***** জিন-পরীদের রাজ্যে (গ) *****
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১৫ অক্টোবর, ২০১৫, ০৯:০৫:২২ রাত
একদিন মা আমার অনেকগুলো কাপড় ধুতে পুকুর ঘাটে নিয়ে গেলেন। এই সুযোগে একটা জ্বিন আমার কাছে এসে হাজির। সে আমার সাথে খেলবে। খেলা শুরু হলো। আমি আমার হাত পা ছুড়ছি, হাসছি। খেলতে খেলতে এক সময় জিনটা আমার সিথানের কাছে থাকা জ্বালানো ধুপ থেকে কাঠের জ্বলন্ত কয়লা আমার হাতে তুলে দিলো। কয়লার তাপে আমার হাতের সামান্য অংশ পুড়ে গিয়ে ফুসকা উঠে গেলো। (আমার হাতে এখনো আগুনে পুড়ার চিহ্ন রয়েছে।) আমি সকল সকল শক্তি দিয়ে কেঁদে উঠলাম। কান্নার আওয়াজ শুনে পুকুর ঘাটে সব কাপড় রেখে মা দৌড়ে এলেন। দেখলেন, কয়লার টুকরা আমার পাশেই পড়ে আছে আর আমার হাতের কিছু অংশে ফুসকা উঠে গেছে। সাথে সাথে মলম লাগিয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ পর আমার কান্না থামলে আমাকে নানুর কুলে দিয়ে মা আবার পুকুর ঘাটে ফেলে আসা কাপড় ধুতে গেলেন। দেখেন, সব কাপড় ধুয়া। কে যেন কাপড়গুলো ধুয়ে পুকুর পারে বাঁশের বেড়ায় শুকাতে দিয়েছে। ধন্যবাদ দেয়ার জন্য অনেক খুজ করেও মা জানতে পারলেন না কে এমন কাজ করেছে। ফিরে এসে মা আমার সিথানের কাছে থাকা আগুনের ধুপ সরিয়ে নিলেন। পরবর্তীতে আমার মায়ের যখন আরো সন্তানাধী হয়েছে তিনি আর আগুনের ধুপ রাখেন নি।
চল্লিশ দিন পুরো হবার পর মা আমাকে নিয়ে চলে এলেন আমার পিতৃলয়ে। জিনেরা আমাকে খুজে পেলোনা। কিছুদিন পর আমাকে নিয়ে মা তার বাপের বাড়ি বেড়াতে যান। আমাকে পেয়ে জিনেরা মহা খুশি। আমি সবেমাত্র হামাগুড়ি দিয়ে চলতে শিখেছি। একদিন দেখি আমার মা বাড়ির রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছেন। আমি ঘরের বারান্দা থেকে হামাগুড়ি দিয়ে তার পিছু নেই। তিনি বারবার পেছন ফেরে তাকিয়ে আমাকে হাতের ইশারায় ডাকলেও তিনি দাড়াচ্ছেন না এবং আমাকে কুলে নিচ্ছেন না। আমিও কিন্তু তার পিছু চাড়ছিনা। কিছুদুর যাওয়ার পর পেছন থেকে আমার মা দৌড়ে এসে আমাকে কুলে তুলে নিয়ে বুকের সাথে চেপে ধরে জানতে চান, বাপু কোথায় যাচ্ছ। আমিতো কিছুই বুঝি না। সামনে তাকিয়ে দেখি কেও নেই। ভাবলাম, মা এসে আমাকে কুলে তুলে নিয়েছেন, সামনে কে থাকবে।
আবার আমি মায়ের সাথে আমার পিতৃলয়ে চলে আসি। এবার কিন্তু দু'টি জিন আমাদের সাথে চলে আসে। আমাদের বাড়ির একটা শেওড়া গাছে ওরা বাসা বাধে। কিছুদিন থেকে ওরা আবার ফিরে যায় ওদের পুরনো বাসস্তানে। অধিক আলোতে তারা বাসা করে থাকতে পারে না। অন্ধকার, ঝুপঝাড় তাদের জন্য নিরাপদ। তাই তারা বাধ্য হয়ে ফিরে যায়। অনেক দিন পর, মানে ততদিনে আমিও অনেক বড় হয়ে গিয়েছি। আমি এখন একা একা অনেক দুরে অর্থাৎ রাজধানী শহর ঢাকায়ও যাওয়া আসা করতে পারি। একদিন ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছি। ঢাকায় থাকতে জানতে পেরেছিলাম, মা নানুর বাড়িতে গিয়েছেন। তাই আমিও বাড়ি না গিয়ে মায়ের কাছে যাবার মনস্ত করি।
(ঘ) এখনো পুরোপুরি শীত না পড়লেও সন্ধার পর শীত শীত লাগে। এমন দিনে গ্রামের লোকজন একটু আগ বাড়িয়ে ঘরে ফিরে থাকে। ঢাকা থেকে আসা বাসটি আমার বাড়ির সামনেই যাত্রী উঠা নামা করে । আর নানুর বাড়ি যেতে হলে আমার বাড়িতে আসার প্রায় আট কিলোমিটার পূর্বে বাসথেকে নামতে হয়। বাস থেকে নেমে আরো প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হয়। চলবে......।
বিষয়: সাহিত্য
৩২১৬ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাজাকাল্লাহ...
চলছেতো চলবেই.....
চলছে চলবে
আমাদের লেখালেখি।
ধৈন্যাপাতা।
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
তাহলে বলা যায় গল্পটা স্বার্থক ।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
জ্বিনদের কিছু ক্ষমতা অবশ্যই আছে এটা বিশ্বাস করতে হবে। কিন্তু আপনি এতো কিছু মনে রাখলেন কিভাবে?
তাহলে বলা যায় গল্পটা স্বার্থক ।
ধন্যবাদ।
আপনি মনে হয় সোলাইমান (আঃ) এর বংশধর
ধন্যবাদ।
যেহেতু আপনি আপনার ৪০ দিন বয়স থেকে আরও বড় সময়ের উপলব্ধী তুলে ধরেছেন,তাই বলা যায় এটা গল্প। সত্য নয়। তবে অনেক ঘটনা শুনেছি যা এরকমই। কারো ক্ষেত্রে এরকম সত্য হলেও হতে পারে।
দারুন কল্পনা শক্তি। ধন্যবাদ
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ
-মিথ্যা গল্প শুনিয়ে মিথ্যাবদিী হতে চান কেন?
ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন