রমজান ও এতেক্বাফের ফজিলত যারা বেশি বর্ণনা করেন তারা কম আমল করেন
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ২৬ জুন, ২০১৪, ০৭:২১:০০ সন্ধ্যা
পবিত্র রমজান মাস । সারা দুনিয়ার মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত সম্মানের মাস। ধনী-দরিদ্র,কুলি-মজুর,সাদা-কালো,হুজুর-মাস্টার,পুরুষ-মহিলা সকল শ্রেনী ও পেশার মানুষ এই মাসকে যথাযত মর্যাদা ও গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করেন থাকেন। যার কারনে যারা এই মাসে রোজা রাখেন না তারাও অন্তত এই মাসের সম্মানকে ধরে রাখার জন্য লোকচক্ষুর অন্তরালে খাওয়া দাওয়া করে থাকেন। দু'একজন মুনাফিক নালায়েক আল্লাহর বান্দা ছাড়া সকলেই এই মাসটিকে সেলিব্রেট করেন নিজের কর্ম ও পরিশ্রম দিয়ে।
এই মাসের প্রতিটি ভালো কাজের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে রোজার সাথে আনুসাংগীক প্রতিটি কাজের জন্য রয়েছে অগনিত ছওয়াব। যেমন, কাওকে সেহরি খাওয়ানো,কাওকে ইফতার করানো, রোজার শেষ দশদিনে এতেক্বাফ করা, ঈদের জামাকাপড় দান করা ইত্যাদি। এই কাজগুলির গুরুত্ব ও ফজিলত আমরা সকলেই জানি এবং প্রতিনিয়ত শুনছিও। মসজিদের ইমাম সাহেব থেকে শুরু করে ইসলামি আন্দোলনের নেতাকর্মীর মুখেও অহরহ এই কাজগুলির ফজিলত শুনে থাকি।
মসজিদে জুমার নামাজে গিয়েছেন,শুনবেন, হুজুর এই কাজগুলির ফজিলত বর্ণনা করছেন। কোন ইফতার মাহফিলে গিয়েছেন , শুনবেন ইসলামি আন্দোলনের যে কোন পর্যায়ের দায়িত্বশীল এই কাজগুলির ফজিলত বর্ণনা করছেন। আমরা সাধারন মানুষেরা হুজুরের ওয়াজ শুনে ঠিকই আমল করার চেষ্টা করি। আমরা আমাদের পাড়াপ্রতিবেশীর খোজখবর নেই। অনেকেই গরিব প্রতিবেশী ঠিকমত সেহরির ব্যবস্হা করতে পারছে কি না,ইফতারীতে তার রোজা ভাংগার মত ব্যবস্হা আছে কি না জেনে নেই এবং তাদেরকে যথাসাধ্য সহযোগিতার চেষ্টা করি। হুজুরের ওয়াজ শুনে অধিক ছওয়াবের আশায় গ্রামের সব চেয়ে অল্প শিক্ষিত মানুষটি ঠিকই রমাজানের শেষ দশ দিনে মসজিদে এতেক্বাফে ঢুকে যায়।
ইসলামি আন্দোলনে সকল পর্যায়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। উপরোক্ত কাজের গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনা করা হয় । কর্মী-সমর্থকরাও দায়িত্বশীলদের আলোচনা শুনে সেই কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত হন। যার কারনে একজন সাধারন মানের কর্মী বা সমর্থককে ঠিকই মসজিদের এতেক্বাফে দেখা যায়। অন্যকে ইফতার করাতে দেখা যায়।
কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের। যে হুজুররা এত ফজিলত বর্ণনা করে গ্রামের অল্প শিক্ষিত বা মুর্খ মানুষটাকে মসজিদে নিয়ে আসতে পারলেন, যে দায়িত্বশীল তার কর্মী সমর্থকদের এরকম ভালো কাজে উদ্ভোদ্ধ করলেন, তারা কিন্তু এই কাজগুলোতে স্বক্রিয় হতে পারেন না। তারা কিন্তু নানান বাহানায় দশ দিনের এতেক্বাফে মসজিদে ঢুকতে পারেন না। অনেক হুজুরই আছেন যারা এতেক্বাফের ফজিলতের জন্য মসজিদে এতেক্বাফ করেন না,শুধুমাত্র মসজিদের চাকুরি বাচানোর জন্য এতেক্বাফ করে থাকেন। অনেক দায়িত্বশীল আছেন যারা সাংগঠনিক কাজের বাহানায় এতেক্বাফ থেকে দুরে থাকেন । অথচ তাদেরই উর্ধ্বতন দায়িত্বশীল যার উপর হাজারগুন বেশী দায়িত্বের বোঝা তারা কিন্তু প্রতিবছর এতেক্বাফ করে থাকেন। পারেন না শুধু মফস্বলের কিংবা ছোটখাট কোন উপশাখার দায়িত্বশীল। এমনও দায়িত্বশীল আছেন যারা বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করছেন অথচ একটি বছরের জন্যও তিনি এতেক্বাফ করে তার কর্মী সমর্থকদের জন্য আদর্শ হতে পারছেন না।
(সকল হুজুর ও সকল দায়িত্বশীল যে এরকম তা কিন্তু নয়,তবে অনেকেই এরকম)
বিষয়: বিবিধ
১৫৪৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খাঁটি কথা।
আমাদের উচিত শুধু রমাদান বা ইতিক্বাফ নয়, সমস্ত ক্ষেত্রেই কথা ও কাজের মাত্রাটা সমান রাখা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন