মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি খোলা চিঠি: পাকিদের হাত বদলিয়ে নাপাকিদের হাতে তুলে দিয়েছেন স্বাধীনতা

লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ২৪ জুলাই, ২০১৬, ০৯:১৩:৩৭ রাত



প্লিজ আমাকে তোমরা রাজাকার কিংবা যোদ্ধাপরাধী বলোনা। তোমরা যে সময়ে অস্ত্র হাতে নিয়ে হানাদারদের পিছু ছুটেছো তার অনেক পরে তোমাদের দেয়া উপহার "বাংলাদেশে" আমার জন্ম। আমি আমার দেশকে খুব ভালবাসি,তোমাদের দেয়া বাংলাদেশকে খুব মহব্বত করি-সম্মান করি। দেশের অগ্রযাত্রায় আমি আনন্দিত হই, নাচি-গাই। দেশের ক্রান্তিকালে আমার মন কেঁদে উঠে। যেমন, আজ আমি কাঁদছি। সেই কান্নার আওয়াজটা তোমাদের কানে পৌছানোর জন্য আমার এ খোলা চিঠি। মতাদর্শগত কারনে আমি রাজাকার হতে পারিনা।নির্দিষ্ট করে একটি দলে নিজের নাম রেজিষ্টারী করলে সে মুক্তিযোদ্ধা আর অন্যরা রাজাকার,নিশ্চয় এজন্য তোমরা নিজের জীবন বাজী রাখোনি।

স্যরি, তোমাদেরকে তুমি বলে সম্ভোধন করছি। আমি আমার বাবা মাকে তুমি/তোমরা বলেই সম্ভোধন করি। তারা আমার খুবই আপন। আপনজনদেরকেই তো মানুষ তুমি বলতে পারে। তোমাদেরকে আমি আপন মানি-সম্মান ও ইজ্জত করি। আমার এই খোলা চিঠি সে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নয়,যারা ৭১ এর পুরোটা সময় কলকাতার হোস্টেলে নারী মদ নিয়ে বুদ হয়ে ছিলেন, যারা আওয়ামী মেশিনে ঢুকে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন,যারা বিভিন্ন সরকারের সময়ে দলীয় সুবিধা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা খেতাবের সার্টিফিকেট কিনে নিয়েছেন। আমার এ খোলা চিঠি তাদের জন্য, যারা নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে রনাংগনে লড়েছেন।তাদের জন্যে, অস্ত্র হাতে নিয়ে হানাদারদের পিঁছু ছুটেছেন,সে সকল বীরদের উদ্দেশ্যে।

হে বীর সৈনিকেরা,তোমরা লড়েছো,মরেছো এবং মেরেছো। হানাদারদের তাড়িয়ে দিয়ে একটি দেশ, একটি পতাকা, একটি ভূ-খন্ড আমাদের উপহার দিয়েছো। আমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছো। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে,তোমরা পাকিদের হাত বদলিয়ে নাপাকিদের হাতে তুলে দিয়েছো আমাদের স্বাধীনতা। আজ আমাদের ভূ-খন্ড যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ভোগ করছে নাপাকিরা। আজ সীমান্তে হোক আর সীনান্তের ভেতরে হোক গুলি করে পাখির মত মানুষ মারছে নাপাকিরা। নাপাকিদের ইচ্ছায় চলে আমাদের দেশের সরকার;যেন তাদের মুখ্যমন্ত্রী,তাদের রাজ্য ও রাজ্য সরকার। আজ আমাদের ভোটের অধীকার নেই, কথা বলার অধীকার নেই, লেখার অধিকার নেই, বুক ফেটে কান্নারও অধিকার নেই।

আমাদের বিমান চালায় ওরা, আমাদের মন্ত্রনালয় চালায় ওরা, আমাদের ব্যাংক চালায় ওরা, আমাদের বই-পুস্তক বানায় ওরা, আমাদের নদীতে তাদের ইচ্ছায় জোয়ার-ভাটা হয়, আমাদের সিনেমা হলে তাদের ছবি প্রদর্শিত হয়। আমাদের পুলিশ,সেনাবাহিনী তারা নিয়ন্ত্রণ করে, আমাদের বর্ডারগার্ডকে তারা প্রশিক্ষণ দেয়, তাদের পতাকা ও রংছং মাখা ট্রেনে আমরা চড়ি। তাদের খুশিতে আমাদের ফাঁসি হয়,সাঁজা হয়। তোমাদের রক্ত দিয়ে কেনা জমিনের বুক চিরে তারা ট্রানজিট নেয়,তাদের বড়বড় গাড়ি চলবে আমাদের বুকে; আর সেই রাস্তা তৈরীর জন্য তারা লোন দেয় বড় অংকের সুদ নিয়ে। যে সুন্দরবনের জন্য তোমরা জীবন নিয়ে খেলেছো সেই সুন্দরবনকে তারা রামপাল বানায়। অথচ, এগুলো তারা আগে করতে পারেনি।

কোথায় আজ তোমরা। কোথায় হে বীরেরা,তোমরা কি আবার জেগে উঠবে না ? উঠবে না ? উঠবে না ?

বিষয়: রাজনীতি

১৮১৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

375188
২৪ জুলাই ২০১৬ রাত ০৯:৫০
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : ওরা আমার দেশের মাটিতে যখন ওদের বড় বড় গাড়ীগুলো চালিয়ে যায় আমার কাছে মনে হয় গাড়ী আমার দেশের মাটির উপর দিয়ে নয় আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের উপর গাড়ী চালিয়ে ওদের হাড়গোড় একাকার করে দিচ্ছে। আবার একটি মুক্তির সংগ্রাম করতে হবে।
375189
২৪ জুলাই ২০১৬ রাত ০৯:৫২
হতভাগা লিখেছেন : মুক্তিযোদ্ধারা আমাদেরকে একটা দেশে এনে দিয়েছেন । যুদ্ধে যাবার সময় কোন চেতনা কাজ করে নি তাদের মনে , শুধু একটাই কাজ করেছে মাথায় কিভাবে দেশটাকে স্বাধীন করা যায় ।

উনাদের কাজ উনারা করে দিয়েছেন । যাদের কাজ স্বাধীন দেশটাকে গড়ে তোলার তারা তাদের দায়িত্ব আত্ম সন্মান বজায় রেখে পালন করছে কি না সেটাই আসল বিষয়।
375195
২৪ জুলাই ২০১৬ রাত ১০:৩৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সব গেছে। আর কান্না কইরা লাভ কি?
375198
২৫ জুলাই ২০১৬ রাত ০১:৪৫
কুয়েত থেকে লিখেছেন : রাজাকার হতে পারিনা।নির্দিষ্ট করে একটি দলে নিজের নাম রেজিষ্টারী করলে সে মুক্তিযোদ্ধা আর অন্যরা রাজাকার,নিশ্চয় এজন্য তোমরা নিজের জীবন বাজী রাখোনি। অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ
375202
২৫ জুলাই ২০১৬ রাত ০২:০৫
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : এই শিরোনাম যেন তেন শিরোনাম নয়।
375220
২৫ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৯:৩৭
বিবেক নাই লিখেছেন : এইয়ে না , বাক্কা অইসে।'!!!
জগলুঃ জানেন ভাই, যুদ্ধ শেষে ২৭০০ কোটি টাকার অস্ত্র-সরঞ্জাম লুট করেছিলো ভারতীয় সেনাবাহিনী? ( অমৃতবাজার দৈনিক -১২ মে ১৯৭৪) !
: ভারত আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।
.
: ৭৪ সালের চুক্তি সত্বেও ভারত তিন বিঘা করিডোর হস্তান্তর করেনি বাংলাদেশকে !
: ভারত আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।
.
: ভাই ৭৫ থেকে বাংলাদেশকে পানির নায্য হিস্যা দেয়নি।পদ্মা শুকিয়ে আজ বাথরুমের টাংকি ! বছরে ২০০ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন বন্ধ !
: ভারত আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।
.
:সুল্ক জটিলতা সৃষ্টি করে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার বানিজ্য ঘাটতি তৈরী করেছে !
: ভারত আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।
.
: প্রতিবাদের পরেও টিপাইমুখে বাধ দিচ্ছে - সিলেটের ১৬ জেলা মরুভূমি হয়ে যাবে !
: ভারত আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।
.
: হিন্দি চ্যানেল প্রচার করতে ৩০০০ থেকে ৪৫০০ কোটি টাকা ভারতকে দেয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশী চ্যানেল ভারতে নট অ্যালাউড!
: ভারত আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।
.
: ভাই -গত ৪৪ বছরে হাজার হাজার বাঙ্গালীকে সীমান্তে হত্যা করেছে !!
: ভারত আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।
.
: আপনার গর্বের জায়গা 'ক্রিকেট' নিয়েও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে-কেমন ছোটলোক !?
: ভারত আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।
.
: আশ্চর্য ভাই- সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ, মাথার উপর দাদাগিরিসহ নানাভবে বাংলাদেশ আজ ধর্ষিত ভারতের কাছে !
: ভারত আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।
.
: ভারত ৪২ বছর ধরে স্বাধীনতায় সহযোগিতার নামে বাংলাদেশ শোষণ করছে ! তবুও..
: তোরে আর কয়বার বলব-ভারত আমাদের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছে।
.
: এই তো কয়দিন আগে বাংলাদেশী জার্নালিস্টদের বলেছে -''বাংলাদেশী পাসপোর্ট? নট এলাউড' - 'কিউ কি আপ বাংলাদেশকা সিটিজেন হ্যায় !
একরকম গলা ধাক্কা দিয়ে হোটেল থেকে বের করে দিয়েছে আপনার বন্ধুরা ! তবুও?
: ব্যাটা তুই তো দেখি রাজাকার ! পাকিস্তান চলে যা।
.
অপছন্দের কারো অনিষ্ট হলে নোয়াখালীর ভাষায় আমরা আনন্দ প্রকাশ করে বলি-
''এইয়ে না , বাক্কা অইসে।''
.
ভারতীয়দের কাছে এমন অপমানে বারবার বলতে ইচ্ছে হচ্ছে- 'এইয়ে না , বাক্কা অইসে।'!!!
বাক্কা না হইলে যে আমাদের শিক্ষা হয় না।
.

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File