নেগেটিভ শিরোনামে মানুষের কেন এত আসক্তি(১৮+)
লিখেছেন লিখেছেন প্যারিস থেকে আমি ১৬ এপ্রিল, ২০১৪, ০৮:০৭:৪৭ রাত
প্রিয় ব্লগটাতে আছি আজ ১ বছর ১ মাসের বেশি সময় ধরে।নতুন কিংবা পুরাতন সকল ব্লগারের অনেকগুলো পোষ্ট পড়ি কিছু শেখার নিয়তে,জানার নিয়তে।প্রায় নিয়মিতই চক্ষুচাহনা(অনেকে পদচারনা লিখেন,আমার কাছে মনে হয় পদচারনা মানে হেটে আসা যাওয়া। ব্লগেতো আর হেটে আসা যাবেনা চক্ষু দিয়ে দেখে নিতে হবে তাই নতুন একটা শব্দ দিলাম,যা বাংলা ডিক্সনারিতে খুজতে গেলে অযথা সময় নষ্ট হবে) আছে এই আংগীনায়। এই আংগীনার প্রতিটি অজানা অচেনা মানুষগুলোকে কেন জানি খুবই আপন ভাবতে ভালো লাগে,ভাবিও তাই।
বয়সে যারা বড় হবেন বলে মনে হয় তাদেরকেতো রীতিমত ব্লগীয় অভিভাবক ভাবতে ভালো লাগে।আর যারা ছোট হবেন তাদেরকে ছোট ভাইয়ের মত মনে করি। লেখার মান নিয়ে কিন্তু ছোট বড় হিসাব করছিনা,করছি বয়সের হিসাব নিকাশ অনুযায়ী। সকলের বয়সের হিসাবতো আর আমার কাছে নাই, তবে এই ব্লগে আমরা এমন এক পরিবেশে আছি যার কারনে অনেকেরই হিসাবটা জানা হয়ে গেছে। লেখার কথা বললেতো অনেক ছোট ভাই আছেন যাদের লেখার মধ্যে যে মুন্সিয়ানার পরিচয় দেন পড়ে নিজের লেখায় লজ্জিত হতে হয়।চমৎকার সব লেখনি,পড়লে মনে হবেনা আপনার থেকে বয়েসে ছোট কেও লেখেছে। অনেকেতো জাতীয় পত্রিকার পাতায় নিজেদের অবস্তান তৈরী করে নিয়েছেন।ছোট-বড়,নতুন-পুরাতন সকলকেই খুব আপন মনে হয়,খুব আপন।নিজেও এই বিশ্বাস রাখি সকলের আপন হতে না পারলেও অনেকের আপন হতে পেরেছি , এটাই বা কম কিসে ?
এই ১ বছর ১ মাসটাকে যদি দিনে হিসাব করি তাহলে ৩৯৫ দিন হবে। তার মধ্য থেকে বলা যায় ৩৬৫ দিনই ব্লগে চক্ষুচাহনা দিয়েছি।পড়েছি নানা রকম টক ঝাল মিষ্টি পোষ্টগুলো। পড়েছি বাবা মাকে নিয়ে ভালোবাসার কথা গুলো,পড়েছি বিয়ে নিয়ে ইয়ে হয়ে যাওয়া আবেগ অনুভুতির কাহিনী। পড়েছি রাগ বিরাগের কথা,পড়েছি অভিমান আর অনুরাগের কথা।চলে যাচ্ছি,বিদায় নিচ্ছি কিছুদিনের জন্য, আবার এসেছি এই লেখাগুলো পড়লে যে কেও অনুমান করতে পারবে কতটা ভালোবাসাবাসি আছে এই ক্ষুদ্র পরিসরে।রাজনীতি ও সমাজনীতি্তো আছেই। আছে মডুদের প্রতি ক্ষোভ ও অভাব-অভিযোগ। সব লেখাতেই আপনি একটা টান অনুভব করবেন। কষ্ট পেয়েছি যখন দেখেছি কোন ধর্ম নিয়ে,ধর্মীয় আচার অনুষ্টান নিয়ে,ধর্মীয় রাজনীতি নিয়ে অযথা কেও কেও প্যাচাল পেড়েছেন তখন।আবার মনটা ভালো হয়েছে যখন পড়েছি কুরআন হাদীস দিয়ে লেখা পোষ্টগুলি। তারপরও বলছি সবকিছু নিয়ে আমরা এই আংগীনায় সকলেই ভালো আছি।
তবে এই ক'দিনে আমার একটা ছোট্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাহলো, নেগেটিভ শিরোনামের প্রতি আমাদের খুবই আসক্তি। কোথায় কোন নায়িকা উলংগ হয়েছে,কোন নায়িকা কোন নায়কের সাথে গিয়েছে, কোথায় কে কার সাথে পালিয়ে গিয়েছে,কোথায় কার জন্য গলায় ফাঁস দিয়েছে, কোথায় কোন নেতা নেত্রী অন্যের কাপড় খুলেছে,খারাপ ও অশ্লীল ভাষায় বক্তব্য রেখেছে,কোথায় কোন নেতার চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার হচ্ছে,কোথায় কে বাইজি নাচ নাচছে, শুধু ১৮+ দের পড়ার আমন্ত্রন,ব্লগে ঝগড়া করবেন,মারামারি করবেন, চুপ থাকেন,মন্তব্য করবেন না ইত্যাদি পোষ্টগুলোর প্রতি আমাদের যেন আসক্তি খুব বেশি। এই ধরনের একটি লেখা পোষ্ট করার সাথে সাথে হই হই করে পঠিতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে কুরআন হাদীস নিয়ে লেখা, সমাজের উন্নতি অগ্রগতি নিয়ে লেখা, আমাদের চারিত্রিক অধ:পতন নিয়ে লেখা, উত্তরনের উপায় নিয়ে লেখা,বাবা মায়ের সাথে কিরুপ সম্পর্ক হবে তা নিয়ে লেখা,স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানাধি নিয়ে লেখা ,সুন্দর পরিবার গঠনের জন্য করনীয় নিয়ে লেখা,নবী রাসুলের জীবনি নিয়ে লেখা,সাহাবাদের জীবনি নিয়ে লেখা ইত্যাদি পোষ্টগুলোর পঠিতের সংখ্যা ২/৪ দিন পর গিয়ে দেখা যায় কোনমতে দেড়শ বা দুইশ পাড়ি দিয়েছে। কিন্তু কেন ? কেন নেগেটিভ শিরোনামের প্রতি মানুষের এত আসক্তি ?
পরিশেষে একটি বাস্তবতা দিয়ে শেষ করি। তাহলো,পৃথিবীতে দু'টো জিনিষ আছে যার একটির গায়ে লেখা আমাকে ছুয়োনা, আমি স্বাস্হ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তারপরও মানুষের কত আসক্তি এই জিনিষটার প্রতি। অপরদিকে আরেকটাতে লিখা আছে আমি তোমাদের জন্য কল্যানকর,আমাকে ধারন করলে দুনিয়া ও আখেরাতে মুক্তি পাবে। আমরা তার প্রতি কত উদাসীন। এই চরম বাস্তবতা থেকে আমরাও যেন বের হতে পারছিনা। আল্লাহ আমাদের সকলের সহায় হোন। আমীন
বিষয়: বিবিধ
২৩৬১ বার পঠিত, ৫৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নেগেটিভের একটা শক্তি আছে, যেটা প্রজেটিবকে জাগিয়ে তুলে। যেমন, থাবা বাবার নেগেটিভ লেখার ফলাফল হচ্ছে হেফাজতে ইসলাম ।
ধন্যবাদ
আরবীতে একটা প্রবাদ আছে "আল-ইনসানু হারীসুন ফী মা মুনি'আ" অর্থটা আফরামণি ৪নং মন্তব্যে দিয়েছে
আপনি এখন ৪নং মন্তব্য পড়তে যাচ্ছেন, তাইনা?
সমাজের/পরিবেশের কুপ্রভাব মনেহয় এটা। বর্তমানে মানুষ সুখ/শান্তি/স্বস্তি/আনন্দ খঁজে নাটক/সিনেমা/সিরিয়ালে দেখানো তথাকথিত শর্টকাট পদ্ধতিতে, তাই ওসব অভিনেতা/নেত্রীদের প্রতি এত টান, মায়া, মোহাব্বত ওদেরকে নিয়ে কিছু লিখলেই লাফাইয়া উঠে আমার কিন্তু সময় নেই ওসব জায়গায় কি হচ্ছে দেখার
মোডারেটরদের হাতে ক্ষমতা ও আর তারা চায় হিট? রিপোর্ট করলেও কিছু হয় না। তবে আমরা চাই পর্ণমুক্ত ব্লগ।
সব নেগেটিভ শিরোনামই নেগেটিভ তার সঙ্গে কিছুটা দ্বিমত পেশ করছি। তবে সকল অরিজিনাল ১৮ প্লাস-ই নেগেটিভ।
''অন্যে তার চেয়ে ভাল আছে'' এটা সে সহ্য করতে পারে না । তাই সবসময়ই সে কান পেতে থাকে অন্যের নেগেটিভ কিছু শুনতে ।
অন্যের খারাপ দেখে সে ভিতরে ভিতরে খুব খুশী হয় । সে এটা ভেবে মনে শান্তি পায় যে , নাহ্ , আমার চেয়ে অবস্থা খারাপ মানুষ আছে ।
সুন্দর একটা পয়েন্ট এনেছেন। কিছু পোস্টে মেয়েরাই কিছু ছবি দেন সেগুল নিয়ে বললে তারা বলে "কেউ কিছু বললনা আপনার চোখ ওখানে কেন?" তখন মনে হয় তাইতো, আমার বলার কি আছে? যার মুরগি সে পিছন দিকে জবেহ করুক আমার কি?
আসলে আমার কাছে খারপ লেগেছে কিন্তু অন্য সবার তো 18+ ভাল লেগেছে এটাই পার্থক্য।
নেগেটিভ শিরোনামে মানুষের কেন এত আসক্তির কারণ, মহান আল্লাহ এই দুনিয়ার জীবনকালে খবিস ইবলিসকে জারি কেরে রেখেছেন মানুষকে কুমন্ত্রনা দেওয়ার জন্য - আর এই সুযোগটা খবিস ইবলিস তখনই বেশী পায়, যখন মানুষ মহান আল্লাহর জিকির থেকে গাফিল হয়, বে-ওজু থাকে, হারাম খায় বা হারাম কাজে মশগুল হয়|
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন