আওয়ামীলীগের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ শুধু ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে কেন ?
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১৩ জুলাই, ২০১৪, ০৩:৫৪:৪১ দুপুর
বর্তমান সময়ে প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে অবিরত রক্তক্ষরন হচ্ছে গাজায় নির্বিচারে ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত আহত হওয়া মানুষ গুলোর জন্য,শুধু মাত্র মুসলিম দেশ গুলোর শাসকগোষ্টি ছাড়া। এই সময়ে আমার এই লেখাটি হয়তো বেমানান,তবুও আমি একজন মুসলমান বাংলাদেশী বলে বিষয়টি নিয়ে লিখতে হচ্ছে। কেননা, এইজন্যও যে আমার অন্তরে রক্তক্ষরন হচ্ছে এবং আরো অনেকেরও হচ্ছে বলেই আমার বিশ্বাস।
বিষয়টা হলো :প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েটের) মনোগ্রাম থেকে কুরআনের আয়াত তুলে দেয়া প্রসংগ।
সম্মানিত পাঠক, আপনার যদি কোনো আওয়ামী সমর্থক ভাই বন্ধুদের সাথে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নিয়ে কথা বলেন তাহলে তারা আপনাকে খুব সুন্দর করে বুঝাতে চাইবেন যে,ধর্ম ব্যক্তিগত বিষয়,যে যার মত করে পালন করবে। রাষ্ট্রীয় কোন কিছুতে ধর্ম ব্যবহার হবেনা তার নাম ধর্ম নিরপেক্ষতা । আসলে সাধারণ কর্মী সমর্থকের কোন দুষ নাই,তাদেরকে যেভাবে তাদের নেতারা ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন তারাও আমাদের সেভাবে বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে আওয়ামীলীগ সব সময়ই যে ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে কাজ করে তারা সে বিষয়টি শুনতে চান না বা বুঝতে চান না ।
আওয়ামীলীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই ইসলাম ধর্ম ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উপর নেমে আসে নির্যাতন । একে একে কুরআন হাদীস ও শরীয়ত বিরুধী আইন পাশ করা হয় । মসজিদ মাদ্রাসা ইমাম হুজুর নামাজিদের বিরুদ্ধে শুরু হয় দুনিয়ার ষড়যন্ত্র । ইসলাম ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিরোধীতায় সর্বগ্রাসী রূপ ধারন করে আওয়ামীলীগ।মসজিদ মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়া, কুরআনের মাহফিলে ১৪৪ ধারা জারি করে মাহফিল বন্ধ করে দেয়া, আলীম উলামাদের গ্রেফতার করা, কুরআনের অনুষ্ঠান থেকে ছাত্র ছাত্রীদেরকে গ্রেফতার করে নির্যাতন করা, দাঁড়ি-টুপিওয়ালাদের উপর নির্যাতন করা, বোরকা পরা নিষিদ্ধ করা,শরীয়তের অন্যতম বিধান ফতোয়াকে নিষিদ্ধে করা সহ ইসলামের বিরুদ্ধে যেন তাদের অঘোষিত যুদ্ধ চলে।
আপনারা জানেন ৭২ থেকে ৭৫ এই সময়েও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ছিলো। সেই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম থেকে কুরআনের আয়াত মুছে দেয়া হয় , নজরুল ইসলাম কলেজ থেকে ইসলাম তুলে দেয়া হয় ,সলিমুল্লাহ মুসলিম হল থেকে মুসলিম তুলা দেয়া। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ইসলাম বাদ দেয়া হয়েছে।সর্বশেষ ২০১৪ সালে এসেও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কুরআনের আয়াত তোলে দেয়া হলো। এখনো সেই আওয়ামী প্রেতাত্মা বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায়। আর সব কিছুই হালাল করা হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশের আড়ালে ।
অথচ ধর্মীয় নামে আরো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, যেমন ঢাকার নটরডেম, হলিক্রস ইত্যাদি। সে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মনোগ্রামে "ক্রুশ" চিহ্ন আছে, আছে জগন্নাথ হল, জগন্নাথ কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়, আনন্দ মোহন কলেজ, রাজেন্দ্র কলেজ, ভোলানাথ হিন্দু একাডেমী ইত্যাদি নামের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে এবং তাদের নাম ও মনোগ্রামে ধর্মীয় চিহ্ন আছে। আওয়ামী লীগ কখনোই ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মনোগ্রাম থেকে ধর্মীয় নাম ও চিহ্ন তুলে দেয়নি বা তুলে দেয়ার চিন্তাও করেনি। কিন্তু ইসলাম, কুরআন যেখানে যেখানে আছে সেখানেই যেন শুধু ধর্ম নিরপেক্ষতার খড়গ নেমে আসে।
হায়রে আওয়ামী কর্মী সমর্থকেরা আর কবে তোমাদের হুশ ফিরে আসবে ? কবে বুঝবে তোমাদের নেতারা ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে তোমাদের সাথে ভন্ডামী করছে ? আওয়ামীলীগ ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে ইসলাম ধর্ম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক মুখোশপরা শয়তানের নাম।
বিষয়: রাজনীতি
২২৩৪ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
করে সংশয়
মঙ্গল প্রদীপে ওরা হয়ে উঠে তন্ময়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন