*****জিন-পরীদের রাজ্যে (ঙ)*****

লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১০ নভেম্বর, ২০১৫, ০৫:৫৯:১৯ সকাল



বাজার অতিক্রম করে সামনে এগুতেই আবার ওরা দু'জন ।আমিতো ভয়ে মরি মরি অবস্তা। মক্তবে যে সুরা কেরাত শিখেছিলাম তার কয়েকটা নিমিষে পড়ে নিয়ে বুকে ফুক দিয়ে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম তোমরা কোথায় গিয়েছিলে বাজারের মধ্যে ? কথা বলতে বলতে কবরস্তানের ভেতর ঢুকে গেলাম। প্রচন্ড এক আওয়াজে কবরস্তান প্রকম্পিত হয়ে উঠলো। এক ঝটকা বাতাস কবরস্তানের ভেতরে বড় বড় বট বৃক্ষ গুলোকে আন্দোলিত করে দিলো। বট বৃক্ষের ডালে ডালে লটকে থাকা বাঁদুরগুলো নিজেদের জান বাঁচাতে কিচকিচ আওয়াজ দিয়ে উড়াল দিলো। ক্ষনিকের মধ্যে আবার প্রচন্ড নিরবতা নেমে এলো।

দাড়িয়ে গেলাম। ভয়ে যেন আর সামনে পা চলছে না। দু'পাশে চেয়ে দেখি সাথের ওরা দুজন নেই। আমার সামনে সামান্য দুরে রাস্তার ডান দিকে প্রায় ৮ ফুট লম্বা একজন মানুষ দাড়িয়ে। একহাত লম্বা দাড়ি । গায়ে ধবধবে সাদা লম্বা আলখেল্লা লাগানো। আগুনের মত লাল টুকটুকে চেহারা। বয়স আশির কাছাকাছি হবে। তার উজ্জল চেহারা রাতের অন্ধকারকেও ম্লান করে দিয়েছে। এমন মানুষ আমার জীবনে দেখি নি। কবরস্তানের ভেতরে কোন জাগতিক আলোর ব্যবস্তা না থাকলেও বেশ কিছু যায়গা জুড়ে আলোকিত হয়ে আছে। বুকে সাহস নিয়ে সামনে এগুলাম। কাছে গিয়ে স্বভাববশত আসসালামু আলাইকুম বললাম। সালামের জবাব দিয়ে তিনি কবরস্তানের আরো ভেতর দিয়ে হাটা শুরু করলেন। আমিও তার পিছু পিছু হাটছি। তার পিছু যেতে আমায় যেন কে কানে কানে বলে দিয়েছে। এখন আর আমার মাঝে কোন ভয়-ডর নেই। কি এক মোহে,ঘোরের মধ্যে আমি তার পিছু নিলাম।

ভেতরে অনেক বছরের পুরনো বিশাল এক বট গাছ। গাছের শাখা প্রশাখা অপর এক একটি গাছের সমান। প্রতিটি শাখা ঝোপঝাড়ে ভরা। তার নিছে ওরা আসন পেতেছে। দশ বারোহাত যায়গার মধ্যে ওরা গোল করে বসে আছে। ওরা দশজন। মাঝখানে আগরবাতি জ্বলছে। খুশবুটা কিন্তু আগরবাতির মনে হচ্ছে না। এক এক সময় এক এক ধরনের খুশবু ছড়াচ্ছে আগরবাতি থেকে। দেখলাম, আগরবাতি থেকে কোন ধরনের ধুয়াও বের হচ্ছে না। সবাই বসে বসে কি যেন পড়ছে।

বৃদ্ধ মানুষটি গিয়ে তাদের একপাশে বসলেন। আমাকেও তার ডান পাশে বসতে দেয়া হলো। আমাকে একে একে সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। দেখলাম, ওরা নানান বয়সের। একজনের বয়স অবশ্য আমার থেকে তিন চার বছর বেশি হবে। তার একটি হাত ভাংগা। সেইই নাকি আমাকে তুলে আনতে গিয়েছিলো জন্মের পরপরই। আমার মায়ের হাতে মার খেয়ে রডের আঘাতে তার হাতটি ভেংগে যায়। সেই ভাংগা হাত নিয়ে সে আছে। সেই ই আমার মায়ের উপর রাগ করে আমার হাতে কয়লা দিয়ে পুড়িয়েছিলো। ঐদিন তার মা'ই আমার চোট ছোট কাপড়গুলো ধুয়ে বেড়ার মধ্যে শুকাতে দিয়েছিলেন।

(চ) আমি তাদের কথা শুনে যাচ্ছি মনযোগ দিয়ে। কোথায় আছি, কাদের সাথে বসে আছি এদিকে আমার সামান্যই খেয়াল নাই। চলবে......।

বিষয়: সাহিত্য

১৫৭৮ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

349192
১০ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৭:০১
শেখের পোলা লিখেছেন : চলুক, তয় মোর কইলাম ডর করতাছে৷
১১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৫৭
289927
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ভুতের গল্প, একটুত ভয় লাগবে জনাব। বুকে ফু দিয়ে দিন, ভয় চলে যাবে।
349198
১০ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৪৫
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : dorar upar raklan!
১১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৫৮
289928
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : বুকে ফু দিয়ে দিন কিছু একটা পড়ে। ইনশা আল্লাহ ভয় ডর কেটে যাবে।
349200
১০ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:০৫
হতভাগা লিখেছেন : জ্বিন না আগুনের তৈরি ! রডের আঘাতে তার হাত ভাঙ্গে কি করে ? উল্টো - রড গরম হয়ে যাবার কথা।
১১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৫৯
289929
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনি ত দেখি সত্যিই হতভাগা ?
ভুতুড়ে গল্পে কতকিছু ভৌতিক হয়ে যায় তা বুঝি জানেন না।
ধন্যবাদ
১৩ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:১০
290171
হতভাগা লিখেছেন : আপনার মত আরেকজন ব্লগার আছে (সম্ভবত ব্লগার মামুন)উনিও গল্প লিখেন যেটার মধ্যে এমনও বলা আছে

প্রেমিকা তার প্রেমিকের সাথে দেখা করতে গভীর রাতে চট্টগ্রাম থেকে নিজে গাড়ি ড্রাইভ করে ঢাকায় চলে আসছে


এখানে প্রেমিকের কথা বললে ব্যাপারটা মানান সই হত , কারণ এটাই হয় ১০০% ক্ষেত্রে ।

এই অতি ফ্যান্টাসী ধরিয়ে দেওয়ায় উনার মুডে আঘাত এসেছে , ফল স্বরুপ ব্লকড।
১৪ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৩৩
290199
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনার মন্তব্যে আমি কিন্তু মাইন্ড করিনি এবং কখনো করিনা। আমি আপনার মন্তব্যে খুশি হই। তাই জবাবটাও দিয়েছি আপনার নিকের সাথে মিলিয়ে,মজা করে। আসলে আপনি সত্যিই হতভাগা, এই জিনিষটাও বুঝতে পারলেন না।
349205
১০ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:১৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভ. ভ. ভ. ভয়ংকর!!
১১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৫৯
289930
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : একটা ফু দিয়ে দিলাম কিন্তু।
349212
১০ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৩৯
মুসলমান লিখেছেন : আজ প্রথম পড়লাম। দেখি সামনে কি হয়।
১১ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:০০
289931
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : পেছনের গুলো আগে পড়ে নিন।
349218
১০ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:১৫
দূর্বল ঈমানদার লিখেছেন : ভাল লাগল । পুরোটা পড়তে হবে ।
১১ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:০০
289932
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : পড়লে জানান দেবেন।
ধন্যবাদ
349246
১০ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:০৭
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আজব কাহিনীযে কবে শেষ হবে..? ভালো লাগলো ধন্যবাদ
১১ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:০১
289933
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : কেন ভাই ভালো লাগছে না বুঝি ?
349256
১০ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৪১
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : বেশ ইন্টারেস্টিং তো । Thinking
১১ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:০১
289934
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : অনেক শুকরিয়া।
349324
১১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০২:৪০
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম।

শরীর ছমছম করে উঠলো I Don't Want To See
১১ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:০২
289935
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ওয়া আলাইকুম আসসালাম।
মুহতারামা,বেশি ভয় লাগলে সুরা ফাতিহা পড়ে গায়ে ফু দিন।
ধন্যবাদ
১০
349554
১৩ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০১:৩৫
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : বুকে ফু দিয়ে পড়তেছি ভয় লাগলে ও কিছু করার নেই
১৪ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৩৮
290200
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : কোন সুরা পড়ে ফুক দিয়েছো ?
১১
349640
১৩ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:৩২
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : সুন্দর হচ্ছে
চালিয়ে যান
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
১৪ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:৩৯
290201
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : শুকরিয়া জনাব।
১২
349773
১৫ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:৩৯
মুহামমাদ সামি লিখেছেন : চমৎকার, চালিয়ে যান। তবে, আমি কিন্তু মোটেই ভয় পাচ্ছি না কইয়ে দিলাম ☺
১৬ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৩:৪১
290362
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : সাহস আছে বটে।
ধন্যবাদ।
১৩
351487
২৫ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩১
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ। প্যারিসের অবস্থা কি জানাবেন?
২৬ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৫:১৭
291850
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : শুকরিয়া।
আসলে লেখালেখি করার সময় পাচ্ছিনা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File