গল্প : যুবক পুরুষ (পর্ব দুই)
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ২১ আগস্ট, ২০১৫, ১২:৩৮:০৭ দুপুর
শুধু ব্যাতিক্রম হলো সেদিন। যুবকটা আমার সাথে হাত মেলালো না। অন্য কোনো মেয়ের সাথেও হাত মিলায় নি। বলে কি না সে মেয়েদের সাথে হাত মেলায় না। তার এমন ব্যবহারে আমার সৌন্দর্যতার উপর এতদিন যে বিশ্বাস ছিলো, সেই বিশ্বাসে চরম আঘাত লাগলো। রাগ হলো। বাথরুমে ঢুকে চোখের পানির সাথে রাগ ভাসিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক হয়েছি। নতুবা কোনো লংকা কান্ড ঘটে যেত। রাগটা ভাসিয়ে দিয়ে এলেও মনের মাঝে একটা জিদ রুপন করে আসি; দেখে নিব কতদিন বাচাধন এরকম থাকতে পারেন। প্রথম আসছেনতো তাই একটু নিজের পৌরুষত্ব জাহির করছেন। কিছুদিন গেলে শরীরের উত্তপ্ত লাভা দিয়ে গলিয়ে দেব।
সহকর্মী হিসাবে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা ঠিকই বলে। অযথা কথা বাড়িয়ে অন্যরা যেমন একটু সময় নিতে চায়,বারবার কাজের ফাঁকে মুখের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে ভালো লাগার জানান দিতে চায়, তার মাঝে এর লেশমাত্র দেখলাম না। প্রথম প্রথম তার সাথে না মিশে তাকে পরখ করতে লাগলাম। সাধারন একজন যুবকের সাথে তার অনেক প্রার্থক্য চোখে ধরা পড়লো। মাঝে মধ্যে পাঁচ/সাত মিনিটের জন্য সে যেন কোথায় উধাও হয়ে যায়। একদিন পিছু নিলাম। দেখলাম, কে এফ সির স্টোর রুমে পাতলা একখানা কাপড় বিছিয়ে নামাজ পড়ছে। তাহলে যুবকটা ধর্ম-কর্ম পালন করে !
তাই বলে একজন যুবতী মেয়ের সাথে হাত মেলাবে না ! কোন সম্পর্ক রাখবেনা ! দেখে নেব। মনের মাঝে রুপন করা জিদটা আস্তে আস্তে ডালপালা মেলতে লাগলো। অনেক ছেলেদের সাথে মিশেছি, অনেক যুবকের সাথে হরদম খোলামেলা আড্ডায় মাতি, তবে নিজের সতীত্ব কারো কাছে বিকিয়ে দেইনি। তাকে দিয়ে সতীত্বের জলান্জলী দেব,তবুও দেখে নেব কত বড় বাহাদুর যুবক তিনি। এধরনের একটা গোপন বাসনা,গোপন জিদ আমাকে পেরেশান করে তুললো।
একদিন তাকে প্রশ্ন করলাম, সে কেন আমাদের সাথে অর্থাৎ মেয়েদের সাথে মিশতে চায় না ? কিসের এত অহংকার ? না কি শারীরিক কোনো সমস্যা আছে ? প্রশ্নটা শুনে বরাবরের মত মুখটা না খুলে হাসলো। হাসিটাও বেশি সময় স্হায়ী হলনা। আমি তার মুখের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি দেখে বললো, একজন মুসলমানের জন্য তার ধর্ম এলাও করেনা কোনো বেগানা যুবতীর হাত ধরা, অযথা কথা বলা, তার সাথে হাসি-তামাশা করা। এটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিধায় সে এই নির্দেশটা মেনে চলে মাত্র। সে জানালো, তার মাঝে কোনো অহংকার নেই, আল্লাহর রহমতে শারীরিক সমস্যাও নেই।
তার কথা শুনে মনে মনে বললাম, বাচা আমি দেখে নেব তোমার নিশ্চয় কোনো সমস্যা আছে। সমস্যা আড়াল করতে গিয়ে সাধু সেজে ধর্ম-কর্মের নাম করছো। তোমাদের ধর্মেরই কত ছেলেকে দেখি মেয়েদের হাত ধরে হাটছে,ঢলাঢলি করছে। আর তুমি বলছো ধর্মে, নিষিদ্ধ।
তাকে কিভাবে বধ করা যায় তা নিয়ে আমার অপর দুই বান্ধবীর সাথে আলাপ করি। তারা আমাকে পরামর্শ দিলো যে আমরা তিনজনে মিলে তাকে কিডন্যাপ করবো। আমাদের এক বান্ধবীর বাবা মা দুজনেই কাজ করেন। তার বাসা প্রায়ই খালি পড়ে থাকে। আমরা যুবককে তুলে নিয়ে যাব তাদের বাসায়। সেখানে তার উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবো। তাদের পরামর্শ মনোপুত হলো। কেননা এটা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। বাকি সবগুলো ফর্মুলা চালিয়ে তার মাঝে সামান্যতম প্রতিক্রিয়া লক্ষ হয়নি। তাই এখন তাকে অপহরণ করে শেষ চেষ্টাটা চালাতে হবে।
পরামর্শ অনুযায়ী তিন বান্ধবী মিলে ঠিকই একদিন তাকে আমরা অপহরণ করলাম।চোখ বেঁধে তাকে নিয়ে গেলাম ঐ বান্ধবীর বাসায়,যার বাসা খালি পড়ে থাকে। তাকে একটা চেয়ারের সাথে হাত পা বেঁধে রাখলাম। চোখের বাঁধন খুলে দেয়া হলো। তিন বান্ধবী প্রায় পুরো উলংগ হয়ে তার সামনে নানা অংগ ভংগি করতে লাগলাম। আমি বললাম, আজ আমরা তোমাকে পরীক্ষা করবো তোমার কোনো শারীরিক সমস্যা আছে কি না । আমাদের উলংগ অংগ ভংগি আর বিদ্রুপাত্বক কথা শুনে সে চোখ বন্ধ করে আছে নিজ থেকে। চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে তার অষ্ট বেয়ে। বললাম, ভয় পেয়োনা। আমরা তোমার এমন কোনো ক্ষতি করবোনা। শুধু পরীক্ষা করে দেখবো তুমি পুরুষ কি না।
আমার কথায় সে চোখ মেলে থাকালো । (চলবে)
বিষয়: সাহিত্য
১৫৭৬ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি ভাই - লাকি দ্যা ভাগ্যবান
পড়া হয়নি বুঝি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন