মাত্র ছোট্ট দুটি ঘটনা,আপনাদের ভালো লাগবে
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১১ মে, ২০১৪, ১২:০৫:৫৬ রাত
১) শুধুমাত্র একটি শব্দ শুনে এক ইতালীয়ান মুসলমান হয়ে যায়।
কি বিশ্বাস হচ্ছেনা বুঝি ?
আসলেই সত্যি।
আসুন জেনে নেই কি সেই সম্মোহনী শক্তি,যার কারনে শব্দটা শুনেই একজন অমুসলমান ইউরোপিয়ান মুসলমান হয়ে গেলো।
এক ইতালীয়ান একদিন তার বাসার কাজের জন্য একজন মুসলমান দিন মজুরকে নিয়ে যায়।দিন মজুর এজন্য বললাম, ইউরোপে অনেকেই দিন মজুর হিসাবে কাজ করে থাকেন নির্দিষ্ট কোন কাজ না পেয়ে। তো একদিন কাজ করিয়ে লোকটির সাথে ইতালিয়ানের ভালো সম্পর্ক হয়।
প্রচন্ড শীত। তার উপর তুষারপাত হচ্ছে অবিরত। তাপমাত্রা মাইনাস ৩/৪° হবে। এই অবস্হায় মুসলমান দিন মজুর রাস্তার এক মুড়ে দাড়িয়ে ছাতা বিক্রি করছে। ঐ সময়ে তার পরিচিত ইতালীয়ান সেই রাস্তা দিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করে যাচ্ছে।ট্রাফিক সিগনালে পড়ে গাড়ি থামিয়েছে। হঠাৎ ইতালীয়ান দেখলো মুসলমান দিন মজুর এই শীত ও তুষারপাতের মধ্যে রাস্তায় ছাতা বিক্রি করছে। হাতের ইশারায় ডাক দিলো এবং কাছে নিয়ে জিজ্ঞেস করলো কেমন আছ ?
মুসলমান দিন মজুর স্বভাববশত বলে উঠলো, আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
ঐ একটি কথায় ইতালীয়ানের মনের মধ্যে সাংঘাতিক রেখাপাত করলো। তার হৃদয়ের সকল বন্ধ দুয়ার টাস টাস করে খুলে গেলো।সে ভাবতে লাগলো নিজকে নিয়ে।কত আরাম আয়েশের মধ্যে থেকেও তারা ভালো নেই। অথচ এই প্রচন্ড হাড়কাপা শীতে,তুষারপাতের মাঝে রাস্তায় দাড়িয়ে কি প্রশান্ত মনে বলতে পারে যে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
কিসের শক্তিতে মুসলমানরা এটা অর্জন করতে পারে ?
এই চিন্তা থেকে সে শুরু করলো ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা। এক পর্যায়ে আল্লাহ তার এই বান্দার হৃদয়ে হেদায়াতের আলো প্রজ্বলিত করে দিলেন। ইতালীয়ান মুসলমান হয়ে গেলো।
আমাদের জন্য শিক্ষা : আসুন,আমারাও সর্বাবস্তায় আলহামদুলিল্লাহ বলার চেষ্টা করি। হতে পারে আমার এই বলাতে অন্য কারো অন্তরে রেখাপাত সৃষ্টি হবে।
২) একজন মানুষের জন্য বাসের সবাইকে নামিয়ে দিলো
সেদিন যাচ্ছি বাংলাদেশী কমিউনিটি মসজিদে। এমনিতেই দেরি করে ফেলছি,তাই মনের মাঝে খুবই তাড়াহুড়ু। কেননা ওখানে আমার জন্য অপেক্ষা করছে অন্তত ২০ জন তরুন ও যুবক। একটা সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামের প্রস্তুতির জন্য তারা আমার অপেক্ষা করছে। অবশ্য দায়িত্বশীলকে জানিয়ে দিয়েছি যে আমার দেরী হবে।তবুও মনের মাঝে তাড়াহুড়ু। এই সময়ে লক্ষ্যস্হানে পৌছার আগে যদি গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয় তাহলে আপনার মনের অবস্হা কি হতে পারে। খুবই রাগ হবেন।বাংলাদেশে হলে তো রীতিমত ড্রাইভারের সাথে মারামারি লেগে যাবে।কিন্তু এখানে আমার সাথে বাসের সবাই কিছু না বলেই নেমে গেলো। কেহ কোন ধরনের রাগ করলোনা। আমি অনেক দৌড়ের উপর থাকলেও সেখানে মনটা খারাপ হলোনা ।বরঞ্চ, তাদের দেশের এই মানবতাবোধ দেখে খুবই ভালো লাগলো এবং নিজেদের দুর্বলাতার জন্য বিশেষ করে মধ্য এশিয়ার মুসলিম দেশ গুলোর কথা মনে করে লজ্জিত হলাম।
এমন কি ঘটেছিলো বাসে
তেমন কিছুনা। বাস কোন দুর্ঘটনায় পতিত হয়নি বা বাসে আগুন ধরেও যায়নি। বাসে একজন মানুষ সম্ভবত শ্রীলংকান হবে সে অসুস্হ্য হয়ে পড়ে। যার কারনে ড্রাইভার বাসের অন্য যাত্রী সবাইকে নামিয়ে দিলো এবং জরুরী মেডিক্যাল চিকিৎসা সেবা যারা দিয়ে থাকে তাদেরকে ফোন দিলো। আমরা অন্য বাসে উঠার আগেই দেখলাম চিকিৎসকরা এসে পড়েছেন এবং তারা যথারীতি চিকিৎসা শুরু করে দিলো।
চিকিৎসা সেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু বর্তমান দুনিয়ায় মুসলমান দেশ গুলোতে যা কল্পনা করাও যায়না। অথচ .................।
বিষয়: বিবিধ
১৫১৫ বার পঠিত, ৩৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মানবতা সবচেয়ে বড় যা দেখা গেল।
অনেক ধন্যবাদ
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার লিখনীটি পাঠে আমাদের মনের বদ্ধ দুয়ারে কিছুটা আঘাত হানতে পেরেছে। ধন্যবাদ
আল্লাহ আমাদেরকে তার হেদায়েতের পথে টিকে থাকার তৌফিক দিন
মন্তব্য করতে লগইন করুন