***** জ্বিন-পরীদের রাজ্যে (খ) *****

লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১১ অক্টোবর, ২০১৫, ১২:৫৩:০১ দুপুর



ওদের কথা বার্তায় মনে হচ্ছে ওরা মানুষ নয়। তবে কি ? একজন বলছে, এই বৃষ্টির মধ্যে ওকে বাহিরে না আনাই ভালো। আদমের জাত, বৃষ্টি লেগে শেষে নানান অসুখে বিসুখে পড়ে মরেই যাবে। আমাদের তো আর ওদের মত ডাক্তার কবিরাজ নেই। অন্যজন বলছে, মরে গেলেই আমাদের কি ? আরেকজন বলছে, আমরাতো ওকে মারতে আসি নি,নিতে এসেছি। আমাদের সাথে থাকবে,খেলবে। সে প্রথমজনের কথার সমর্থন করে বললো, আমরা কিছু সময় অপেক্ষা করি। বৃষ্টি থামলেই ওকে নিয়ে যাব। আমার গায়ে বৃষ্টি না লাগলেও ওর গায়ে বৃষ্টি লাগবে।

আমার মায়ের বুঝতে বাকি রইলো না ওরা কারা। আর ওদের মতলব কি । ওরা আগুনের তৈরী জাত, জীন। তারা আমাকে তুলে নিতে এসেছে। শুনেই আমার মায়ের বুকটা ধপাস করে উঠেছে। কি বলে ওরা । ওরা নাকি তার সন্তানকে তুলে নিবে,যার গায়ে নাড়ি কাটার রক্তের দাগ এখনো শুকায় নি। আমার মা জীনদের সাথে লড়তে প্রস্তুত। জীবন দিয়ে হলেও তার সন্তানকে জীনদের হাত থেকে রক্ষা করবেন । অদম্য সাহস নিয়ে তিনি ঐ গর্তের দিকে তাকিয়ে আছেন। আমাকে নিতে গেলে তারা ঐ পথ দিয়েই নিয়ে যাবে।

না, এখনো ছিদ্রের মুখে দেয়া কাপড়টা ঠিক আছে। মা তার জানামত সুরা কেরাত সব মনে মনে পড়ে নিয়ে আমাকে বারবার ফুক দিচ্ছেন। আমার সিথানের কাছে রাখা একহাত লম্বা একটা লোহার রড তিনি হাতে তুলে নিলেন। লোহা,তামা জাতীয় জিনিষ নাকি জ্বিনেরা ভয় পায়। আগুনের তৈরী জ্বিনেরা নাকি আগুনকেও ভয় করে। তাই আমার সিথানের একপাশে আগুনের ধুপ ও জ্বালানো আছে।দিনে আমার নানু ধুপে তার হাত গরম করে আমার হাত পা হেদে দেন। (হেদা অর্থ ও গরম করা)

বৃষ্টি থেমে গেছে।জ্বিনেরা প্রস্তুত। প্রস্তুত আমার মা ও। হঠাৎ করে ছিদ্রের মুখে দেয়া কাপড়টা মাটিতে পড়ে যায়। আমার মা বুঝতে পারলেন, এখনই তারা ঐপথ দিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকবে। না ওরা কেও ভেতরে ঢুকেনি। একজন তার লম্বা একটা হাত ছিদ্রের ভেতরে ঢুকিয়ে দিলো। কালো চিকচিকে লকলকে হাতটা আমার দিকে এগিয়ে আসছে। কিছু একটা পড়ে লোহার রডের উপর ফুক দিয়ে মা সজোরে আঘাত করলেন জ্বিনের হাতের উপর। প্রচন্ড আঘাত পেয়ে জ্বিনেরা কিছকিছ করে উঠলো। আমিও ঐ সময় কেঁদে উঠলাম। আমার কান্নার অয়াজে নানু ও জেগে উঠেন। তিনি তার মেয়ের কাছে জানতে চাইলেন কি হয়েছে । মা সবকিছু বলতে বলতে ল্যান্টনের আলোটা বাড়িয়ে দেন।

আমার মায়ের হাতে মার খেয়ে জ্বিনেরা রীতিমত ভয় পেয়ে যায়। তারা আমাকে তুলে নেয়ার ইরাদা সেদিন থেকেই ইস্তফা দেয়। তবে তারা আমার পিছু ছাড়েনা। আমার সংগ নেয়া, আমার সাথে দুষ্টুমি করা, খেলা করা যেন তাদের নিত্যদিনের রুটিন ওয়ার্ক হয়ে পড়ে। ওহহো, আপনাদের বলা হয়নি, জ্বিনগুলোর বয়স খুব বেশি ছিলোনা। যে বয়েসে মানুষের সন্তানেরা খেলাধুলা করে সময় কাটায় তাদেরও বয়েস সেরকমই। খুবছুরত চেহারার জন্য তারা আমার প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং আমাকে তুলে নিয়ে আমার সাথে খেলা করবে এই ছিলো তাদের মনোবাসনা। আমার মা তাদের মনোবাসনা পূরণ হতে দিলেন না। তাই বলে তারা আমার সাথে খেলাধুলা করতে ছাড়েনি।

(গ)

একদিন মা আমার অনেকগুলো কাপড় ধুতে পুকুর ঘাটে নিয়ে গেলেন। এই সুযোগে একটা জ্বিন আমার কাছে এসে হাজির। আগামী পর্বে.......।

বিষয়: সাহিত্য

১৪৯৬ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

345313
১১ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০১:৫৯
হতভাগা লিখেছেন : জ্বিনকে চোখে দেখা যায় ? আঘাত করা যায় ? ব্যথা পেয়েছে সেটাও বোঝা যায় ?
১৩ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৩:৪৫
286613
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : জ্বি জনাব, সব কিছুই যায় যদি জ্বিনেরা চায়।
১৩ অক্টোবর ২০১৫ সকাল ০৮:০৯
286622
হতভাগা লিখেছেন : হ্যা তাই মনে হয় , আপনারে ধইরা প্যারিস লইয়া গেছে । জ্বিন পীরের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে ।
345316
১১ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০২:২৭
আফরা লিখেছেন : কল্পলোকের গল্পের মত মনে হচ্ছে ।
১৩ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৩:৪৬
286614
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : গল্পতো তাই গল্পের মত।
345319
১১ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০২:৩৩
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : বিদেশে এখন কি ওরা আপনাকে ধরে? বা বিমানে ওঠা ছাড়াই বাংলাদেশে পৈছায় দেয়? বা আপনার ইচ্ছামতো কাজ করে?
১৩ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৩:৪৮
286615
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : গল্পের লেখকের সাথে জ্বিন ধরলে বুঝি আপনি খুশি হবেন।
১৩ অক্টোবর ২০১৫ সকাল ০৮:২৪
286629
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : এত নাইস গল্প! তাই কৌতহুল হচ্ছে জানার। এরকম ভাগ্য কয়জনের হয় যে জ্বীনের হাত দেখতে পায় বলুন। আর জ্বীন থাকলে তো আপনার দেশে আসতে প্লেনের ভাড়া লাগবে না ঠিক না?
১০ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪৯
289860
মুসলমান লিখেছেন : আমগো এলাকার এক পীরসাপের সাথে জ্বীন থাকে গেরামের সগলতে এডা জানে।
১১ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৮:০৬
289945
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : মুসলমান মুরীদ ভাই, বাচ্চা কাচ্চা কি জ্বীনের মত হয়েছে?
345340
১১ অক্টোবর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৩
শেখের পোলা লিখেছেন : এটাতো ভাল লক্ষন৷ কত মানুষ জ্বীন হাসিল করে দোওয়া তাবিজ চিকিৎসা করে৷ আর এখানে জ্বীনেরা নিজেরাই ধরা দিচ্ছে৷
১৩ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৪:১৩
286616
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : বলেছিতো জ্বিনেরা গল্পের বাচ্চার সাথে কেন সংগ নিতে চায়। জ্বিনেরা যাকে সংগ দেয় তার জন্য তাবিজ কবজ লাগে না, লাগে জ্বিন তাড়ানোর জন্য।
345356
১১ অক্টোবর ২০১৫ রাত ১০:০৫
আবু জান্নাত লিখেছেন : এত কাহিনী! সত্যিই আপনার কল্পনার চমৎকার।
১৩ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৪:১৪
286617
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আরো মজার কাহিনী আছে সামনে।
345366
১১ অক্টোবর ২০১৫ রাত ১১:০২
শরাফতুল্লাহ লিখেছেন : ভাই আমার জন্মের পরেও নাকি এমন কাহিনি হইছিলো।

আসেন হাত মিলাই ।
১৩ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৪:১৬
286618
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : এটা একটা গল্প, আমার জীবনী নয়। তাই হাত মিলাতে পারলাম না। তবে আমার পেইজে আপনাকে নতুন পেয়েছি মনে হয় তাই আপনার সাথে বুক মিলাতে পারি।
345400
১২ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০১:২৬
১৩ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৪:১৭
286619
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : এত চিন্তার কি আছে। এটা একটা গল্প।
345423
১২ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৮:১৪
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ভাইয়া শুনেছি পরীরা অনেক সুন্দর কিন্তু আজও দেখতে পেলাম না
১৩ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৪:১৮
286620
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : পরীরা সুন্দর নয়,সুন্দরী। গল্পেতো পরী আসেনি, এসেছে জ্বিন। জ্বিন সবাই দেখতে পারেনা।
345479
১৩ অক্টোবর ২০১৫ সকাল ০৮:৪৯
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : নাম কি ছিলো?
তাক জ্বীন তবাক জ্বীন?!
হা হা হা ভালোই লাগলো ধন্যবাদ ভাইয়া। : Good Luck
১৩ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০২:২৩
286648
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ভালোই লাগলো ধন্যবাদ ভাইয়া।
১৩ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৮:৩২
286692
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : তাক জ্বিন তবাক জ্বিন !!!

জ্বিনের বানানটা কিভাবে হবে ?

মুন্সী ভাইকেও ধন্যবাদ।
১০
346581
২০ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৯:৩৫
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : সুন্দর!
২১ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০৩:৪২
287712
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ধন্যবাদ।
১১
350411
১৯ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:৩৫
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : শৈশবের অনেক গল্পই থাকে জ্বিন-ভুত কেন্দ্রিক..
ধন্যবাদ..

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File