দুরে অবস্হান নয়,অবাধ মেলামেশাই পরকীয়ার মুল কারণ
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ২৬ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:৩৬:০৪ সন্ধ্যা
সেদিন দেখলাম এক গৃহ শিক্ষক মাদ্রাসা ছাত্রের হাত ধরে পালিয়েছেন এক প্রবাসীর স্ত্রী । সেটা নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হলো, হলো এই ব্লগেও। অনেকে সেটাকে স্বামী প্রবাসে থাকার কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে প্রবাস শুনে মাথা গরম করে পোস্ট দিয়েছেন, বুঝাতে চেয়েছেন প্রবাসী স্বামী নয় চরিত্রহীনা হওয়ার কারনে মহিলা পালিয়েছে এবং চরিত্রহীনারা স্বামী কাছে থাকলেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।
অনেকে আবার প্রবাসী স্বামীদেরকে ৪ মাসের অধীক প্রবাসে থাকা যাবেনা বলে ফতোয়াও দিয়েছেন । তাদের ফতোয়াকে আমি অগ্রাহ্য করছিনা । কিন্তু এই ফতোয়াটা আমাদের দেশের গরীব মানুষগুলোর জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে না ? নিশ্চয় সহজ তরীকা আছে বলেই মানুষ ৪ মাসের অধীক প্রবাসে থাকে এবং তাতে বউরাণীর সম্মতিও থাকে । তবে এই সুযোগে অনেকেই দীর্ঘদিন প্রবাসে পড়ে থাকেন যা ঠিক না,এতে বউ বাচ্চার হক নষ্ট হয় বলেই আমি মনে করি । পাশাপাশি এই দীর্ঘদিন দুরে থাকার কারনে পাপাচার হওয়ার আশংকা থাকে।
তবে সব ধরনের পাপাচার,বিশেষ করে পরকীয়ার মত ঘৃন্য একটি কাজ কিন্তু স্বামী প্রবাসে বা দুরে থাকাই মুল কারণ নয়। মুল কারণ হচ্ছে পুরুষ ও মহিলাদের অবাধ মেলামেশা । যার কারনে স্বামী সাথে থাকার পরও অনেকে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে । স্বামীকে ব্যবসা প্রত্ষ্টান বা চাকুরীতে বাইরে রেখে স্ত্রী অন্যের হাত ধরে পার্কে ঘুরে বেড়ায়,বাসায় ঢেকে এনে পরপুরুষের সাথে সময় কাটায়। স্বামীকে ঘরে রেখে অন্যের হাত ধরে পালিয়ে যায়।
আমাদের সমাজ ব্যবস্হায় কিছু উদ্ভট পর্দাপ্রথা আছে যা দেখলে হাসবো না কাদবো নিজেও জানিনা । এই পর্দা প্রথার বাইরে কিন্তু নিজেও না। সত্যিকার অর্থে আমরা জানিনা কিভাবে পর্দা করতে হয়। আমরা মনে করি শুধুমাত্র বাহিরে বের হওয়ার সময় মহিলাদের বোরখা বা বড়কাপড় দিয়ে শরীর ঢেকে বের হওয়ার নাম পর্দা । যার কারনে অনেক মাদ্রাসা শিক্ষিতদের ঘরেও দেখা যায় অবাধ মেলামেশা হচ্ছে। মামাতো, খালাতো,ফুফাতো,চাচাতো ও তালতো ভাই বোনের মধ্যে যে পর্দা করতে হয় তা আমাদের সমাজ ব্যবস্হায় নাই বললেই চলে। আর দেবর ভাবীর মধুর সম্পর্ক আজীবন রাখার জন্য আমাদের এক মন্ত্রী সংসদে বক্তব্য রেখেছেন, এই সম্পর্ক মোল্লারা ক্ষমতায় গেলে থাকবেনা বলে গোস্সা প্রকাশ করেছেন। পারলে একটি বিল পাশ করতেন যাতে করে দেবর ভাবীর মধুর সম্পর্কের মাধ্যমে তারা তাদের লাম্পট্য চরিত্র ধরে রাখতে পারেন।
অনেক সময় দেখবেন আপনার বাড়িতে একজন লোক কোন কাজে হয়তো একদিন এসেছে, আর কোনদিন আসার সম্ভাবনা নেই তাকে কিন্তু বাড়ীর মহিলারা পর্দা করছে। অথচ যে লোকটা প্রতিদিন আপনার বাড়ীতে আসছে তাকে কিন্তু পর্দা করছেনা বরঞ্চ তাকে পরিবারের লোকের মত ধরে নিয়ে তার সাথে অবাধ মেলামেশা করছে। কারো সাথে সম্পর্ক কিন্তু একদিন বা দুদিনে গড়ে উঠেনা। মুখ দিয়ে কথা বলার পূর্বে কিন্তু চোখ কথা বলে। এই কারনে যার সাথে হামেশা মেলামেশা হয়,চোখ দিয়ে কথা বলা হয় তার সাথেই কিন্তু সম্পর্ক গড়ে উঠে। একদিন বা দুদিনের পরিচয়ে কিন্তু কেও কারো সাথে পালিয়ে যায়না।
পরকীয়ার সম্পর্ক সৃষ্টি হয় খুব কাছাকাছি থাকা মানুষের সাথে। যে বন্ধুটিকে আপনি প্রতিনিয়ত আপনার বাসায় নিয়ে আসছেন ,একসাথে খাওয়া-দাওয়া করছেন,স্ত্রী-সন্তানদের সাথে নিয়ে তার সাথে অবাধ মেলামেশার সুযোগ দিচ্ছেন সেই বন্ধুটির হাত ধরেই আপনার স্ত্রী চলে যাচ্ছে বা আপনার অগোচরে পাপাচারে লিপ্ত হচ্ছে। আপনার বাড়ীর আশ্রিত যে কেও হতে পারে তার সাথেও কিন্তু অবাধ মেলামেশার সুযোগে পাপাচার হয়ে থাকে। উপরে যে সম্পর্কগুলোর কথা বললাম সেই সম্পর্কের অবাধ মেলামেশার সুযোগেও কিন্তু হামেশা অঘটন ঘটছে । আর শুধুমাত্র পরকীয়া নয়, আপনার মেয়ে, বোন কিংবা আপনার পরিবারের যে কেও অবাধ মেলামেশার সুযোগেই কিন্তু পাপাচারে লিপ্ত হচ্ছে।
এই পাপাচার,পরকীয়া সহ যাবতীয় অসামাজিক কাজ থেকে বাচতে হলে আপনাকে পর্দার ব্যাপারে আল্লাহ নির্ধারীত সীমারেখা অতিক্রম করলে চলবেনা।
বিষয়: বিবিধ
২০১০ বার পঠিত, ৩৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে স্বামী কাছে থাকলে(ঘটনাটিতে)অবাধ মেলামেশার সুযোগটা তৈরী না হয়ে এরকম একটা ঘটনা না ঘটতে পারত।
হ্যা,যারা এরকম তারা অসংখ্য স্বামী থাকলেও এটা করবেই।এরা কিছু পুরুষের ন্যায়,বহুগামিতায় এদের তৃপ্তি আসে।
যৌক্তিক পোস্টার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি জানিনা ভাইয়া আমি আপনাকে বুঝাইতে পারলাম কিনা ।
তবে এটা ঠিক কিছু প্রবাসি সুযোগ থাকা সত্বেয় অধিক আয়ের ইচ্ছায় দেশে আসেননা সহজে। অনেকে ক্ষেত্রে প্রবাসির পরিবারও চায় দেশে কম আসুক। এর ফলে বর্তমান পরিবেশে এই ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু প্রবাসিদের ক্ষেত্রেই নয় অন্য শহরে চাকুরিরত দের ক্ষেত্রেও ঘটছে এই ধরনের ঘটনা।
আল্লাহ তায়ালা সকল মুসলমানদেরকে পর্দার বিধান মেনে চলার তাওফীক দান করুক।
পরকিয়ার ক্ষেত্রে পুরুস-মহিলা সবাই--উপায় নাই গোলাম হোসেন নীতি অবলম্বন করে।
একমাত্র যথার্থ পর্দারক্ষা কর চলা, ইসলামী শরিয়াহ বাস্তবায় থাকলেই সমস্ত অনাচার থেকে মুক্তি সম্ভব।
শুকরিয়া ভাই!
অত্যান্ত দুঃখের বিষয় হল অধিকাংশ প্রবাসীই প্রবাসে অবৈধ কাছে লিপ্ত হয়ে যায়। তাই তাদের স্ত্রীরাও সেই ঋণ শোধ করতে কুন্ঠাবোধ করে না।
আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুক।
মন্তব্য করতে লগইন করুন