বিশ্বকাপ ফুটবল উন্মাদনা : পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয়
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ০৫ জুন, ২০১৪, ০৪:২৫:৩৮ বিকাল
পতাকা উড়াতে গিয়ে লোকটি বিদ্যুৎপীষ্ট হয়।
ফুটবল বিশ্বের অগনিত মানুষের প্রিয় খেলা এতে কোন সন্দেহ নেই। আমিও ফুটবল খেলা উপভোগ করি। সারা বিশ্বের কুটিকুটি মানুষ বিশ্বকাপ জ্বরে ভোগছে এই সময়ে। সারা দুনিয়ার নানা প্রান্তের মানুষ জুনের ১২ তারিখের অপেক্ষায়। সেদিন থেকেই যে শুরু হবে বিশ্বকাপ ফুটবলের বর্ণিল আয়োজন। বিশ্বফুটবলের পরাশক্তি ব্রাজিল আর ক্রোয়েশিয়ার খেলার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্ট চলবে মাসখানিক। আর মাত্র ৬ দিন গত হলেই শুরু হচ্ছে কুটি দর্শকের প্রিয় খেলা ফুটবল বিশ্বকাপ।
এই ফুটবল বিশ্বকাপকে নিয়ে মানুষের মাঝে একটা অন্যরকম আবহ তৈরী হয়েছে। কিন্তু এর মাত্রা অতিক্রম করেছে বাংলাদেশে প্রতিবারের ন্যায়। বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে ফ্রান্সও একটি শক্তিশালী দল। যেদেশ একবার বিশ্বকাপ জিতেছে এবং একবার ফাইনাল খেলেছে সেই দল বিশ্বকাপে থাকার পরও সেদেশের মানুষের মাঝে এতটা উন্মাদনা নেই যতটা আমার দেশ বাংলাদেশে দেখা যায়। অথচ বাংলাদেশ কোনোকালে বিশ্বকাপে খেলেনি আর ভবিষ্যতেও খেলবে এরকম কোনো সম্ভাবনা নাই এবং সে স্বপ্নও এখন পর্যন্ত কেও দেখন না।
এখন পর্যন্ত ফ্রান্সের কোথাও বিশ্বকাপ ফুটবলকে সামনে রেখে তাদের নিজেদের একটি পতাকাও উড়াতে দেখিনি। তারাও কিন্তু খুবই ফুটবলপ্রেমি। প্রয়োজনে টাকা খরচ করে স্টেডিয়ামে গিয়ে বড় পর্দায় তাদের প্রিয়দলের খেলা দেখবে। কিন্তু আমাদের দেশের মত এতটা উন্মাদনা তাদের কাজ করেনা,যতটা আমাদের দেশে দেখা যায়। আমাদের দেশে অন্য দেশের পতাকা উড়ানোর একটা হিড়িক পড়েছে যেন। নিজ নিজ পছন্দের দলের পতাকা উড়ানোতে সবাই ব্যস্ত। এমনকি এই পতাকা উড়াতে গিয়ে বিদ্যুৎপীষ্ট হয়ে অনেকেই মারাও যাচ্ছেন। অনেক স্হানে পতাকার স্হান দখল করা নিয়ে মারামারি বাঁধে। খেলা দেখাকে কেন্দ্র করে মারামারি আমাদের দেশ হরহামেশাই হয়ে থাকে। নিজের পছন্দের দল হেরে গেলে স্টোক করে মারা যাওয়ারও খবর পাওয়া যায় । কিন্তু কেন ? কেন এই উন্মাদনা ? এই উন্মাদনা পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয়।
ক'দিন থেকে দেখছি ফেসবুকেও একই অবস্হা। অনেকেই তাদের নিজনিজ দলের পক্ষে নানা ধরনের স্টেটাস দিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের দলের কথা বলতে গিয়ে অনেকে আবার অন্যদলকে, অন্যদলের সমর্থকদেরকে নানা রকম রঙ্গ রসের কথা লিখে ছোট করার চেষ্টাও করে যাচ্ছেন অবিরত। অনেকে তার দলই সেরা অন্যকে গিলানোর জন্য অতীত পরিসংখ্যানও টানছেন। অথচ তারা বুঝতে চান না পরিসংখ্যান ছাড়াও কোন দল সেরা হতে পারে তাও তো অতীতে আছে। অনেক সেলিব্রেটিকেও দেখা যায় এই উন্মাদনা পেয়ে বসেছে। জানিনা, তারা কি ইচ্ছে করে তাদের ফানদের আনন্দ দেয়ার জন্য এই উন্মাদনা দেখাচ্ছেন নাকি সত্যি সত্যি তাদেরকেও ফুটবল উন্মাদনায় পেয়েছে। আজকে একজন গানের শিল্পী ও টিভি উপস্হাপককেও দেখলাম তার ওয়ালে লিখেছেন : আপনি কোন দলের সমর্থক ব্রাজিল না আর্জেন্টিনার । কিন্তু কেন এই উন্মাদনা ! এই উন্মাদনা পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয় বলেই অনেকে মনে করেন। আমি তাদের দলের একজন।
বিষয়: বিবিধ
২০১৫ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সবচেয়ে বড় পাগলামী করে বুয়েটের পোলাপানরা যেটা কি না বাংলাদেশের সেরা স্টুডেন্টদের জায়গা । তারা বিশ্বকাপের সময় ক্লাস বর্জন করে , এমনকি পরীক্ষাও পিছায় , ইচ্ছে করে ইয়ার লস করে !
আমিনবাজার হয়ে সাভার আসা যাওয়া করে দেখবেন পাগলামী আর কাকে বলে ! বড় বড় বৈদ্যুতিক পিলারের একেবারে মাথায় পতাকা লাগায় !
স্বাধীনতার পরই নবজাত শিশুকে গড়ে তোলার জন্য এ জাতি দেশপ্রেমিক একজন নেতা পায়নি। শুরুটা ভাল নয় বলে আজ সবই যেন অগোছাল। ধন্যবাদ।
তো খৈ ভাজ...
এই হল বাংলাদেশ। একজন পুড়েছে তাতে কি,অনেকে না পুড়েই চরম দক্ষতায় বৈদ্যুতিক খুটিতে পতাকা উড়াবে,উড়াতেই হবে।
সারাদিন থাপড়ানো দরকার.....আহাম্মকগুলো !!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন