিষ্কার এতটাই সুক্ষ্য ভাবে ঢুকিয়ে দিতে পেরেছে যে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে অনেক আলেম উলামা পর্যন্ত সেটাকে গুনাহের কাজ কিংবা অনৈসলামিক কাজ মনে করেন না।

বর্তমান সময়ের শয়তানের একটা অন্যতম আবিষ্কার হচ্ছে এ্যাংগেইজম্যান্ট ।এটা আগেও ছিলো, এখনো আছে।তবে নাম ভিন্ন এবং ধরন ও কার্যকারিতাও ভিন্ন। চিনিপান, কোথাও আবার ভাটা খাওয়া নামে পরিচিত । বর ও কনের পরিবার বিয়ের বিষয়ে একমত হয়ে গেলে বিয়ের দিন তারিখ , মোহরানা ধার্য্য করার জন্য উভয় পরিবারের ময়মুরুব্বিরা বর কিংবা কনের বারিতে একসাথে মিলিত হন, খাওয়া দাওয়া হয়, হৃদ্যতাপুর্ন পরিবেশে খোশগল্পের মধ্যে তারা বিয়ের কার্যক্রম এগিয়ে নেন। সেখানে বর কনের উপস্হিতি থাকেনা বলাই যায়। চিনিপান হয়ে গেলে কনে নিজেকে আগের তুলনায় সংযত করেন, বারির বাহিরে যাওয়া আসা কমিয়ে দেন।আত্বিয় স্বজনের বারিতে দাওয়াত খাওয়ার একটা রেওয়াজও আছে।

শয়তান সেই চিনিপানকে ইংরেজী নাম ধারন করিয়েছে এবং তার ধরন ধারনও পাল্টিয়ে দিয়েছে। এখন প্রায়শই শুনা যায়, অমুকের এ্যাংগেইজম্যান্ট হয়েছে তমুকের এ্যাংগেইজম্যান্ট হয়েছে। বর তার হাত দিয়ে কনের আংগুলে আংটি পরিয়ে দিলেই এ্যাংগেইজম্যান্ট হয়ে গেলো । এইতো শুরু। এখন থেকে বিয়ের পুর্ব পর্যন্ত ছেলে মেয়ে অবাধে মেলামেশা করতে পারে। একান্ত নির্জনে মেলামেশা করতে আর কোন বাধানিষেধ থাকেনা। যে কাজগুলো পরিবারের কাছে ছিলো খুবই আপত্তিকর, সমাজের কাছে ছিলো অতি নিন্দনীয়, তা শুধুমাত্র এ্যাংগেইজম্যান্ট হওয়ার পর পরিবারের কাছে আদরনীয় এবং সমাজের কাছে গ্রহনীয় হয়ে যায়। কেও একটিবার ভাবেনা যে এ্যাংগেইজম্যান্ট হওয়ার নামই বিয়ে নয়। চিনিপানের পর কত বিয়ে দেখেছি আর আক্বদ পর্যন্ত এগুয়নি। এ্যাংগেইজম্যান্ট করে দীর্ঘদিন অবাধ মেলামেশার পর বিয়ে হয়নি এরকম খবরও পাওয়া যায়। সবকিছু ফয়সালার পর শুধুমাত্র আত্বিয় স্বজনের জন্য, পরিবারের কারো অপেক্ষায় আক্বদকে দীর্ঘায়িত করা এটা মোটেও সমিচিন নয়। এখানেই শয়তান তার সুক্ষ অস্ত্রটি কাজে লাগায়। আক্বদের পরিবর্তে এ্যাংগেইজম্যান্ট করিয়ে ছেরে দিলো, এখন তুমি গুনাহের সাগরে ভাসো। তাই আসুন, শয়তানের অস্ত্র থেকে নিজেদের বাঁচাই। এ্যাংগেইজম্যান্টের পরিবর্তে আক্বদ করিয়ে নেই। আনুষ্ঠানিকতা না হয় পরেই হলো।

বিষয়: বিবিধ

১১৪২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378469
০৯ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১২:৫২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ঠিকই বলেছেন বিষয়টি এখন বড় একটা সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। তবে এর পিছনে আমাদের মুরুব্বিদের ও কিছু বড় দোষ আছে। এরা বিভিন্ন গুরুত্ব হিন বিষয়নিয়ে এত বেশি তর্ক করেন যে অন্যদিকে তাদের প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের চাহিদা বুঝতে পারেন না।
378483
০৯ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৪:০৩
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো । ধন্যবাদ ।
378488
০৯ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ১০:০৬
হতভাগা লিখেছেন : আমাদের বাংলাদেশী মুসলমান সমাজে একমাত্র দেনমোহরের অপশন ছাড়া আর কোন ক্ষত্রে ইসলামকে অনুসরণ করা হয় না খুব একটা । এমন কি বিয়ের পরের দাম্পত্য জীবনেও ইসলাম অনুসৃত হয় না বললেই চলে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File