মুমতাহিনা তাজরি ঃ আজ থেকে তার ছাত্রীজীবন শুরু সকলের দোয়া চাই
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৬:১৮:১৭ সন্ধ্যা
পুরো দুইমাস স্কুল কলেজ বন্ধু থাকার পর আজ থেকে শুরু হয়েছে। ফ্রান্সে আপনার বাচ্চার বয়স ৩ বছর পূর্ণ হলে তাকে স্কুলে পাঠাতে হবে। প্রতি সেপ্টেম্বর পয়লা সপ্তাহ থেকে স্কুল কলেজের বর্ষ শুরু হয়। তাই আপনার কোন সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করাতে হলে সেপ্টেম্বরের আগেই স্হানীয় পৌরসভায় নাম লিপিবদ্ধ করাতে হবে। তারাই আপনার বাসার কাছাকাছি একটা স্কুলে আপনার সন্তানের নাম লিপিবদ্ধ করে আপনাকে একটা সার্টিফিকেট দেবে , তা নিয়ে আপনাকে স্কুলে যেতে হবে এবং তা স্কুল বন্ধ হওয়ার আগেই করা ভালো।
মুমতাহিনা তাজরি নামে এই ব্লগে একটা আইডি আছে,যেটা থেকে একজন মাঝে মধ্যে কিছু পোস্ট করে থাকেন। অনেকেই ভাবেন যে পোস্ট করে থাকেন তিনিই বুঝি মুমতাহিনা তাজরি। কিন্তু না, তিনি মুমতাহিনা তাজরি নন। তিনি উনার ভাগনীর নামে আইডি করেছেন।শিরোনাম দেখে অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন মুমতাহিনা তাজরি কিভাবে মাত্র ছাত্রীজীবন শুরু করবে।
মুমতাহিনা তাজরি আমার ভাগনী। এবছর জুলাই'র ২৪ তারিখে তার ৩ বছর পুর্ণ হয় এবং আমরা তাকে যথারীতি স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য স্হানীয় পৌরসভায় নাম লিপিবদ্ধ করি। যেদিন থেকে তার নাম লিপিবদ্ধ করেছিলাম সেদিন থেকেই সে অধির আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলো কোনদিন স্কুল খুলবে আর সে স্কুলে যাবে।
আজ তার স্কুল খুলেছে । সে ও খুব খুশিমনে স্কুলে গিয়েছে। আমি আর তার মা তাকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম। সেতো মহাখুশি। কিন্তু সে ভাবতে পারেনি একসময় তাকে রেখে আমরা চলে আসবো এবং সে একা হয়ে যাবে। ঠিকই যখন সে দেখলো আমরা তাকে রেখে চলে আসছি তখন সে কি যে কান্না শুরু করলো। শুধু কি সে ? তার ক্লাসের প্রায় প্রত্যেকেই তাদের বাবা মা ছেড়ে যাওয়ার সময় কোরাস করে কান্নাকটি শুরু করেছে।
দেখলাম তার ক্লাসে একসাথে ৩ জন শিক্ষিকা আছেন। তারা বাচ্চাদেরকে এতটাই যত্ন ও আদর করে থাকেন এবং বাচ্চাদের খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষা দিয়ে থাকেন যে বাচ্চারা এক সময় কান্নাকাটি তো বন্ধ করেই, পাশাপাশি পরবর্তীতে স্কুলে যাওয়ার জন্য বাসায় কান্নাকাটি করে থাকে। এত যন্ত্রনা করে বাচ্চারা প্রথম দিকে। তারপরও টিচারদের কাওকে সামান্যতম বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখলাম না।
তাদের ক্লাসকে পার্কের মত সব ধরনের খেলাধুলা দিয়ে সাজিয়ে রেখেছে এবং বাচ্চাদেরকে সবসময় খেলাধুলার মধ্যেই রাখে।কিন্তু তারমধ্যেই বাচ্চারা অনেক কিছু শিখে ফেলে।আমাদের দেশে যেখানে ভয় আর চোখ রাংগানী দিয়ে শুরু তাদের দেশে সেখানে ভালবাসা আর আদর দিয়ে শুরু। যার কারনে এখানে বাচ্চারা স্কুলে যাওয়ার জন্য কাঁদে আর আমাদের দেশে না যাওয়ার জন্য কাঁদে ।
মুমতাহিনা তাজরির জন্য সকলের দোয়া চাই। আল্লাহ যেন তাকে শিক্ষায় দিক্ষায় মননে একজন খাটি মুসলমান হিসেবে গড়ে উঠার তাওফিক দেন।
বিষয়: বিবিধ
১৯০৯ বার পঠিত, ৪৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার আদর জানিয়ে দেয়া হবে।
আর হা, আপনার অভিমানের কারনটা কি জানতে পারি।
মুমতাহিনা তাজরি মামনির জন্য অনেক দুয়া ও আদর রইল ।
হে আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ দান করেন ।আমীন ।
আমাদের দেশে এসব কান্নরত শিশুকে আরো বেশী মারের ভয় দেখিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। যে কারণে বাচ্চাক স্কুলে পাঠাত খুবই অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন